খুলনা ওয়াসার উপ-সহকারী প্রকৌশলী চিন্ময়ের বিরুদ্ধে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ

# গ্রাহকদের পানির লাইনের অর্থ অফিসের পরিবর্তে তার পকেটে
# বিধি বহির্ভূত অর্থ আদায় করলেও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ
# মিটার চুরির অভিযোগ থাকলেও কিছুই হয়নি
স্টাফ রিপোর্টার : পানির লাইন সংযোগ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে নগদ অর্থ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খুলনা ওয়াসার উপ-সহকারী প্রকৌশলী চিন্ময় মহলদারের বিরুদ্ধে। তবে পানির লাইন না পাওয়ায় খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর ২৭ মার্চ ৬ জন ভুক্তভোগী প্রতিকারের দাবিতে এ লিখিত অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগ করেও এখনও পর্যন্ত কোন সমাধানে আসেনি। লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, খুলনা মহানগরীর ১৮নং ওয়ার্ডের নবীনগর এলাকার মুহাম্মদীয়া জামে মসজিদের পশ্চিম দিকে চৌরাস্তার মোড়ের উত্তর দিকের গলির রাস্তায় ভুক্তভোগীদের বসবাস। ২০২৪ সালের ২৩ এপ্রিল ভুক্তভোগী আঃ লতিফ চিশতির নিকট থেকে ১৩ হাজার, এস এম কামরুজ্জামানের কাছ থেকে ১৪ হাজার, নজরুল ইসলামের কাছ থেকে ১৪ হাজার, আলম খানের কাছ থেকে ১৪ হাজার, মো. তৈয়বুর রহমানের কাছ থেকে ১৪ হাজার ও নূরজাহান বেগমের কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকা গ্রহণ করেছে। মোট ৮৩ হাজার টাকা উপ সহকারী প্রকৌশলী চিন্ময় মহলদার গ্রহণ করেছেন। এসব টাকা দেওয়ার পরেও এখনও পর্যন্ত তারা কেউ পানির লাইন পাইনি। এসকল ভুক্তভোগীরা দ্রুত পানির সংযোগ পেতে সু-ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।
এব্যাপারে ভুক্তভোগী আ. লতিফ চিশতি বলেন, ওয়াসার উপ সহকারী প্রকৌশলী চিন্ময় মহলদার ১৫ দিনের ভিতরে পানির লাইন দেওয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। কিন্তু ৯ মাসের মধ্যে এখনও পর্যন্ত আমরা পানির লাইন পাইনি। তার বিরুদ্ধে আমরা ৬ জন খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। আমাদের অতি জরুরি পানির লাইন প্রয়োজন। এস এম কামরুজ্জামান বলেন, পানির লাইন পাওয়ার জন্য আমরা আবেদন করেছি। আজ দেবে কাল দেবে এভাবে বলছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পানির লাইন দেয়নি। অভিযোগ স্বীকার করে ওয়াসার উপ-সহকারী প্রকৌশলী চিন্ময় মহলদার এ প্রতিবেদককে বলেন, অনেক সময় লাইন বসানোর পর গ্রাহক টাকা জমা দিতে গড়িমসি করে, অনেককে খুঁজে পাওয়া যায় না। এ কারনে তিনি গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাক নিয়েছেন। তবে তার পরিমাণ ৮৩ হাজার নয়, ৬৯ হাজার টাকা। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে এ টাকা তার কাছে থাকলেও তিনি তা অফিসে জমা দেননি বলেও স্বীকার করেছেন। বিধিবহির্ভূতভাবে তিনি এ অর্থ গ্রহণ করেছেন। তবে আগামী ৮-১০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকরা পানির লাইন পাবে এবং তাদের কাছ থেকে গ্রহণকৃত টাকার অতিরিক্ত তাদের ফেরত দেওয়া হবে।
এবিষয়ে ওয়াসার সচিব প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, গ্রাহকদের কাছ থেকে ওয়াসার কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নগদ টাকা গ্রহণের সুযোগ নেই। যদি কারও বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযোগ প্রমাণিত হয় তবে বিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগ রয়েছে, উল্লেখিত ৬জন গ্রাহকের বাইরেও প্রকৌশলী চিন্ময় আরও একাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে বিধি বহির্ভূতভাবে নগত অর্থ গ্রহণ করেছেন। আবার চাপের মুখে অনেকের অর্থ ফেরতও দিতে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে খুলনা ওয়াসার চরেরহাট আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে অকেজ মিটার চুরির সংগে সম্পৃক্ততারও অভিযোগ রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।