মোল্লাহাটের সাধারন জনগণ পেয়েছেন একজন মানবাধিক ইউএনও

শরিফুল ইসলাম দিদার মোল্লাহাট থেকে : মানবসেবা কোন একদিনের কাজ নয়, এটি একটি নিরবিচ্ছিন্ন দায়িত্ববোধ, যা সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যায়। সেই দায়িত্ববোধ থেকে নিরলসভাবে গরীব অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন মোল্লাহাটের গরীবের ইউএনও খেতাব পাওয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার হরেকৃষ্ণ অধিকারী। ছয়মাস আগে বাগেরহাটের মোল্লাহাটে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন হরেকৃষ্ণ অধিকারী, এর আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে সফলতা সাথে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে পাল্টে যাচ্ছে অনেক দৃশ্যপট। অন্তর্র্বতী সরকারের উন্নয়নের ধারাকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। গত ছয়মাসে সার্বক্ষণিক সেবামূলক কাজ করে মানবিক ও গরীবের ইউএনও হিসেবে উপজেলাবাসীর কাছে পরিচিতি লাভ করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে প্রবেশ করতে লাগে না কোন অনুমতি। ইচ্ছা করলে যে কেউ তার অফিসে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করতে পারেন। তার কাছে এসে সেবা অথবা সাহায্য চেয়ে ফিরে গিয়েছে এমন নজির নেই বললেই চলে। তিনি নিজের বেতনের টাকা দিয়ে গরীবে অসহায় মানুষের জন্য খাদ্য-বস্ত্র বিতরণী কার্যক্রম পরিচালনা করেন যা অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর পাশাপাশি সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। রাতের আঁধারে গরীব অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের খোঁজ খবর নেয়া সহ সাধ্যমত সাহায্যের হাত বাড়িয় দেয়া তার এক প্রকার নেশা। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তিনি সকল ধর্মের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন। মোল্লাহাটের ইতিহাসে তিনিই সর্বপ্রথম সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি চমৎকার ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন।
প্রণোদনার ক্ষেত্রে মসজিদ মাদ্রাসা,এতিমখানা, গির্জা, মন্দির কোনটি বাদ পড়েনা। রমজানকে সামনে রেখে লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারদরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রেখেছেন। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে নকল বিড়ি সিগারেট, চিংড়িত অপদ্রব্য পুশ সহ মাদক বন্ধে নানামুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তিনি।
এছাড়া উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে থানা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন। উপজেলা পরিষদের মাসিক সভা, আইনশৃঙ্খলা মিটিং সহ সরকারি যাবতীয় অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পালন করতে দেখা গেছে। এলাকার অসহায় হতদরিদ্র মানুষের মাঝে স্বল্প মূল্যে টিসিবির পণ্য বিতরণ কার্যক্রম কোন ধরনের ঝামেলা বিহীন ভাবে চলছে। তার কার্যালয়ে কোন ধরনের অভিযোগ আসলে ঘটনা তদন্ত করে দসুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা গেছে।
এছাড়া তার ব্যক্তিগত প্রোজ্ঞায় ও ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগে শিক্ষা বিভাগের আমুল পরিবর্তন হয়েছে। মোল্লাহাটের ৩ টি স্কুল মডেল বিদ্যালয়ে রুপান্তরিত হয়েছে। স্কুল পড়–য়া শিক্ষার্থীদের ভেতরে সততার আভা জাগাতে তিনি প্রতিটি স্কুলে একটি “সততা স্টোর” নামে একটি স্টোর চালু করেছেন, এই স্টোরটিতে নেই কোন বিক্রেতা, আছে পন্য এবং পন্যের মূল্য পরিশোধ করার জন্য ক্যাশ বাক্স। ছেলে-মেয়েরা সেখান থেকে তাদের চাহিদা অনুযায়ী পন্য নিয়ে তার মুল্য ক্যাশ বাক্সে রেখে দেয়। তার উদ্দেশ্য বাচ্চাদের শুরুটা যদি ভালভাবে শুরু করা যায় তবে ই তার মধ্যে সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেম জাগ্রত হবে। চিকিৎসা বিভাগ নিয়ে ও তিনি নিরলসভাবে কাজ করছেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সহ ইউনিয়ন ব্যাপি প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে নানারকম চিকিৎসা উপকরণ বিতরণ করছেন, একজন মানুষ ছোট্ট খাটো যে কোন সমস্যা হলে সদরে আসতে চায় না, কাছাকাছি যে কোন ছোট খাটো ডাক্তারের কাছে যায়, যাকে আমরা হাতুড়ে ডাক্তার বলি। সেখানে গিয়ে অনেকেই মিস গাইডেড হয়, অনেক অর্থ ব্যয় হয়। অথচ আমাদের পাশেই সরকারী কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে, যেখানে গেলে বিনা খরচে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায়। অনেকেই এটার সাথে পরিচিত নয়। কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে প্রাথমিক চিকিৎসা উপকরণ গুলো থাকে না, চিকিৎসা উপকরণ না থাকায় অনেকেই কমিউনিটি ক্লিনিকের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত। এজন্য তিনি জনগণের দোরগোড়ায় চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে সকল কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসা উপকরণ হিসেবে রক্তচাপ মাপার যন্ত্র, ডায়বেটিক মাপার যন্ত্র, ওজন স্কেল, জ্বর মাপার থার্মোমিটার ও সেবা গ্রহণকারীর তথ্য লিপিবদ্ধ করার জন্য রেজিষ্ট্রার খাতা বিতরণ করেন। মোল্লাহাটকে পজেটিভ ব্রান্ডিং করতে তিনি সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন।