স্থানীয় সংবাদ

গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে খুবিতে সমাবেশ

স্টাফ রিপোর্টার ঃ ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বর্বর আগ্রাসন ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ এবং গাজার জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে এ সমাবেশ শুরু হয়।সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের গাজায় প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ হত্যার শিকার হচ্ছে। তাদের বর্বরতা থেকে নারী-শিশু কেউ রেহাই পাচ্ছে না। অনবরত বোমার আঘাতের মসজিদ-মাদরাসা, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ বিশ্ব মানবতা তার দিকে কোনো নজর দিচ্ছে না। তাদের নীরব ভূমিকার কারণে প্রতিনিয়ত হামলার মাত্রা তীব্র হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দখলদার ইসরায়েলি বর্বরতা রুখে দিতে অখ- ফিলিস্তিনের পক্ষে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গাজা, পশ্চিম তীরসহ ফিলিস্তিনের সব অঞ্চলের মানুষের স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তা দিতে হবে। স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় মুসলিম বিশ্বকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান। তিনি বলেন, বছরের পর বছর ইসরায়েলের হামলার শিকার হচ্ছেন ফিলিস্তিনের নিরীহ মানুষরা। অথচ বিশ্ব মোড়ল তথা পশ্চিমা বিশ্ব ইসরায়েলের এ বর্বরতাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। যেসব শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াচ্ছে কিংবা সমর্থন দিচ্ছে, তাদের ভিসা বাতিল করছে। এ অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিশ্ব সম্প্রদায়কে ফিলিস্তিনের নির্যাতিত-নিপীড়িত জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়ে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী। তিনি বলেন, মুমিনরা কখনও আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ফিলিস্তিনের জনগণকে অধিকার ও স্বাভাবিক জীবনযাপন ফিরিয়ে দেবেন। তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে যার যার অবস্থান থেকে দাঁড়াতে হবে। এতে বিশ্বে একটা জনমত তৈরি হবে। আরব দেশগুলো বসে থাকলেও আমরা এক্ষেত্রে বসে থাকবো না। ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকা মানবতার দায়িত্ব বলেও অভিহিত করেন তিনি। এ সময় তিনি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সামর্থ্য অনুযায়ী ফিলিস্তিনি অ্যাম্বাসিতে ডোনেশন দেওয়ার আহ্বান জানান। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে আরও বক্তব্য রাখেন ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর শেখ মাহমুদুল হাসান, খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ হলের প্রভোস্ট প্রফেসর শরিফ মোহাম্মদ খান, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত এবং সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালক হাসান মাহমুদ। শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের ’২১ ব্যাচের শানিল সরদার, ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের তামিম। পরে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ হাদী চত্বর থেকে র‌্যালিসহকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের পক্ষে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। পরে ফিলিস্তিনের গাজাসহ বিশ্বব্যাপী নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন শিক্ষার্থী তমিজ। প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বর্বর আগ্রাসন ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ এবং গাজার জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এ কর্মসূচিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সংহতি প্রকাশ করে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব ডিসিপ্লিনে আজ স্পেশাল টার্মের পরীক্ষা ছিল, তা স্থগিত করা হয়।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button