স্থানীয় সংবাদ

দুই যুগ বছর ধরে ১ টাকার ইফতার বিক্রি করেন চা দোকানি ইকবাল

# সামাজিক দায়বদ্ধতা ও সওয়াবের আশায় #

কামাল মোস্তফা ঃ ২৪ বছর ধরে ১ টাকায় ইফতার সামগ্রী বিক্রি করেন খুলনার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশার চা দোকানি ইকবাল। বাজারে সব কিছুর যখন চড়া মূল্যে ক্রেতারা যখন দিশাহারা, তখন এক টাকায় ইফতারসামগ্রী বিক্রি করে রীতিমতো সাড়া ফেলেছেন তিনি। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রমজান মাসে দুপুর হলেই ব্যস্ততা বেড়ে যায় ইকবালের “ ইকবাল হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট”র। সারা বছর চা বিক্রি করলেও রমজান এলেই এক টাকা করে ইফতারসামগ্রী বিক্রি করেন ক্রেতাদের কাছে। বেগুনি, আলুর চপ, পেঁয়াজু, মরিচের চপ যা-ই কিনবেন, প্রতিটির মূল্য নেওয়া হচ্ছে এক টাকা করে। রয়েছে ছোলাও। তবে সব কিছুই এক টাকা করে বিক্রি হলেও শুধু ভাজা ছোলা বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। ১২০ টাকা করে ছোলার কেজি বিক্রি করছেন ইকবাল। জানতে চাইলে ইকবাল বলেন, শুধু সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং সওয়াবের নিয়তে এই কাজটি করি। তবে প্রথম বেশ কয়েক বছর তিনি একাই এই কাজটি করলেও শুরুর তিন থেকে চার বছর পর তাঁর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন স্থানীয় কিছু স্বেচ্ছাসেবী। নিজেরাই সেখানে শ্রম দিচ্ছেন। ক্রেতাসাধারণের মধ্যে ইফতারসামগ্রী নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বিক্রি করছেন। মূল উদ্যোক্তা ইকবাল আরো বলেন, প্রায় ২৪ বছর ধরে তিনি সেখানে চা দোকান দিয়ে আসছেন। কিন্তু রমজানে দিনের বেলায় হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় তিনি এক মাস ইফতারি তৈরি করে বিক্রির উদ্যোগ নেন। এবারের রমজানের প্রথম দিন থেকেই ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। প্রতিদিন জোহরের নামাজের পরই ইফতারি তৈরি শুরু করেন ইকবালসহ তাঁর সহকর্মীরা। বিকেল ৪টা থেকেই শুরু হয় বিক্রি। আশপাশের ক্রেতাসাধারণ কিনে নিচ্ছেন এসব ইফতারসামগ্রী। ইকবালকে ইফতার বিক্রিতে সহযোগিতা করছেন মো. পর্বত। তিনি জানালেন, প্রতিদিন ৭-৮ হাজার পিচ বেগুনি পেয়াজু তৈরি করা হয় এবং প্রতিদিনের ইফতার বিক্রিতে এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকার মতো ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এগুলো ইকবালসহ তাঁরা সবাই দিয়ে থাকেন। ফলে যাঁরা চড়া দামের ইফতারি কিনতে সামর্থ্যবান নন তাঁরাও সুযোগ পাচ্ছেন ইফতার কেনার। কেননা অন্য দোকান থেকে প্রতিদিন এক পরিবারের ইফতারি কিনতে দেড় শ টাকার ওপরে খরচ হয়। সেখানে ইকবালের দোকান থেকে মাত্র ৩০ টাকার মধ্যেই মিলছে ইফতারি। ইকবালের দোকানে ইফতার কিনতে এসেছেন রিকসা চালক আমিনুল। তিনি বলেন, আমার মত নি¤œ আয়ের মানুষের পক্ষে ১৫০-২০০ টাকার ইফতার কেনা সম্ভব হয়না। প্রতিবছরই এই দোকান থেকে ৩০-৪০ টাকার ইফতার কিনি। তাতে পরিবারের সবার জন্য হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button