স্থানীয় সংবাদ

নগরীতে সামান্য বিষয় নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের সাথে খুবি শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ

# দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য কোন বৈশ্বিক চক্র ছাত্রদের লাঞ্ছিত করে ঘটনাটির সূত্রপাত করতে পারে #
# খুবি শিক্ষার্থী লাঞ্ছিতের ঘটনায় উত্তেজিত ছাত্ররা অর্ধ শতাধিক বাস ভাংচুর করে
# উভয়পক্ষের লোকজন আহত #
# যৌথ বাহিনী মোতায়েন, বাস টার্মিনাল এলাকায় থমথমে অবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার ঃ সারাদেশে যখন বৈশ্বিক চক্রের ইন্ধনে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চলছে ঠিক তখন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীদের মারধর ও শিক্ষককে লাঞ্চিত করার প্রতিবাদে সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল মোড় পরিবহন শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। থেমে থেমে এ সংঘর্ষ বুধবার বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা অবধি চলতে থাকে। সন্ধ্যায় যৌথবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আগেই ছাত্ররা দ্বিতীয় দফায় একত্রিত হয়ে প্রায় অর্ধ শতাধিক দাঁড়িয়ে থাকা বাস ভাঙ্গচুর করে। এসময় উভয় পক্ষের লোকজন আহত হয়। ছাত্রদের হাতে কয়কজন ফটো সাংবাদিক আহতের খবর পাওয়া গেছে। সংবাদ সংগ্রহের জন্য ছবি বা ভিডিও করার সময় সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করতে উদ্যত হয় কিছু উছৃঙ্খল ছাত্র। এসময় সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে নিবৃত করেন। ছাত্ররা বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টা থেকে তারা সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালের সামনে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে তারা বাস মালিক ও শ্রমিকদের ধাওয়া দেয়। এরপর সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর গোটা বাস টার্মিনাল এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজিত ছাত্ররা প্রায় অর্ধ শতাধিক দাঁড়িয়ে থাকা বাস ভাঙ্গচুর করলে বাসস্ট্যান্ডের যাত্রী ও পথচারীরা আতঙ্কিত হয়ে দিকবিদিক ছুটতে থাকে। রাতে পুরো এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনরতে বিপুল সংখ্যক সেনা, নৌ ও পুলিশ সদস্য কাজ করছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সময়ন্বয়ক মো. মুহিবুল্লাহ জানান, গোপালগঞ্জ থেকে রাজীব পরিবহনের বাসে করে ইসলাম মোড়ল নামের খুবি’র এক শিক্ষার্থী খুলনায় আসছিল। ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ওই ইসলাম মোড়লকে লাঞ্চিত করে বাস শ্রমিকরা। বিষয়টি ওই শিক্ষার্থী অন্যদের জানালে তারা সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে অবস্থান নেয়। সেখানে কথা কাটাকাটির জের ধরে পরিবহন শ্রমিকরা আবারও অন্য শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় খুবির ছাত্র আশিক, সিয়াম, জিসান আহমেদ, অরুপ বসু, হৃদয় ও শাহরিয়ার পারভেজ সাদ আহত হন। এ সময় দুই জন শিক্ষককেও লাঞ্চিত করা হয়। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল এলাকায় যান। এক পর্যায়ে তারা শ্রমিকদের ধাওয়া দেন। দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। সোনাডাঙ্গা থানার ওসি (তদন্ত) হাওলাদার সানওয়ার মাসুম বলেন, রাজিব পরিবহণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র খুলনায় আসছিলেন। তাকে পরিবহণের সদস্যরা বসার ছিট দেয়নি। পরিবহণের সদস্যরা তাকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে না নামিয়ে দিয়ে তাকে বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তাকে ছাড়িয়ে নিতে বাসস্ট্যান্ডে আসলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। উভয়পক্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। তাদের থামানোর সকল চেষ্টা করা হচ্ছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল এলাকা অবরোধ করেছে। সেনা, নৌ বাহিনী, বিজিবি ও পলিশ সেখানে অবস্থান করছে। সারাদেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন বিপ্লব এনে নতুন স্বাধীনতার সূর্যোদয় ঘটিয়েছে, ঠিক সেই সময় ছাত্রদের সামান্য ভাড়া নিয়ে লাঞ্ছিত করা একটি বৈশ্বিক চক্রান্তের অপকৌশল কিনা খতিয়ে দেখবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button