মিথ্যা মামলা ও হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার ঃ মিথ্যা মামলা ও হয়রানির প্রতিবাদে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছোট বয়রা মাদ্রাসা রোড এলাকার হানিফ শেখের মেয়ে সুমাইয়া জান্নাতী প্রিয়া। তিনি জানান, স্বামী তরিকুজ্জামান বিজয়ের সাথে আমার দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিছুদিন পর বিজয়ের পরিবার আমাদের দুজনের সম্পর্কের কথা জেনে যায়। বিজয়ের সাথে আমি বাসায় যাওয়া আসা করতাম তখন তার পরিবার আমাকে মেনে নিয়েছিলো। হঠাৎ করে আমি কিছুদিন যাতায়াত কমিয়ে দেওয়ায় ছেলের মা এবং বাবা আমাকে ফোন করে তাদের বাসায় আনতে বলে। কারণ তার ছেলে বিজয় নেশা করত কিছুদিন বাসায় যাতায়াত কমিয়ে দেওয়ার কারণে বিজয় খুব উত্তেজিত হয়ে নেশা বাড়িয়ে দেয় এবং নিজের হাতে পায়ে বিভিন্ন জায়গায় ব্লেড চাকু দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে। পরে সে আমার বাড়িতে ছুটে আসে। আমি তার এই পরিস্থিতি দেখে বিজয়কে বিভিন্নভাবে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করি। তখন ওই ছেলের মা-বাবা আমাকে বাসায় ডেকে নিয়ে বলে তুমি আমার মেয়ে, তুমি এখন থেকে প্রতিদিন আমাদের বাসায় যাতায়াত করবা। বিজয়দের বাসা থেকে মাঝে মধ্যে বেশি রাত করে বের হয়ে গেলে বিজয়ের বাবা-মা আমাকে বিভিন্ন মিথ্যা বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের বাসায় রেখে দেয়। আর আমাকে বলে তোমাদের কিছুদিনের মধ্যে বিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করব। আমরা মনে করি তুমি আমাদের নিজের মেয়ে। আমাকে এরকম বিভিন্ন মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয় শুধুমাত্র তার ছেলেকে নিশা থেকে ফেরানোর জন্য। আমি যখন নেশার জগত থেকে বিজয়কে ফেরাতে ব্যর্থ হই তখন বিজয়ের মা-বাবা বিজয়কে রিহ্যাব সেন্টারে নিউ পথ মাদকাসক্ত ক্লিনিকে ভর্তি করেছিল। পরে বেশ কিছুদিন পর রিহ্যাব সেন্টার থেকে তাকে নিয়ে আসে বাড়িতে। কিছুদিন ছেলে নেশা করে না সুস্থভাবে চলাফেরা করে। এরপর বিজয় আমাকে বিয়ে করার জন্য মানসিকভাবে অত্যাচার করত আমি এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে একপর্যায়ে তার কিছুদিন পর কোর্টে গিয়ে ফোর্ড ম্যারেজ করি। এটা আমাদের দুই পরিবারের কেউ জানতো না আমাদের ভিতরে গোপন ছিল।
তিনি আরও বলেন, ছেলেকে যখন বাড়ি থেকে বের করে দেয় তখন আমাদের বিবাহের ডকুমেন্টস তার মা-বাবা রেখে দেয় এরপর ছেলেকে নিয়ে ঘর ভাড়া করে দুজনে একসাথে থাকি। পরবর্তীতে আমরা ঘর পরিবর্তন করার সময় আমাদের ডকুমেন্ট চাইলে তখন আমরা দেখাতে পারি না যে কারণে বাধ্য হয়ে দ্বিতীয়বার আবার কোর্ট মেরেজ করি।
তারপর ছেলের মা বাবা বিভিন্ন সময় পুলিশ দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করে। আমার নামে খালিশপুর থানায় অভিযোগ করে যে আমার ছেলে প্রাপ্তবয়স্ক না থাকায় বিয়ে করল কিভাবে। কিন্তু তারা তাদের ছেলে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করেছে পরীক্ষার জন্য দুই তিন বার। পুলিশের হয়রানি সহ্য করতে না পেরে খুলনা থেকে পালিয়ে যশোর যেয়ে বাসা ভাড়া করে যে থাকি ৩ মাস। এই তিন মাস পর ছেলের বাড়ি থেকে কিছু লোক জন হয়তো বা কারো মাধ্যমে মোবাইল নাম্বার নিয়ে লোকেশন ট্রাকিং করে ওইখানে গিয়ে আমাকে মারধর করে এবং পুলিশ দিয়ে জোর করে ছেলেকে খুলনা নিয়ে চলে আসে। পরদিন আমি খুলনায় এসে তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করি অনেক খোঁজাখুঁজির পর খুলনা নিউ পথ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ওখানে তার খোঁজ পাই এই যে তার বাবা-যা আবার ওই রিহ্যাব সেন্টারে ভর্তি করে রাখে। আমি রিহাব সেন্টারে যে অনেক কান্নাকাটি করেছি তার সাথে দেখা করার জন্য কিন্তু কেউ আমাকে তার সাথে দেখা করতে দেয় নাই। মাঝে মাঝে ফেসবুকের মাধ্যম দিয়ে আমার স্বামী