রামপালে স্বামী-স্ত্রী মিলে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাত

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ও মাঠকর্মীর নামে দুদকের মামলা
বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের রামপালে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে কর্মরত স্বামী-স্ত্রী যৌথভাবে যোগসাজস করে সাধারণ গ্রাহকের প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাত করেছে। এ অভিযোগের তদন্তশেষে সত্যতা পেয়ে দুদকের বাগেরহাট জেলা কার্য্যলয়ের উপ-সহকারী পরিচালক সমীরন মন্ডল বাদী হয়ে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক রামপাল শাখা ব্যাবস্থাপক হামিমা সুলতানা ও তার স্বামী মাঠকর্মী খান নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার মামলা দায়ের করেন। আসামীদের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৩৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮০২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। অভিযুক্ত শাখা ব্যাবস্থাপক হামিমা সুলতানা ও মাঠকর্মীর খান নুরুল আমিন স্বামী ও স্ত্রী। এরা রামপাল উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
দুর্নীতি দমন কমিশন বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইদুর রহমান মামলার বরাত দিয়ে জানান, আসামীরা সদস্য বর্হিভূত ঋণ প্রদান করে টাকা আত্মসাৎ, ঋণ প্রদানকালে সদস্যদের সম্পূর্ণ টাকা না দিয়ে টাকা হস্ত মজুদ, কিস্তি থেকে টাকা নিজের কাছে রেখে আত্মসাৎ করে। হামিমা সুলতানা শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে এবং তার স্বামী খান নুরুল আমীন মাঠ সহকারী হিসেবে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, রামপাল শাখায় দায়িত্ব পালন করেন। হামিমা সুলতানা ও তার স্বামী খান নুরুল আমিন যোগ সাজশে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে ঋণ দেওয়া বা ঢেউ টিন দেয়ার কথা বলে জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয় পত্র এর ছায়ালিপি সংগ্রহ করে সমিতির সদস্য না এমন ব্যক্তিদের নামে ভুয়া ঋণ সৃজন করে টাকা হস্ত মজুদ করে। হামিমা সুলতানা একক ভাবে ৬৮লাখ ৬৪ হাজার ৪৪৫ টাকা আত্মসাৎ করে। খান নুরুল আমিন, মাঠ সহকারীর দায়িত্ব পালনকালে ঋণ বিতরণের সময় সদস্যকে স্বাক্ষর করিয়ে সদস্যকে আংশিক অর্থ দিয়ে বাকী টাকা তিনি আত্মসাত করতেন। হামিমা সুলতানা শাখা ব্যবস্থাপক থাকাকালীন তিনি এবং তার স্বামী খান নুরুল আমিন এসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন। নুরুল আমিন, সাবেক মাঠ সহকারী, রামপাল, বাগেরহাট মোট ২৩ টি সমিতি থেকে ও ৫ জন জনের সঞ্চয়ী হিসাবে গড়মিলসহ মোট ৩৯৪ জন সদস্যের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সদস্যের জমাকৃত সঞ্চয় হতে ১ লাখ ২ হাজার ৪৬৪ টাকা, ঋণের কিস্তি থেকে ৪০ লাখ ৩৭ হাজার ২১৩ টাকা, ভুয়া ঋণ ৬৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা, ঋণ বিতরণকালীণ হস্ত মজুদ ৬৩ লাখ ৪৭ হাজার ৬৮০ টাকাসহ মোট ১ কোটি ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৭ টাকা আত্মসাৎ করেন। এর বাইরে রামপাল উপজেলার ৪ টি ইউনিয়ন থেকে ভূয়া ঋণ দেখিয়ে মোট ৬৮ লাখ ৬ হাজার ৪৪৫ টাকা আত্মসাৎ করেন। আসামী হামিমা সুলতানা ও তার স্বামী আসামী খান নুরুল আমিন পরষ্পর যোগসাজশে মোট ২ কোটি ৩৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮০২ টাকা আত্মসাত করেন। তারা আত্মসাত সংশ্লিষ্ট সকল রেকর্ডপত্র বিনষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং অধিকাংশ রেকর্ডপত্র বিনষ্ট করে ফেলেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।