স্থানীয় সংবাদ

যশোর জেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের দুর্ণীতির অভিযোগ

মোঃ মোকাদ্দেছুর রহমান রকি যশোর থেকে ঃ যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা লুৎফর রহমান সরদারের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। উক্ত দু’জনের খপ্পড়ে পড়ে জেলা পরিষদের জায়গায় মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়নি। ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসায়ীকে দোকান দেওয়ার কথা বলে ৬০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অর্থ আত্মসাতকারী উক্ত দু’জনের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ ও ভূক্তভোগী দোকান্দারগন সম্প্রতি প্রশাসক/ চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তারা প্রকাশ করেন,তারা ঐতিহ্যবাহী যশোর জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের দোকান মালিকগন। তারা দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত দোকান জরাজীর্ণ দোকানঘর নির্মাণ করে পুরাতন কাপড় বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।পরবর্তীতে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট উন্নয়ন লক্ষ্যে নিজনিজ খরচে পুনঃ নির্মাণ এবং মাসিক ভাড়ার বন্দোবস্তে আদেশ দেন। সেই অনুযায়ী নিজ নিজ খরচে মার্কেটের দোকানঘর নির্মাণের জন্য পূর্বের ৫৬ জনের মধ্যে ৩৬ জন এবং ক্ষতিগ্রস্থ ২০জনকে বাদ দিয়ে জেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল ও সেই সময় দায়িত্বপালন কারী প্রধান সহকারী লুৎফর রহমানের মাধ্যমে মার্কেটের সভাপতি শহিদুল ইসলামের মাধ্যমে ২৯টি প্রতি দোকান ঘর বাবদ ২লাখ টাকা কিছু ক্ষেত্রে ৩ লাখ টাকাসহ সর্বমোট ৬০লাখ টাকা চুক্তি করেন। যা সরকারী কোষাগারে জমা না করে দূর্নীতি পরায়ন দু’জন আত্মসাত করেন। সূত্রগুলো আরো বলেছেন,উক্ত দু’জন পান দোকান্দার আব্দুল মালেকের মাধ্যমে ৪৭টি দোকান ঘর ক্ষতিগ্রস্থদের বঞ্চিত করে ৫/৬লাখ টাকার বিনিময়ে অন্যত্র বিক্রি করে বিপুল অর্থ আত্মসাত করেন।সূত্রগুলো দাবি করেছেন, পূর্বে আত্মসাতকৃত ৬০লাখ টাকার মধ্য হতে বিগত ২০২৩ সালের ২৭ নভেম্বর শহিদুল ইসলামের নিজ নামীয় একাউন্ট নয়ন এন্টার প্রাইজ ন্যাশনাল ব্যাংক যশোর শাখা হতে নগদ উত্তোলন করে পান দোকান্দার মালেকের নিজ একাউন্ট সোনালী ব্যাংক আর এন রোড শাখায় প্রদান করেন। পর্যায়ক্রমে মালেক শহিদুলের একাউন্ট হতে অবশিষ্ট ২০লাখ টাকা নিজ একাউন্টে নিয়ে নেয়। যা জেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল ও প্রধান সহকারী লুৎফর রহমান সরদার ভাগ বাটোয়ারা করে নেন। সেই সুযোগে পান দোকান্দার মালেক তার নিজ নামে ১টি, তার ছেলে আশার নামে ১টিসহ তার ভাইপো স্বপন,রিপন এবং তপনসহ আরো অনেকের নামে মোট ৭টি দোকান ঘর বরাদ্ধ নেয় যার আনুমানিক মূল্য ৭০লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্থ দোকান্দারগন বর্তমানে ব্যবসা বন্ধের কারনে পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফুটপাতের সামান্য পান দোকান্দার মালেক কিভাবে ৭টি দোকান ঘরের মালিক বনে গেছেন। সেই সময় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুলের আস্থাভাজন হিসাবে ক্ষমতার দাপটে প্রধান সহকারী লুৎফর রহমান সরদার দীর্ঘ ২০ বছর যাবত জেলা পরিষদে দায়িত্ব পালনে লুটপাট ও পরিষদের টাকা তছরুপ করেছেন। একই স্থানে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের সুযোগে তিনি বিপুল পরিমানের অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন। সূত্রগুলো বলেছেন, লুৎফর রহমান সরদারের নিজ জেলা সাতক্ষীরায় ৫ কাঠা জমির উপর ৫তলা বিশিষ্ট আলিশান বাড়ি,ওই জেলার তালা থানার ইসলামকাঠি বাউখোলা গ্রামে ১৫ থেকে ২০ বিঘা জমি, যশোর শহরের চাঁচড়া মৌজার ডালমিল মর্ডাণ সিটিতে ৫শতক জমি যার বর্তমান বাজার মূল্য ৮০ লাখ টাকা। এছাড়াও তিনি তার স্ত্রী, ছেলেদের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিমানের অর্থ রয়েছেন বলে সূত্রগুলো দাবি করেছেন। লুৎফর রহমান ও পান দোকান্দার মালেক যোগসাজসে জেলা পরিষদের সুপার মার্কেটের হোলডিং বাণিজ্য করে ৪০ থেকে ৫০লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। সম্প্রতি মাস খানেক পূর্বে প্রধান সহকারী কাম ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা দাবিদার লুৎফর রহমান সরদারকে জনস্বার্থে নড়াইল জেলায় বদলীর আদেশ দেয়া হয়েছে। তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। দূর্নীতিবাজ লুৎফর রহমান ও মালেকের বিরুদ্ধে জেলা পরিষদের বর্তমানে দায়িত্ব প্রাপ্ত চেয়ারম্যান/ প্রশাসকের কাছে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অভিযোগ দেওয়া হলে তিনি গ্রহন করে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছাদুজ্জামানের কাছে দেন। এ ব্যাপারে সাবেক প্রধান সহকারী ও ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা লুৎফর রহমান সরদারের কাছে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয় বলে সাংবাদিকদের বলেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button