আমাকে লিখে পাঠাতো আমাকে বলতো কারো কথা শুনে যেন তার জীবন থেকে আমি সরে না যাই। দুই মাস পর তার বাবা-মা ছেলেকে রিহ্যাব সেন্টার থেকে বের করে কসম দেয় যাতে সে আমার সাথে কোন যোগাযোগ না করে। ছেলে রিহ্যাব সেন্টার থেকে বের হওয়ার জন্য তার মা বাবার কথায় রাজি হয়ে যায়। এবার রিহ্যাব সেন্টার থেকে বের হয়ে আমার স্বামী অন্য কোথাও না যেয়ে তার বাবা মাকে ফাঁকি দিয়ে আমার বাসায় চলে আসে এবং আমাকে বলে দ্রুত কাপড় গোছাতে বেশিক্ষণ থাকা যাবে না কারণ আমরা এখান থেকে পালিয়ে যাব বেশিক্ষণ থাকলে পুলিশ চলে আসবে। তখন আমি তাকে প্রশ্ন করি আমরা কোথায় যাব সে বললো আপাতত তোমার খালাতো বোনের বাসায় যেয়ে উঠি আমার খালাতো বোনের বাসায় তিন দিন থাকার পরে তিলকের ভিতরে বাসা ভাড়া নেই।
ওইখানে আমরা অনেকদিন থাকি পরে আমি আবার অন্তঃস্বত্তা হলাম এবং আমি আমার মাকে জানালাম তখন আমার মা আমাদেরকে মেনে নেয়।
তিনি আরও বলেন, পরে আমরা ঐখানের বাসা ছেড়ে দিয়ে দর্শনা চলে যাই ওখানে বেশ কিছুদিন থাকার পর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি ওখানে আমার দেখার কেউ ছিল না। তখন আমি আমার স্বামীকে বলি তুমি আমার মায়ের কাছে পাঠিয়ে দাও আর তা না হলে তুমি তোমার বাসায় আমাকে নিয়ে চলো এই কথা নিয়ে তার সাথে আমার অনেক কথা কাটাকাটি হয় পরবর্তীতে। আমার স্বামী তার বড় ভাইয়ের ওয়াইফের সাথে কথা বলে মোবাইল ফোনে ঠিক তার তিন দিন পর রাতে সে আমাকে ওখানে একা ফেলে রেখে চলে আসে খুলনায়। তখন আমি আমার মাকে বিষয়টি জানালে আমার মা আমাকে অসুস্থ অবস্থায় খুলনায় নিয়ে আসে এরপর থেকে আমার স্বামী আর আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করে না আমি যোগাযোগ করার অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। তার কিছুদিন পর ফেসবুকের মাধ্যমে হঠাৎ করে আমার স্বামীর গায়ে হলুদের ছবি পোস্ট দেখি তাৎক্ষণিক আমি তার বাবাকে ফোন করি এবং আমি আমার অসুস্থতার বিষয়গুলো তাকে জানাই তার বাবা আমার কথা শুনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। যেদিন বিজয়ের বাবা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ওইদিন এক ঘন্টা পর ছেলে ও ভর নতুন বউয়ের ছবি আপলোড দেয় ফেসবুকে। এটা দেখার পর ফেসবুকে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর ছবি এবং আমার প্রেগনেন্সি রিপোর্টসহ আমি ফেসবুকে আপলোড দেই এ বিষয়টা তাদের এলাকাবাসী জেনে যায় পরবর্তীতে আমি থানায় অভিযোগ করি অভিযোগ করার পর তাদেরকে ডেকেছিল তখন ছেলে আমাকে এবং আমার গর্ভের সন্তানকে অস্বীকার করে। “আমাকে জানায় বিবাহের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে অন্তসত্তা করেছে যার কারনে আমার জীবনে অনেক বড় ক্ষতি করেছে।” পরবর্তীতে আমি সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করি সেখানেও তারা উপস্থিত হয়ে সব কিছু অস্বীকার করেন। তাদের সন্তানের বয়স ১৬ বছর দাবি করেন। সেনাবাহিনীর অফিসার আমাকে সাথে নিয়ে থানায় গিয়ে মামলা করার পরামর্শ দেয় আমি আমার স্বামীর নামে এজাহারের ৯/১ ধর্ষণ মামলা দায়ের করি। পরবর্তীতে তাকে কোর্টে চালান করার পরে জেল হাজতে প্রেরণ করে। আমি ফেসবুকের মাধ্যমে আমার সাথে মিথ্যা বিয়ের অভিনয় করে আমাকে অন্তঃসত্ত্বা করায় এবং আমার সন্তানকে অস্বীকার করায় ফেসবুকে তুলে ধরি। তারপর ছেলের মা-বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ও আমার মায়ের নামে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। আমাদের নামে এই মিথ্যা মামলা কেন দিল ছেলের বয়স ১৬ বছর কিভাবে দাবি করে আবার অন্যত্র ছেলেকে বিয়ে দিল এবং আমার নামে বিভিন্ন জায়গায় আমাকে নিয়ে বিভিন্ন বাজে সমালোচনা করছে। আমাকে বিভিন্ন সময় হুমকি দিচ্ছে তারা বলছে ৩ লক্ষ টাকা নিয়ে মামলা তুলে নিতে হবে। আমার দাবি আমার সন্তানের জন্য তার বাবাকে চাই এবং আমি চাইনা আমার সন্তান বাবা খারা হোক।