দাকোপে দুই বছরের বকনা গরু প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৬ লিটার দুধ দিচ্ছে

# কৌতুহলী শতশত জনতার ভিড় #
# ৬ মাসের বাচ্চা পেটে নিয়ে #
দাকোপ প্রতিনিধি ঃ মাত্র ২৪ মাস বয়সী বকনা গরুর পেটে ৬ মাসের বাচ্চা থাকা সত্বেও এ বকনা গরুর দুধ দেয়ার দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন ভীড় করছেন এলাকার শতশত কৌতুহলী মানুষ। এটিকে অলৌকিক ঘটনা বলে মনে করছেন স্থানীয় কেউ কেউ। ঘটনাটি ঘটেছে খুলনার দাকোপ উপজেলা সদর চালনা পৌরসভার গোড়কাঠি গ্রামের বাসিন্দা নিরঞ্জন ঢালীর বাড়িতে।
নিরাঞ্জন ঢালী জানান, বছর দুই আগে ফিজিয়ান বকনা গরু অষ্ট্রেলিয়ান জাতের লালচে কালো সাদা রঙ্গের এ বকনা বাছুরের জন্ম হয়। তিনি গত ৬ মাস আগে এ বকনা গরুটির শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করেন। সম্প্রতি গত দুই সপ্তাহ ধরে তিনি দেখতে পান গরুর বানগুলো দুধে ভরে আছে। গোয়ালের অন্যান্য গরুর বাছুর এ বকনা গরুর বান থেকে দুধ খাচ্ছে। এ ঘটনার কয়েক দিন পর তিনি দেখেন গরুটি শুয়ে থাকলে ঘরের মেঝেতে দুধ পড়ে থাকে।পরে তিনি এ বকনা গরুর বান থেকে দুধ সংগ্রহ করতে শুরু করেন। প্রথম কয়েকদিন ৮ থেকে ৯ লিটার দুধ সংগ্রহ হলেও এখন এ বকনা গরু থেকে প্রতিদিন তিন বেলা দুধ দহন করে ১৫ থেকে ১৬ লিটার দুধ সংগ্রহ করছেন। তিনি দুধ দহন করে ৬০ টাকা লিটার দরে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে দিচ্ছেন।তিনি বলেন,ফসলী কৃষি জমি জমা বলতে আমার কিছুই নেই। পৈত্রিক সম্পত্তি বলতে মাত্র সাড়ে ৩ কাটা ভিটে বাড়ি। উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কর্তব্যেরত চিকিৎসক ডাঃ বঙ্কিম হালদারের বিভিন্ন সময়ে নানা পরমর্শে আমি ও আমার স্ত্রী দু,জনে মিলে গোয়ালে থাকা ২টি বাছুর ও ৩টি বড় গরুর দেখা শোনা করে আসছি। আর দুধ বিক্রি করেই আমার ৫ সদস্যর পরিবারের জীবিন-জীবীকা ভরণ পোষন আমাকেই নির্বাহ করাতে হয়। এখন বাজারে গরুর খাবারের মুল্যে বৃদ্ধি পাওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্চে। ঘরে থাকা তিনটি মেয়ে সাবালিকা হয়েছে। তাদেরকে এখনো পর্যন্ত পাত্রস্থ করতে পারিনি।তিনি বলেন,সৃষ্টি কর্তা হয়তো আমার উপর্জন ক্ষমতা বাড়াতেই গরুর পেটে বাচ্চা থাকা অবস্থায় আমাকে এ দুধ দান করছেন। স্থানীয় একাধিক কৌতুহলী মানুষ জানান, এ যাবৎ কাল দেখে আসছি,প্রতিটি গরু বাচ্চা দেওয়ার পর দুধ দেয়। আর এখন এ কি দেখছি,বাচ্চা পেটে থাকা অবস্থায় এ বকনা গরুটি এতো পরিমাণে দুধ দিচ্ছে। দুই বছরের গরু পেটে বাচ্চা রেখেই দুধ দিচ্ছে এটা অলৌকিক ঘটনা ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না। এ ঘটনাটি এলাকায় বেশ সাড়া জাগিয়েছে। প্রতিদিন আমাদেরমত উৎসুক শতশত মানুষ এ নিরাজ্ঞন ঢালীর গরুটিকে দেখার জন্য ভির জমাচ্ছেন।
স্থানীয় পশু চিকিৎসক শীতল বলেন,আমরা সাধারণত দেখি গর্ভধারণ করে বাছুর জন্ম দেয়ার পরই সাধারণ বকনা গুরু দুধ দিয়ে থাকে। এখানে এর বেতিক্রম হচ্ছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বঙ্কিম চন্দ্র হালদার বলেন,এ রবম ঘটনা সহসাই দেখা যায় না। আমি সরজমিনে এ গরুর মালিক নিরাঞ্জন ঢালীর বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি দেখেছি। এমনটি সাধারণত হরমোনগত কারণে হয়ে থাকে,তাই এটাকে অলৌকিক বলা যাচ্ছে না। তবে এসব গরুর দুধ পান করার ক্ষেত্রে কোন রকম সমস্যা নেই। এই দুধ খুবই পুষ্টিকর ও সুস্বাদু।তিনি বলেন, নিরাঞ্জন ঢালীর এ বকনা গরুটির পেটে ৬ মাসের বাচ্চা থাকা সত্বেও গরুটি প্রতিদিন ১৫/১৬ লিটার দুধ দিচ্ছে। তাই প্রাণী সম্পদ অফিস থেকে গুরুটির ওপর বিশেষ নজর রাখা হয়েছে।