বাবার মৃত্যুতে দ্ইু শিশু শোকে স্তব্ধ
![](https://dailyprobaha.com.bd/wp-content/uploads/2025/01/khun-2.webp)
কে এইচ মনি ঃ কক্সবাাজর সমুদ্র সৈকতের সিগাল পেয়েন্টে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের অপসারিত ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী টিপু গত বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। সেখানে আইনের প্রক্রিয়া শেষ করে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স গাড়িতে করে গতকাল শনিবার (১১ জানুয়ারি) ভোর পৌনে ৫টায় খুলনার দৌলতপুর থানাধীন দেয়ানা উত্তরপাড়া হোসেন শাহ রোড এলাকায় নিহতের বাড়িতে এসে পৌছায়। নিহত টিপুর ছোট বোনের জামাই মো: ইউনুস আলী শেখ লাশ নিয়ে খুলনায় আসেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শনিবার সকাল থেকেই লাশ বাড়িতে আনার পর স্থাণীয় বাসিন্দারা তাকে শেষবারের মতো এক নজর দেখার জন্য তার বাড়িতে ভিড় জমান । একে একে সবাই লাশ দেখছেন। লাশের পাশে শোকে স্তব্দ হয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায় নিহতের টিপু বড় ছেলে তাসিন রব্বানী রাহাত (১১)কে। নিহতের ছোট্ট শিশু কন্যা ওয়াজিয়া রব্বানী রায়না (৬) নিয়ে জড়িয়ে ধরে আছে আত্মীয়রা। বাবার নিথর দেহ দেখে শোকে স্তব্দ ছিলো এই ছোট্ট দুই শিশু। ছোট্ট দুই শিশু বোবা কান্নার মতো ফেল ফেল করে তাকিয়ে আছে বাবার লাশের দিকে। শিশু কন্যাকে জড়িয়ে ধরে আত্মতীয়-স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়। কিন্তু দুই শিশু ছিলো তখন শোকে স্তব্দ। মৃত বাবার দিকে তাকিয়ে আছে। নিহত টিপুর এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে তাসিন রব্বানী রাহাত এবার ৭ম শ্রেনীতে ফুলবাড়িগেট গভ: ল্যাবরেটরি হাই স্কুলে পড়া শুনা করছে। ছোট মেয়ে ওয়াজিয়া রব্বানি রায়না (৬) দৌলতপুর পাবলা এলাকায় সবুজ সাথী প্রিক্যাডেট স্কুলে পড়াশুনা করে। স্ত্রী সাবিনা আক্তার একজন গৃহিনী। স্বামীর শোকে কাতর হয়ে তিনিও এখন স্তব্দ। কারো সাথে কথা বলছেন না। স্বামীর সাথে ভিডিও কলে তার শেষ কথা হয় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। ওই দিন রাতেই স্বামীর মৃত্যুর খবর আসে। জোহরবাদ নিহত টিপুর জানাজা দেয়ানা উত্তরপাড়া স্কুল মাঠে জানাজা সম্পন্ন হওয়ার পর সরকারি দেয়ানা উত্তরপাড়া কৃষি কলেজ সংলগ্ন কবরখানায় তার লাশ দাফন করা হয়। জানাযায় দলবল নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন। এর আগে ১০ জানুয়ারি টিপুর ভগ্নিপতি ইউনুস আলী বাদী হয়ে গোলমা রব্বানী টিপু হত্যা ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে কক্সবাজার মডেল থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন । মামলার দায়ের পর লাশ নিয়ে শনিবার বিকেল পৌনে ৪টায় খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। স্থাণীয়দের সূত্রে জানা গেছে, খুলনার দৌলতপুর থানাধীন দেয়ানা উত্তরপাড়া হোসেন শাহ রোড এলাকার বাসিন্দা গোলাম আকবর। তিনি সাবেক খালিশপুর মহাসিন স্কুলের সাবেক শিক্ষক ছিলেন। পৈত্রিক সূত্রে তার গ্রামের বাড়ি খুলনার রূপসা উপজেলার ৫নং ঘাটভোগ ইউনিয়নের আনন্দ নগর এলাকায়। তার তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে নিহত গোলাম রব্বানী টিপু হচ্ছে মেঝ। বড় ছেলে গোলাম রসুল বাদশা খালিশপুর বঙ্গবাসি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক। ছোট ছেলে গোলাম রহমান মিন্টু। পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ইজিবাইক ভাড়া দিতো এবং নিজেও চালাতো। ছোট মেয়ে হ্যাপী একজন গৃহিনী। নিহত গোলাম রব্বারী টিপু তিন ভাই বোনের মধ্যে মেঝ ছিলেন। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সিগাল পয়েন্টে খুলনা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গোলাম রাব্বানী টিপুকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ওই রাতে খুলনা সিটি করপোরেশনের আরেক কাউন্সিলর শেখ হাসান ইফতেখার ওরফে চালুসহ দুইজনকে আটক করেছে র্যাব-১৫। চালু খুলনার ১৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। তিনি ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আটক অপরজন মেজবাহ হক ভুট্টো। তিনি কক্সবাজার শহরের টেকপাড়ার বাসিন্দা। র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, ইফতেখারকে কক্সবাজার শহরের কলাতলী সড়কের হোটেল গোল্ডেন হিল থেকে রাত ১২টার পর আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে জানিয়ে র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক বলেন, ইফতেখারসহ নিহত গোলাম রব্বানী টিপু বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে কক্সবাজারে আসেন। হোটেল গোল্ডেন হিলের ‘অতিথি লিপিবদ্ধ বই’ এ দেখা গেছে আটক ইফতেখার, নিহত গোলাম রব্বানী টিপুর সাথে রুমি (২৭) নামের এক নারীও সকাল ৭টায় হোটেলে উঠেন।