রমযানের দাহনে সব পাপ-পংকিলতাকে ভস্মীভূত করে পবিত্র দেহ, মন ও সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে

# শোভনায় জামায়াতে ইসলামীর ইফতার মাহফিলে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার #
স্টাফ রিপোর্টার ঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, পবিত্র কুরআন নাজিলের মাস মাহে রমযানের পুরোপুরি হক আদায়ে সবাইকে সকল প্রকার প্রস্তুতি নিতে হবে। তাকওয়া আল্লাহ ভীতি অর্জনের মাধ্যমে রমযানকে কাজে লাগাতে হবে। বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে রমযানে ঈমানকে মজবুত করতে হবে। হালাল উপার্জনের মাধ্যমে নেকির পাল্লা ভারী করার উত্তম সময় হচ্ছে রমযান। রমযানকে সামনে রেখে অসৎ উপায়ে মজুদদারী করা হারাম। রোযাদাররা যাতে জুলুমের শিকার না হন সে জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। গরিব মিসকিনকে বেশী বেশী দান খয়রাত করতে হবে। একজন রোযাদারকে ইফতার করালে ওই রোযাদারের পুরো সওয়াব লাভ করা যাবে, তবে তার রোযার সওয়াব কম হবে না। রমযানে বেশী বেশী ইবাদত বন্দেগির বদৌলতে বাকি ১১ মাস যাতে আমরা গুনাহমুক্ত জীবন যাপন করতে পারি সে দিকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তিনি পবিত্র মাহে রমযানের শিক্ষাকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে আত্মগঠন, তাক্বওয়া অর্জন এবং ন্যায়-ইনসাফ ভিত্তিক ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। সোমবার (১০ মার্চ) খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে শোভনা দারুসসুন্নাত দাখিল মাদরাসা প্রাঙ্গনে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন। শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মোসলেম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আবুল বাশার খানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, এডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা, ডুমুরিয়া উপজেলা আমীর মাওলানা মোখতার হোসাইন, নায়েবে আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, সেক্রেটারি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জামায়াত নেতা ওয়াহিদুল ইসলাম খান, ইসলামী ছাত্র শিবিরের ডুমুরিয়া উপজেলা সভাপতি সামিদুল ইসলাম, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি শরিফুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা মাহমুদুল হাসান, জাহাঙ্গীর হোসেন, যুব বিভাগের বিএম আলমগীর প্রমুখ।
সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, অতি মুনাফার লোভে পণ্য সামগ্রী মজুদদারী করে জাতিকে কখনো কষ্ট দেয়া যাবেনা। এটা নবীর (সা.) শিক্ষা। আমরা অসাধু মন্দেও কাতারে থাকতে চাইনা। জান্নাতে থাকতে চাই, শয়তানের সাথে থাকতে চাইনা। আসুন ভালো হবার মু’ত্তাকি হবার মাস রমযান এসেছে। নৈতিকভাবে যা হালাল তা অর্জনের চেষ্টা করতে হবে। এই মাসে আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদ্ব্যবহার করতে হবে। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, তোমরা মু’ত্তাকি হয়ে যাও। সিয়াম সাধনার মাধ্যমে অন্তরিকতা জাগ্রত করতে হবে। শয়তানের অসওয়াসায় সকল প্রকার গুনাহর কাজ গীবত পরনিন্দা সবই পরিত্যাগ করতে হবে।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, রমজান মাস সহানুভূতি ও সহ মর্মিতার মাস। রাসূলে পাক (সা.) একে আখ্যায়িত করেছেন শাহরুল মাওয়া ছাতবা সমবেদনা ও সহমর্মিতার মাস বলে। গরিব-দুঃখী, দুস্থ অনাথ কাঙ্গালদের ব্যথা-কষ্ট দূও করার জন্য এ মাসে আরও অধিক যতœবান হওয়া উচিত। কেবল ধনীরাই দান করবে তা নয়। তারা তাদের মতো করবে, আমরাও পারি আমাদেও মতো করতে। তিনি বলেন, এ মাস তো কৃচ্ছ্রতা সাধনের। সংযম সাধনার। রোযার মূল উদ্দেশ্য কামভাব ও প্রবৃত্তি দমন। কিন্তু অতিরিক্ত আহারের দ্বারা তা সফল হলো কোথায়? আজকে আমাদের প্রার্থনা, আমরা যেন রোযার তাৎপর্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হই এবং রমযানের দাহনে সব পাপ-পংকিলতাকে ভস্মীভূত করে পবিত্র দেহ, মন ও সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারি।
সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, এক শ্রেণীর অসৎ অতি লোভী ব্যবসায়ী, কিছু দায়িত্বহীন উচ্ছৃংখল বখাটে যুবক রমযানুল কারিমের পবিত্রতা বিনষ্টের জন্য যেন ইচ্ছাকৃতভাবেইতৎপর হয়। এ ধরনের হীনমানসিকতা সম্পন্ন ব্যবসায়ীদের কথা অবশ্য আলাদা, লোভ তাদেও পশুর থেকেও অধম করেছে। শকুন যেমন মরা দেখলে খুশি হয় তেমনি এরা মানুষের দুর্দশা দেখলে আনন্দিত হয়। একে মনে কওে মুনাফা লোটার, স্ফীত হয়ে ওঠার একটা মোক্ষম মওকা। বানে, বন্যায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে অগণিত মানুষ যখন হাহাকার কওে তখন তারামাল আটকে রেখে মওজুদারির মাধ্যমে বাজারে কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করার ধান্ধায় থাকে। জিনিসপত্রের দাম দ্বিগুণ তিন গুণ বাড়িয়ে রাতারাতি বড়লোক হওয়ার প্রতিযোগিতায় উঠে-পড়ে লেগে যায়। রমযানকেও এরা মোক্ষম সুযোগ মনে কওে মানুষের রক্ত চোষার ঘৃণ্য তৎপরতায় লিপ্ত হয়। এদের ই কার সাজিতে নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম হু হু কওে চড়ে যায়। চলে যায় সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। আত্মশুদ্ধি বা কৃচ্ছ্রতানয়, লোভ-লালসাই বর্ধিত হয় এদের।