স্থানীয় সংবাদ

যশোরে ফেসবুকে পরিচয় : অস্টেলিয়ায় চাকরীর প্রলোভন দিয়ে অর্থ আত্মসাত : মামলা

যশোর ব্যুরো ঃ অনলাইন প্লাটফরম ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে এক প্রতারক বিশ^াস অর্জনের কৌশল নিয়ে এক যুবকের কাছ থেকে অস্টেলিয়ায় ভাল বেতনে পাঠানোর কথা বলে বিভিন্ন বিকাশের মাধ্যমে সাড়ে ২৩ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণার করেছে। এঘটনায় কোতয়ালি থানায় রোববার ২ ফেব্রুয়ারী বিকালে ছেলে বাপসহ তিনজনের নাম এবং অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলায় আসামীরা হচ্ছে, মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বকচর ৭নং ওয়ার্ডের তোফাজ্জেল বেপারীর ছেলে নবীন হোসেন ওরফে সাগর,সহোদর নাহিদ হোসেন ও তাদের পিতা তোফাজ্জেল বেপারীসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬জন। মামলাটি করেন, নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া চর ঝামারঘোপ এলাকার বর্তমানে বেজপাড়া মেইন রোড, আকাশ আহমেদ এর বাড়ির ভাড়াটিয়া ফাতেমা গার্ডেন এর মৃত গোলাম মওলার ছেলে নয়ন মোল্যা।
মামলায় বাদি উল্লেখ করেন,গত ২৪ সালের ১৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১১টায় বাদির ভাড়া বাসা ফাতেমা গার্ডেন অবস্থানকালে প্রতারক নবীন হোসেন ওরফে সাগরের সাথে অনলাইন প্লাটফরম ফেসবুকে বাদির পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে তার সাথে বাড়ির ফেসবুক, মেসেঞ্জারসহ ওয়াটসঅ্যাপ, ইম্যুতে এবং সাগরের মোবাইল নাম্বারে কথাবার্তা হতো। সাগর বিশ^াসের অর্জনের জন্য তার একটি এনআইডি এবং পাসপোর্ট ছবিও বাদিকে দেয়। যার বাদির সাথে সংরক্ষিত রয়েছে। কয়েকদিন কথাবার্তার পর বাদি তার ফেসবুকের পোষ্ট এবং আপলোডকৃত ভিডিও পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারেন প্রতারক সাগর বিভিন্ন দেশে লোক পাঠায়। উক্ত ভিডিও দেখে বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রলুব্ধ হয়ে সাগরের ব্যবহৃত ইম্যুতে যোগাযোগ করেন। যোগাযোগের এক পর্যায়ে সাগর বাদিকে জানায় তার নিজস্ব কোম্পানী অস্টেলিয়াতে ভালো চাকুরী দেওয়া যাবে। এবং সেখানে প্রতিমাসে ৩লাখ টাকা বেতন হবে। বাদি তার কথায় প্রলুব্ধ হয়ে গত বছর ২৪ সালের ২৪ নভেম্বর দুপুর পৌনে ২ টার সময় সাগরের দেওয়া ইসলামী ব্যাংকের একাউন্ট নাম্বারে ১লাখ ১৫ হাজার টাকা পাঠায়। পরবর্তীতে একই একাউন্ট নাম্বারে ১লাখ ১৬ হাজার ৯শ’ টাকা এবং ২০ হাজার টাকা দেয়। পরবর্তীতে প্রতারক ৩টি মোবাইল নাম্বারে বাদির সাথে যোগাযোগ করলে তার দেওয়া ৩২ বিকাশ নাম্বারে পর্যায়ক্রমে ২৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা দেয়। উক্ত টাকা পাওয়ার পর প্রতারক বাদিকে ভিসা প্রসেসিং করার জন্য বায়োমেট্রিক,ফিঙ্গার,মেডিকেল,পুলিশ ক্লিয়ারেন্স,ভিসা ও বিমান টিকেটসহ যাবতীয় কাগজপত্র দেন। পরবর্তীতে বাদির অস্টেলিয়ার যাওয়ার ফ্লাইট গত বছরের ১০ ডিসেম্বর রাত ১টাক ২০ মিনিটে উল্লেখ পূর্বক একটি ই-টিকেট দেন। বাদি উক্ত কাগজপত্রসহ তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের সাথে হযরত শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমান বন্দর ঢাকায় প্রবেশ করে ইমিগ্রেশনে বাদির যাবতীয় কাগজপত্র দিয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশ বাদির কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে বাদিকে জানায়,তার সকল কাগজপত্র ভূয়া। উক্ত বিষয় জানার পর বাদি সেখানে কান্নাকাটি করতে থাকেন এবং অজ্ঞান হয়ে পড়েন। বিষয়টি বাদির পরিবারের লোকজন জানারপর বাদিকে বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে শেষে বাড়িতে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে বাদি সুস্থ্য হয়ে প্রতারকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে প্রতাকের মোবাইল নাম্বারগুলো বন্ধ পাই। বাদির মামলায় উল্লেখিত নম্বারধারী ব্যক্তি বাদির সাথে বিগত ২০২৪ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোবাইল ফোন তথা ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে প্রতারণা করে বিভিন্ন সময় বাদির ব্যবহৃত বিকাশ নম্বারসমূহ ব্যবহার করে উল্লেখিত পরিমানের টাকা নিয়ে ভূয়া কাগজপত্র দিয়ে প্রতারণা মূলক বিশ^াস ভঙ্গ করে অর্থ আত্মসাত করেছে। বাদির বিষয়টি স্থানীয় লোকজনকে জানিয়ে থানায় এসে মামলা করেন। পুলিশ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রতারকের সন্ধান করতে পারেনি।#

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button