দিঘলিয়ার দেড় লাখ মানুষের বিড়ম্বনা নদীগুলোর খেয়াঘাট

সৈয়দ জাহিদুজ্জামান দিঘলিয়া খুলনা থেকে : দিঘলিয়া উপজেলার দেড় লাখ মানুষের যোগাযোগ ক্ষেত্রে বিড়ম্বনা উপজেলাকে খুলনা জেলা শহর থেকে বিভক্তি সৃষ্টিকারী ৩টি নদী ভৈরব, আতাই ও মজুদখালী নদীর সরকারি ডাকের খেয়াঘাট। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দিঘলিয়া উপজেলার ২ টি ইউনিয়ন খুলনা শহর সংলগ্ন উত্তর কোল ঘেসে অবস্থিত। বাকি ৪ টা ইউনিয়ন ভৈরব, আতাই ও মজুদখালী নদী দ্বারা খন্ডিত ও জেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন। এ নদ-নদীতে রয়েছে ছোট বড় ১৮ টি খেয়াঘাট। এ ঘাটগুলোর মধ্যে কিছু ঘাট ইউনিয়ন পরিষদ, কিছু খেয়াঘাট উপজেলা পরিষদ এবং বাকী ঘাটগুলো জেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিবছর টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারাদারদের ইজারা প্রদান করে। খুলনা জেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রিত খেয়াঘাটগুলো হলো দিঘলিয়া চন্দনীমহল বাজার খেয়াঘাট, বার্ম্মাশেল খেয়াঘাট, দেয়াড়া-দৌলতপুর বাজার খেয়াঘাট, নগরঘাট-রেলিগেট খেয়াঘাট, দেয়াড়া-দৌলতপুর স্টিমারঘাট খেয়াঘাট, দিঘলিয়া সন্যাসী খেয়াঘাট ও বারাকপুর বাজার খেয়াঘাট। এ ঘাটগুলো শুরু থেকে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণ করলেও পরবর্তীতে ঘাটগুলো পুরাপুরি জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এঘাটগুলোর মধ্যে কয়েকটা ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কেসিসি কর্তৃপক্ষের সাথে ইজারাদান ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ঠান্ডা লড়াই অব্যাহত ছিল।
ভুক্তভোগী দিঘলিয়াবাসী আরো জানান, বর্তমানে ঠিকাদারদের নানা অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতার কারণে এবং ঘাটগুলোর নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সঠিক ও সুষ্ঠু তদারকির অভাবে এ সকল খেয়াঘাট এ দ্বীপবাসীর যোগাযোগের ক্ষেত্রে চরম সংকটে এনে দাঁড় করিয়েছে। যা এ জনপদের মানুষকে যোগাযোগ ক্ষেত্রে বিড়ম্বনা, জুলুম ও সেবার পরবর্তে জুলুমের দ্বারে এনে পৌঁছিয়েছে। উল্লেখ্য দেয়াড়া-দৌলতপুর বাজার খেয়াঘাটে পারাপার যাত্রীদের ( স্কুল-কলেজ ছাত্র-ছাত্রী, পুরুষ, মহিলা, শিশু, অসুস্থ্য রুগী) একটা বাজার গলির মাঝ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। অনেক সময় বাজারের চীপা গলির দোকানের কর্মচারীদের দ্বারা মানসিক নিযাতনের শিকার হতে হয়। মালামালসহ লোকজনের একটা চিপা গলি দিয়ে খুলনা জেলাসহ দেশ বিদেশে ল্যাগেজসহ মালামাল নিয়ে যাতায়াত দুর্বীষহ ও দুর্ভোগ চরম। অনেক সময় এ জনপদের অধিকার হরণের সামিল। এদিকে খুলনার অন্যান্য উপজেলায় সহজ যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রতি উপজেলায় একাদিক ব্রীজ নির্মাণ হলেও দিঘলিয়ায় ব্রীজ নির্মাণ কাজ কয়েক বছর আগে শুরু হলেও কাজ হয়েছে মাত্র ১৩ শতাংশ। ব্রীজ পার হয়ে শহরে গমন আশাহতের শামিল। এদিকে ক্রিসেন্ট-পিপলস জুট মিলের মাঝের রাস্তাটা বন্ধ করে রাখা হয়েছে খোঁড়া অজুহাতে। যা দিঘলিয়াবাসীকে জিম্মীর শামিল। খেয়াঘাটে ঠিকাদারের একাধিক ট্রলার থাকার শর্ত থাকলেও কোনো খেয়াঘাটে ঠিকাদারের খেয়া নেই। শুধু শুধুই ঘাটে বসে টোল আদায় যা চাঁদাবাজির শামিল। ছাত্র-ছাত্রী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি, হাতে বহনযোগ্য জিনিসপত্র টোলের আওতামুক্ত থাকলেও ঠিকাদার ও ইজারাদাররা সে শর্ত মানে না। ছত্র-ছাত্রীদের ও সরকারি কর্মকর্তাদের টোল আদায় করার জন্য কোনো কোনো ঘাটে ইজারাদাররা নৌকার মাঝিদের দিয়ে টোল আদায় করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেকঘাটে মালামাল ও যানবাহন নিয়ে পার হতে পারে না। দৌলতপুর বাজার খেয়াঘাটে নদীতে ভাটার সময় বিড়ম্বনার সীমা থাকে না। তার ওপর ঘাটের দুই পারের জেটি ভাঙ্গা ও ওঠা নামার জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। কোনো প্রকার যানবাহন নিয়ে পারাপারের অযোগ্য এ খেয়াঘাটটির পশ্চিম পার যা বাজারের মাঝে অবস্থান সেটা পার্শ্ববর্তী লঞ্চঘাটে স্থানান্তর এ জনপদের মানুষের নৈতিক সময়ের দাবী যা এ জনপদের মানুষ সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর ও গণ আবেদনের মাধ্যমে প্রমাণ দিয়েছে। এলাকাবাসী মানুষের নদী পারাপার ক্ষেত্রে জিম্মীদশা থেকে পরিত্রাণের ব্যপারে স্থানীয় প্রশাসন, খুলনা জেলা প্রশাসনসহ উর্ধতন সকল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।