স্থানীয় সংবাদ

মণিরামপুরে দুর্বৃত্তের আগুনে সেচপাম্প ঘর পুড়ে ২০ বিঘাজমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চিত

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি ঃ যশোরের মণিরামপুর উপজেলার বাকোশপোল গ্রামে রাতের আঁধারে সেচ পাম্পের ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (২ ডিসেম্বর) দিবাগতরাতে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে সেচ পাম্পের ঘর পুড়িয়ে দেয়। এতে সেচ পাম্পের আওতায় থাকা প্রায় ২০ বিঘা জমির বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। নিরাপত্তার অভাবে সেচ যন্ত্রটি চালু করতে পারছেনা সেচ পাম্প মালিক। কৃষকদের দাবি, দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। একই সাথে নির্বিঘেœ সেচ পাম্প চালুর ব্যবস্থা করতে হবে। এলাকাবাসীরা জানায়, যশোরের মণিরামপুর উপজেলার বাকোশপোল গ্রামের এলাহী বক্সের মেয়ে আকলিমা বেগমের কাছ থেকে ৫ বছরের জন্য সেচ পাম্পটি লীজ নিয়েছেন একই গ্রামের জাকির হোসেন। তিনি সেচ পাম্পটি পরিচালনা করেন। তার সেচ পাম্পে এলাকার কৃষকদের ২০ বিঘা জমিতে সেচ দেওয়া হতো। কিন্তু জমি ও সেচ পাম্পের মালিক আকলিমা বেগমের সঙ্গে একই গ্রামের ফজলুর রহমান, মিন্টু রহমান, সোহরাব, সুরাফের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধের জের ধরে জাকির হোসেনকে বিভিন্ন সময়ে হুমকি ধামকি দিয়েছেন ফজলু, মিন্টু ও তার সহযোগিরা। তারা আকলিমা বেগমের সেচ পাম্প ও বর্গা জমি চাষ থেকে বিরতি থাকতে চাপ দিতে থাকে। তাদের কথানা শোনায় মোটর পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এদিকে কৃষকরা বীজতলা তৈরি করার জন্য জাকির হোসেনকে সেচ পাম্প চালু করার দাবি জানায়। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে ৩ ডিসেম্বর সকালে সেচ পাম্প চালুর উদ্যোগ নেন জাকির হোসেন। তার আগেই ২ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা সেচ পাম্পের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেচ পাম্পের ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দুর্বৃত্তদের ভয়ে সেচপাম্প চালু করতে না পারায় ২০ বিঘা জমির বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে সেচ পাম্পেরই জারাদারজাকির হোসেন বলেন, আকলিমা বেগমের কাছ থেকে ৫ বছরের জন্য লিজ নিয়ে সেচ পাম্প পরিচালনা করছি। আকলিমা বেগমের সঙ্গে যাদের বিরোধ, তারা বিভিন্ন সময়ে হুমকি ধামকি দিয়েছে। কিন্তু আমি আমলে নিইনি। ২ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে সেচ পাম্পের ঘর পুড়ে ছাই করে দিয়েছে। এখন ভয়ে সেচ পাম্প চালু করতে পারছিনা। যদিও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নিস্তার ফারুক নির্ভয়ে সেচপাম্প চালু করার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু আমি ভরসা পাচ্ছিনা। নানা ভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে। বাকোশপোল গ্রামের চাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, এই সেচপাম্পে আমার দেড় বিঘা জমি রয়েছে। চাষের জন্য এখন বীজতলা তৈরির সময়। সেচের অভাবে বীজতলা তৈরি করতে পারছিনা। সেচপাম্প চালু না করলে বীজতলা তৈরি করতে পারবোনা। এতে বোরো ধান চাষে ও সমস্যা হবে। দ্রুত সেচপাম্প চালু করতে হবে। অপর এক চাষি মাহাবুবুর রহমান বলেন, মোটর ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পানির অভাবে পাতো (চারা) দিতে পারছিনা। পাতো না দিতে পারলে বোরো ধান চাষ করতে পারবোনা। দ্রুত সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার। একই কথা বললেন চাষি হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, রাতের অন্ধকারে মোটর (সেচযন্ত্র) পুড়িয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। শিগগরি মোটর চালু করতে হবে। তা না হলে আমাদের ধান চাষে সমস্যা হবে। পাতো (চারা) দিতে পারছিনা। জমির মালিক আকলিমা বেগম বলেন, এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন ধরে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা দিতে রাজিনা হওয়ায় হত্যার হুমকি দিচ্ছে। জমি দখলের চেষ্টা করছে। তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ইজারা দেওয়া জমির মোটর পাম্পের ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এবিষয়ে মনিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিস্তার ফারুক বলেন, সরেজমিন গিয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা দেখেছি। সেখানে দু’পক্ষের কিছু সমস্যা আছে। তবে বোরো আবাদ যাতে বিঘœ না হয় তার জন্য সেচ পাম্প চালু করার কথা বলা হয়েছে। দুই এক দিনের মধ্যে পাম্পটি চালু হবে বলে তিনি আশা করছেন।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button