দাফনের সাড়ে ৬ মাস পর আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন

# তেলিগাতী নুরজাহানের মৃত্যু স্বাভাবিক না হত্যা জানতে #
খানজাহান আলী থানা প্রতিনিধি ঃ খুলনার আড়ংঘাটা থানাধিন তেলিগাতী ফকিরপাড়ার মৃত নুরজাহান বেগমের মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে জানতে নুরজাহানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে গতকাল বুধবার সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবায়েত আহম্মেদের উপস্থিতিতে তেলিগাতী ফকিরপাড়ার পারিবারিক কবরস্থন থেকে নুরজাহানের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। মৃত নুরজাহান বেগমের কন্যা রেহেনা বেগম ও রোমেচা তাদের মা নুরজাহান বেগমকে শ^াসরোধ করে হত্যার অভিযোগ করে খুলনার বিজ্ঞ যুগ্ন জেলা জজ-১ এর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় আসামী করা হয়েছে তাদের সৎ ভাই বাচ্চু মোল্যা ও খালাতো ভাই রফিকুল ইসলামকে। নুরজাহানের মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্নয়ে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে দাফনের ৬ মাস ২৫ দিন পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবায়েত আহম্মেদের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আড়ংঘাটা থানার এস আই কালীপদসহ থাকা পুলিশের উপস্থিতিতে নুরজাহানের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এ সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য জি এম এনামুল কবির, মহিলা মেম্বর মাহফুজা বেগমসহ এলাকার শতশত মানুষ উপস্থিত ছিলেন। মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তেলিগাতী ফকিরপাড়ার মৃত আশরাফুল ফরাজীর স্ত্রী নুরজাহান বেগম(৬৮) গত বছর ১৩ জুন মৃত্যুবরণ করেন। এই ঘটনায় নিহতের মেয়ে রেহেনা বেগম ও রোমেচা খুলনার বিজ্ঞ যুগ্ন জেলা জজ-১ এর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয় নূরজাহান বেগমের ব্যাংকের গচ্ছিত পঁয়তাল্লিশ লক্ষ টাকার নমিনি বাচ্চু মোল্যাকে করতে অস্বীকৃতি জানানোয় নুরজাহান বেগমকে বাচ্চু মোল্যা ও রফিকুল ইসলাম পরস্পর যোগসাজসে ১৩/০৬/২০২৪ তারিখ দিনগত রাত্রে ১২ ঘটিকার পর যে কোন সময় ঘুমের ঘরে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। মামলায় আরো বলা হয় নুরজাহান বেগমকে এর আগে পাথর দ্বারা আঘাত করে বাচ্চু মোল্যা তাতে নুরজাহান বেগম মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মৃত্যু নুরজাহান বেগমের কন্যা রেহেনা বেগম ও রোমেচা তাদের মা নুরজাহান বেগমকে শ^াসরোধ করে হত্যার অভিযোগ করে খুলনার বিজ্ঞ যুগ্ন জেলা জজ-১ এর আদালতে সৎ ভাই বাচ্চু মোল্যা ও খালাতো ভাই রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলার পর অভিযুক্ত আসামীরা পলাতক রয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্নয়ে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করে। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে গতকাল ৮ জানুয়ারী বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবায়েত আহম্মেদের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আড়ংঘাটা থানার এস আই কালীপদ, স্থানীয় ইউপি সদস্য জি এম এনামুল কবির, মহিলা মেম্বর মাহফুজা বেগমসহ এলাকার শতশত মানুষ উপস্থিতে পারিবারিক কবরস্থান থেকে নুরজাহানের মরদেহ উত্তোলন করে মরর্গে প্রেরণ করা হয়। এ বিষয়ে স্থানীয় মহিলা মেম্বর মাহফুজা বেগম বলেন, গত ১৩ জুন লোকমুখে খবর পেয়ে মৃত নুরজাহানের বাড়ীতে গেলে নুরজাহানের পুত্র বাচ্চু মোল্যা আমাকে জানায় রাতে তার মা কিছুটা অসুস্থবোধ করলে সে তার মায়ের পা চেপে দেয়। তার মা যখন ঘুমিয়ে যায় তখন সে তার ঘরে চলে যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি দেখে তাকে ডাকাডাকি করে সাড়াশন্দ না পাওয়ায় তার চিৎকারে পার্শবর্তিরা এগিয়ে আসে। পরবর্তিতে স্বাভাবিক ভাবে জানাযায় শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তিনি আরো জানান, যারা নুরজাহানকে গোসল করিয়েছে তারা বলেছে নুরজাহানের শরীরে কোন দাগ বা ক্ষত চিহৃ দেখা যায়নি। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জি এম এনামুল কবির বলেন, নুরজাহানের সম্পতি এবং ব্যাংকে থাকা ৪৫ লক্ষ টাকা নিয়ে আমি স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে নুরজাহান, বাচ্চু মোল্যা,তার আপন বোন এবং সৎ বোনদের নিয়ে বসাবসি করে উভয়ের সম্মতিতে জমিজমা এবং অর্থের বিষয়ে একটা সমাধান করি। শালিশী বৈঠকের কিছু দিন পরই নুরজাহান মারা যায়। তার মৃত্যুর ঘটনায় একটি মহল তাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দের সৃষ্টি করে ফায়দা লুফার চেষ্টা করছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই কালীপদ বলেন, তেলিগাতী ফকিরপাড়ার মৃত নুরজাহানের কন্যা রেহেনা বেগম আদালতে একটি হত্যা মামলা করে। মামলায় তিনি দাবী করেন তার মা নুরজাহান বেগমকে তার ভাই বাচ্চু মোল্যা এবং খালাতো ভাই রফিকুল ইসলাম বালিশ চাপা দিয়ে শ^াসরোধ করে হত্যা করেছে। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসাবে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্নয়ের জন্য তার লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবায়েত আহম্মেদ এর উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করা হয়।