স্থানীয় সংবাদ

দৌলতপুর বাজার বণিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ, প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি

মো. আশিকুর রহমান ঃ দৌলতপুর বাজার বণিক সমিতি (রেজি:নং- ২৫১০)’র ত্রি-বার্ষিক সাধারন নির্বাচন আগামী ৩ ফেব্রুয়ারী (সোমবার) অনুষ্ঠিত হবে নিবার্চন। নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই প্রার্থী, ভোটার, সমর্থক ও সাধারন ব্যবসায়ীসহ গোটা দৌলতপুর এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রার্থীদের পোষ্টার, ফেস্টুন, প্লেকার্ড ও হ্যান্ড মাইকে প্রার্থীদের নানা প্রতিশ্রুতি শব্দে মুখরিত গোটা দৌলতপুর বাজার এলাকা। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন, দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি, চাইছেন সমর্থন। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় চরম ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। প্রার্থীরা বলছেন, ব্যবসায়ী ও বাজারের সার্বিক উন্নয়ণে তারা নিবেদিত প্রাণ হিসাবে কাজ করবেন। বিপরীতে ভোটারা বলছেন, এমন যোগ্য ব্যক্তিকে আমরা নির্বাচিত করতে চাই, যে বা যারা (প্রার্থীরা) ব্যবসায়ীদের সুখে-দুঃখে ও বিপদে আপদে পাশে থাকবেন। পাশাপাশি তারা (প্রার্থীরা) বাজারের সার্বিক উন্নয়ণে ব্যবসায়ীদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করবেন এমনটাই প্রত্যাশা। শনিবার (১৮ জানুয়ারী) দিনজুড়ে দৌলতপুর বাজার ঘুরে প্রার্থী, ভোটার, সাধারন ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এসব কথা শোনা গেছে। সম্প্রতি সময়ে দৌলতপুরের চায়ের দোকান হতে শুরু করে সর্বত্র এখন আলোচনা চলছে কারা আসছেন দৌলতপুর বাজার বণিক সমিতির নতুন নেতৃত্বে! ভোটার ও কাঁচা সবজি বিক্রেতা কামাল হোসেন জানান, নির্বাচন আসন্ন। বাজারের নেতৃত্বে নতুন মুখ চাই, যারা (যে প্রার্থীরা) ব্যবসায়ী ও বাজারের সার্বিক উন্নয়ণে কাজ করবে। যারা আমাদের ভোটে নির্বাচিত হবেন তাদের কাছে প্রত্যাশা থাকবে বাজারের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, অবকাঠামোর সার্বিক উন্নয়নে কাজ করার। ভোটার ও মাংস বিক্রেতা রহমত জানান, বাজারের নেতৃত্বে নতুন মুখ চাই। যারা ব্যবসায়ীদের পাশে থেকে ও বাজারের সার্বিক উন্নয়ণে নিরলসভাবে কাজ করবে। আমাদের বিপদ-আপদের কথা শুনে ছুটে আসবে।
ভোটার ও মুদি মালামাল বিক্রেতা আমিরুল ইসলাম জানান, নতুন মুখ আসুক। তারা নতুন ভাবে কাজ করুক। আমাদের ও বাজারের পক্ষে কাজ করুক এবং যারা নির্বাচনে জয় লাভ করবেন তাদের প্রতি প্রত্যাশা মৎস পট্টির উন্নয়ন, নদী-ভাঙনের হাত থেকে বাজার, রাস্তাঘাট ও স্থাপণা রক্ষা করার উদ্যোগ গ্রহন করবেন। ভোটার ও মাছ বিক্রেতা আঃ বারেক জানান, আমাদের মৎস পট্টির ড্রেনেস ব্যবস্থা ভালো নয়। সামান্য বর্ষা হলেই দূর্ভোগ বেড়ে যায়। যারা নির্বাচনে জয় লাভ করবেন তাদের প্রতি প্রত্যাশা মৎস পট্টির সার্বিক উন্নয়নের দিকে যেন তারা নজর দেয়। ফুটপাতের ফল বিক্রেতা ও ভোটার নওয়াব আলী জানান, এই বাজারে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে সুনামের সাথে ব্যবসা করছি। আমি একজন সাধারন ব্যবসায়ী হিসাবে বলতে চাই প্রার্থীদের কাছে কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই, তারা যেন আমাদের ও বাজারের উন্নয়নে নিবেদিত প্রাণ হিসাবে কাজ করে। ভোটার ও চাল ব্যবসায়ী অশোক কুমার দাস জানান, দৌলতপুর বাজার এই অঞ্চলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ন বাজার। বাইরের অঞ্চলের বহুলোক পণ্য বিক্রির জন্য এই বাজারে আসে। বিশেষ করে নড়াইল, কালিয়া জেলা হতে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ ঘাটে এসে মালামাল ওঠানামা করে। যে কারণে ওই ঘাটতি বাজারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। দুঃখ জনক ঘাটটি দীর্ঘদিন বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। নির্বাচন আসন্ন। প্রতিদিনই প্রার্থীরা আসছেন, ভোট চাইছেন। প্রার্থীদের কাছে প্রত্যাশা, যারা নির্বাচিত হবেন, তারা যেন এই গুরুত্বপূর্ন ঘাটটিসহ নদী-ভাঙনের কবলে যে সকল গুরুত্বপূর্ন