স্থানীয় সংবাদ

কয়রায় ঝুঁকিপুর্ন ভবনে চলে ডাক অফিসের কার্যক্রম

রিয়াছাদ আলী, কয়রা (খুলনা) ঃ খুলনার কয়রা উপজেলার ৪নং কয়রা এলাকার কয়রা সিদ্দীকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে হেটে যেতেই চোখে পড়বে একটি ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিস। ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা যাবে পুরাতন, জরাজীর্ণ পরিত্যক্ত ভবনের একটি কক্ষ। ঐ কক্ষটি হলো পোষ্ট অফিস । সেখানে চলে সকল কার্যক্রম। তবে ভবনের ভিতরে প্রবেশ করলে সব সময় থাকতে হয় আতংকে। কখন না ধসে পড়ে। দির্ঘদিন সংস্কার না করায় ভবনের এমন দৈন্যদশা। জরুরী ভিত্তিতে সংস্কারের দাবি সংশ্লিষ্টদের। গত মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ব্রাঞ্চ পোষ্ট অফিসটির ছাদের প্রায় পুরো পলেস্তারা ঝরে পড়ে গেছে। লোহার রডগুলো থেকে পলেস্তারা খসে পড়েছে । মরিচা ধরা এসব রডসহ ছাদের আস্তারণ যে কোনো সময় মেঝেতে পড়তে পারে। মেঝের আস্তরণও ভাঙাচোরা। এ ছাড়া কর্মরতদের ব্যবহারের উপকরণগুলোও পুরাতন আর ভাঙাচোরা আর ব্যবহারে অনুপযোগী। স্থানীয় বাসিন্দা শিক্ষক আবুল বাশার গাজী বলেন, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগেও পোস্ট অফিসের প্রয়োজনীয়তা ফুরায়নি। এখনও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের প্রয়োজনীয় চিঠিপত্র পোস্ট অফিসের মাধ্যমে আদান-প্রদান হয়ে থাকে। সরকারও পোস্ট অফিসের আধুনিকায়নে নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। পোস্ট অফিসগুলোকে ডিজিটাল ও ই-সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনসাধারণ ডিজিটাল ডাকসেবা পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন। ই-সেন্টারগুলোতে উদ্যোক্তা নিয়োগের মাধ্যমে যুবসমাজের বেকারত্ব দূরীকরণে ভূমিকা রাখছে। এমন গুরুত্বপুর্ন বিভাগের ভবনটি সংস্কার আশু প্রয়োজন। জানা গেছে, কয়রায় ১৭ টি ব্রাঞ্চ পোষ্ট অফিস রয়েছে। এর মধ্যে ৪নং কয়রা ব্রাঞ্চ অফিসটি ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই থেকে পোষ্ট অফিসের তেমন কোন ভালো অফিস না থাকায় পাশের মাদ্রাসার একটি কক্ষে অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা হতো। পরে ২০১১ সালের দিকে নিজস্ব যায়গায় নির্মান করা হয় পোষ্ট অফিসের ভবন। সেই থেকে ২০১৭ সালের দিকে একবার সংষ্কারের কাজ করে কর্তৃপক্ষ । বর্তমান জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে অফিসের ভবনটি। তবে দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা হলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ৪নং কয়রা ব্রাঞ্চ পোষ্ট অফিসের ( ডাক পিওন) মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, জরাজীর্ণ এ ভবনে বসে কাজ করার মতো নয়। পলেস্তারা গুলো খসে পড়ছে যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। ২০১১ সালে দিকে নির্মিত এ ভাবনটি ২০১৭ সালের দিকে একবার নাম মাত্র সংষ্কারের কাজ করা হলেও সেটা মান সমপন্ন হয়নি। এখন অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। পোষ্ট মাষ্টার মোঃ মহিববুল্লাহ শেখ বলেন, অফিসের অবস্থা খুবই খারাপ। পাশের মাদ্রাসার একটি কক্ষে বসে অফিসের কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। খুব কষ্ট করে চাকরির স্বার্থে আমরা এখানে দায়িত্ব পালন করছি। পোষ্ট অফিসের উদ্যোক্তা সালাহউদ্দীন (মুকুল) বলেন, অফিসের সব আসবাবপত্র থেকে শুরু করে সকল যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। এখন সেগুলো দিয়ে কাজ করা যায়না সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বার বার বলার পরেও সেগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। কয়রা উপজেলা পোষ্ট মাষ্টার মোঃ অলিউর রহমান বলেন, ডাক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিন এসে বিভিন্ন অফিসের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে গেছেন। খারাপ অবস্থায় থাকা পোষ্ট অফিসের জরাজীর্ণ ভবন গুলোর তালিকা করে পাঠিনো হয়েছে। নির্দেশনা পেলে সংষ্কারের কাজ শুরু হবে। খুলনা বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মিরাজুল হক বলেন, ব্রাঞ্চ পোষ্ট অফিসের ভবন গুলো প্রকল্পের মাধ্যমে করা হয়। এর আগে গ্রামীন ডাকঘর নির্মান নামে একটি প্রকল্প ছিল । বর্তমানে কোন প্রকল্প এই মূহুর্তে নেই। প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। নতুন প্রকল্প পাশ হলে ব্রাঞ্চ পোষ্ট অফিস গুলোর সংষ্কারের কাজ শুরু হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button