স্থানীয় সংবাদ

কেসিসির কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন

# আজ প্রশাসকের সাথে বিআইডব্লিউটিএর বৈঠক #

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় রবিবার অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালনপূর্বক নগরভবনে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে। পরে দুপুর ২টার দিকে কেসিসির প্রশাসক ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার নগরভবনে এসে আন্দোলনরতদের দাবির ব্যাপারে আশ্বস্ত করলে তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন বলে কেসিসি কর্মচারি ইউনিয়নের সভাপতি উজ্জল কুমার সাহা জানান। কেসিসি সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারির ব্যানারে এ আন্দোলন শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি জানান, আজ সোমবার বিকেল ৩টায় নগরভবনে প্রশাসকের সাথে বিআইডব্লিউটিএ খুলনার কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক শেষে সিদ্ধান্তের আলোকে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। আন্দোলনের আহবায়ক ও রাজস্ব অফিসার এসকেএম তাছাদুজ্জামান বলেন, কেসিসির রূপসা ফেরিঘাট, কাচারি ঘাট। কিন্তু সম্প্রতি বিআইডব্লিউটিএ দখল করে নিয়েছে। যা আইনগতভাবে তারা পারে না। এ ঘাট দু’টি কেসিসির। সেভাবেই দীর্ঘ দিন টোল আদায় করা হচ্ছে। এমন কি বাধা দিতে গেলে কেসিসি দায়িত্বরত কর্মচারিরা শারিরীকভাবে লাঞ্চিত হয়েছে। মামলা করলেও পুলিশ তেমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। তারই প্রতিবাদে কর্মকর্তা কর্মচারিরা এ আন্দোলন করেছে। কেসিসি এষ্টেট অফিসার গাজী সালাউদ্দীন বলেন, কেসিসির রূপসা ঘাট, কাচারিঘাট সম্পূর্নভাবে অবৈধভাবে বিআইডব্লিউটিএ দখল করে নিয়েছে। বাধা দিতে গেলে আক্রমণে শিকার হতে হচ্ছে। লবণচরায় গাছ কাটতে গেলে দুর্বৃত্তরা বাধা সৃষ্টি করে। মারধর করে কর্মচারিদের। এমন কি কর্মকর্তাদেরও হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মুজগুন্নীতে কেসিসির গাছ কেটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। অভিযোগ দিলেও পুলিশ নিরব। বিষয়টি কেসিসি কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হলেও কর্তৃপক্ষ তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়নি। নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে এ আন্দোলন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। সকাল থেকেই নগরভবনে কেসিসির সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিার অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। সকল সেবা এ সময় বন্ধ ছিল। এ সময় সভাপতিত্ব করেন কেসিসির রাজস্ব অফিসার একেএম তাছাদুজ্জামান। বক্তৃতা করেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কর তাজুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আঃ আজিজ, এষ্টেট অফিসার গাজী সালাহ উদ্দীন, বাজার সুপার শফিকুল ইসলাম দিদার, গণসংযোগ কর্মকর্তা আঃ মাজেদ, উপ-সহকারি প্রকৌশরী (যান্ত্রিক) সেলিমুল আজাদ, চীফ এ্যাসেসর হাফিজুর রহমান, কর্মচারি ইউনিয়নের সভাপতি উজ্জল কুমার সাহা, নাজমুল হক মুকুল, খান হাবিবুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন, আহসান হাবিব, শেখ ওহেদুজ্জামান, আনোরুল ইসলাম, এমপ্লীজ ইউনিয়নের সভাপতি আঃ সোবহান আলী, আঃ হক, রাজু আহমেদ প্রমূখ। সম্পত্তি শাখা সূত্রে প্রকাশ, গত ৫ আগস্টের পর কেসিসির নিয়ন্ত্রিত রূপসা ঘাটটি দখল করে নেয় বিআইডব্লিউটিএ। গত ১৪ সেপ্টেম্বর তারা ঠিকাদারের মাধ্যমে দখল নেয়। এ সময় বাধা দিতে গেলে কর্মরত কর্মচারি নির্যাতনে শিকার হয়। এ ঘটনায় খুলনা থানায় মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশের ভ’মিকা সন্তোষজনক নয়। গত ৮ জানুয়ারী কাচারিঘাট দখলে নেয় বিআইডব্লিউটিএ। গত ১৯ ডিসেম্বর কেসিসি নিয়ন্ত্রিত লবণচরা থানার বিপরীত পাশে গাছ কাটতে গেলে দুর্বৃত্তরা বাধা দেয়। এমন কি তারা কর্তব্যরত কর্মচারি জাহিদ ও মাহবুবকে মারধর করে। এ ঘটনায় মামলা হলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নেই পুলিশের। মুজগুন্নীতে কেসিসির বড় একটি বটগাছ কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় গত ৮ জানুয়ারী খালিশপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও পুরিশ কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এছাড়া লবণচরায় কেসিসির জমিতে সিরিজ গাছের ভাইরাস দুর্বৃত্তরা কাটছে, এমনই খবরে গেলে উল্টো দুর্বৃত্তরা ভাইরাস ও কর্তৃককৃত গাছ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় কেসিসির উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের হুমকি দিয়ে যায়। কেসিসির সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারিরা ধারাবাহিকভাবে দুর্বৃত্ত কর্তৃক নির্যাতিত হলেও পুরিশ প্রশাসনের ভ’মিকা নিরব। বিশেষ করে বিআইডব্লিউ কর্তৃক আলী আকবর নামের একজন ঠিকাদার বহিরাগত মাস্তান দিয়ে কেসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নাজেহাল করতে প্রস্তুত হয়ে আছে। বিষয়গুলো কেসিসি কর্তৃপক্ষকে বলার পরও তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ না নেয়ার প্রতিবাদে ও নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে কেসিসি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা এ আন্দোলন কর্মসূচী পালন করেছে বলে জানান এষ্টেট অফিসার গাজী সালাউদ্দীন। বিআইডব্লিউটিএ-এর খুলনার উপ-পরিচালক মাসুদ পারভেজ জানান, গত ৩১ বছর ধরে এ ঘাটসহ খুলনার পাঁচটি ঘাটের মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা চলছিল। গত ৩ ডিসেম্বর’২৪ আদালত তাদের পক্ষে রায় দেয়। এরপর কর্তৃপক্ষ ঘাটগুলো দরপত্র আহবান করেন। কেসিসির কোন কর্মকর্তা-কর্মচারির সাথে তার কখন দেখা হয়নি। খারাপ আচরণ থাক দুরের কথা। সুবিধাভোগী কোন পক্ষ গোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে বলে তিনি মনে করছেন। কেসিসির প্রশাসক ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার বলেন, বিআইডব্লিউটিএর সাথে ঘাটের মালিকানা নিয়ে মত পার্থক্য রয়েছে। ওই বিষয়টি নিয়ে আজ সভা আহবান করা হয়েছে। আশা করি মিমাংসা হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button