রাস্তাগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা সংস্কারের উদ্যোগ নেবেন। দৌলতপুর মধ্যডাঙ্গা হতে আসা ক্রেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, দৌলতপুর বাজার এতদাঞ্চলের পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী বাজার। বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক অনুষ্ঠানের কেনাকাটা করতে এই অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে এই বাজারে কেনাকাটা করতে আসে। দুঃখ জনক বিষয়, এতো বড় বাজারে পয়নিষ্কাসনের (বাথরুম) ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। এই বাজারের নির্বাচন আসন্ন। যেহেতু আমার এই এলাকায় বাড়ী। বাজারে নিয়মিত বাজার করতে আসি। আসন্ন নির্বাচনে যার জয়লাভ করে কেবিনেটে যাবেন, তাদের প্রতি প্রত্যাশা থাকবে উপযুক্ত স্থান দেখে পয়নিষ্কাসনের (বাথরুমের) ব্যবস্থা করার। আসন্ন দৌলতপুর বাজার বণিক সমিতির নির্বাচনে সহ-সভাপতি প্রার্থী মো. আশিকুর রহমান (শুভ) জানান, আমার পিতা আফছার আলী মোড়ল ব্যবসায়ীদের সার্বিক কল্যানে ও বাজারের উন্নয়নে দীর্ঘ বছর ধরে সুনামের সাথে সভাপতির হিসাবে দায়িত্বপালন করেছেন। আমি তার যোগ্য সন্তান হিসাবে ওই একই লক্ষ্য ও উদ্দেশে নিয়ে ব্যবসায়ীদের পাশে থেকে ও বাজারের সার্বিক উন্নয়ণে নিরলসভাবে কাজ করার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহন করছি। ভোটারদের কাছে যাচ্ছি, তাদের কাছে দোয়া ও সমর্থন চাইছি। আমি ব্যবসায়ীদের সুখে-দুঃখে পাশে থেকে কাজ করা চেষ্টা করেছি এবং ভবিষ্যৎতেও তাদের পাশে থেকে কাজ করবো ইনশাল্লাহ। আশাকরি ব্যবসায়ীরা আমাকে মূল্যায়ন করবেন। তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করবেন।
আসন্ন দৌলতপুর বাজার বণিক সমিতির নির্বাচনে সাঃ সম্পাদক প্রার্থী ও সাবেক সাঃ সম্পাদক নান্নু মোড়ল জানান, বিগত নির্বাচনে ব্যবসায়ীরা ভোটার মাধ্যমে আমাকে নির্বাচিত করেছিলেন। তাদের প্রত্যাশা পূরণে প্রতিশ্রুতি অনুসারে ব্যবসায়ী ও বাজারের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করার চেষ্টা করছি। আমি বিশ^াস করি বাজারের অসম্পূর্ন উন্নয়নের বাস্তবায়ণ ও ব্যবসায়ীদের পক্ষে কাজ করার জন্য তারা আমাকে পুনরায় তাদের সেবা করার সুযোগ দিবেন। আশাকরি ব্যবসায়ীরা আমাকে মূল্যায়ন করবেন। তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করবেন। আসন্ন দৌলতপুর বাজার বণিক সমিতির নির্বাচনে সহ- সাঃ সম্পাদক প্রার্থী মো. পলাশ শেখ জানান, এই বাজারে সাথে আমার আত্বার সর্ম্পক। সেই সুবাদে ব্যবসায়ীদের সাথে সুসর্ম্পক গড়ে উঠেছে। ব্যবসায়ী ও বাজারের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করা উদ্দেশে নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছি। ব্যবসায়ীদের সুখে-দুঃখে পাশে থেকে কাজ করার চেষ্টা করেছি এবং ভবিষ্যৎতেও কাজ করবো। আশাকরি ব্যবসায়ীরা আমাকে সমর্থন করবেন।
দৌলতপুর থানা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও দৌলতপুর বাজার বণিক সমিতির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান শেখ মুশার্রফ হোসেন জানান, দৌলতপুর বাজার বণিক সমিতির নির্বাচন আসন্ন। একটি অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। আশাকরি সকলের সহযোগীতা পেলে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেবে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। উল্লেখ্য, আসন্ন দৌলতপুর বাজার বণিক সমিতির নির্বাচনে ১০ টি পদের বিপরীতে ভোটের মাধ্যমে ১৮ জন প্রার্থী নির্বাচিত হবেন, যার মধ্যে সভাপতি ১ জন, সহ-সভপতি পদে ২ জন, সাঃ সম্পাদক পদে ১ জন, সহ-সাঃ সম্পাদক পদে ২ জন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ১ জন, কোষাধ্যক্ষ পদে ১ জন, দপ্তর সম্পাদক পদে ১ জন, প্রচার সম্পাদক পদে ১ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১ জন ও কার্যনির্বাহী সদস্য পদে ৭ জন। ভোটার সংখ্যা ২৫৬৬। আরো উল্লেখ্য, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও এডহক কমিটির আহ্বায়কসহ ২১জন সদস্য নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button