কয়রায় পতিত আ’লীগের দোসর ও নব্য বিএনপির নেতা পরিচয়ে মাছের ঘের দখলের পায়তারা

স্টাফ রিপোর্টার ঃ পতিত ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের নেতা কুখ্যাত আইয়ুব আলী সরদার বিএনপির প্রভাবশালী নেতা পরিচয় দিয়ে কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়নের বগা জোনে ব্যক্তিমালিকানাধীন ৭৮ বিঘার মাছের ঘের দখলের পায়তারা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন কয়রা উপজেলার পূর্ববগা গ্রামের মাওলানা গোলাম রহমান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাগালী ইউনিয়নের বগা জোনে ব্যক্তিমালিকানাধীন ৭৮ বিঘার একটি মাছের ঘের রয়েছে। যেটি ‘বগা তেঁতুলতলা খাল’ নামে পরিচিত। স্থানীয় জমির মালিকদের সাথে তিন বছরের চুক্তিতে লীজ নিয়ে উল্লেখিত মাছের ঘেরটি পরিচালনা করে আসছি। আমরা ৬ জন ব্যবসায়িক পার্টনার প্রতিবছর ডিড অনুযায়ি জমির মালিকদের প্রাপ্য পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে সুষ্ঠু সুন্দরভাবে ঘের পরিচালনা করে আসছি। গতকাল ৩০ চৈত্র তিন বছরের চুক্তি শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই জমির মালিকগণ আমাদের লেনদেনে সন্তুষ্ট হয়ে ফের আগামী তিন বছরের জন্য চুক্তি নবায়ণ করে। চুক্তি অনুযায়ি বাংলা ১৪৩২ সন থেকে ১৪৩৪ সন পর্যন্ত আমাদেরকে ঘের পরিচালনার দায়িত্ব প্রাদান করা হয়। কিন্তু চুক্তি পুনঃনবায়ণের কথা জানতে পেরে সদ্য বিএনপির বড় নেতা হয়ে ওঠা এলাকার বহু অপর্কমের নায়ক আইয়ুব আলী সরদার, আব্দুর রহিম মালি ও খানজাহান আলী ঘেরটি দখল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। এরা সবাই স্থানীয় আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পদ-পদবিতে আছেন। কুখ্যাত আইয়ুব আলী সরদার আওয়ামীলীগের কয়রা উপজেলার ৯ নং ওয়ার্ডের নেতা ছিলেন। সাবেক সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবুর অনুসারি থাকায় এলাকায় বহু অপকর্ম করেছেন। ঘের দখল, অপহরণ, চাঁদাবাজির ঘটনায় এলাকাবাসী অতিষ্ঠ ছিল। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত বাগালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী সামাদ গাজীর পক্ষে কাজ করেন। এছাড়া নিজেও বাগালী ইউনিয়নের মেম্বর পদে নির্বাচন করে ভোট কেটে জয়ী হন। ওই সময় আমাদের ঘেরটি দখল করার বহু চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ৫ আগষ্টের পর কিছুদিন পালিয়ে থেকে সম্প্রতি এলাকায় ফিরে এসে নিজেকে বিএনপির বড় নেতা পরিচয় দিয়ে অপকর্ম শুরু করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এই পতিত ফ্যাসিবাদের দোসর আইয়ুব আলী সরদার গং আমাদের মাছের ঘেরটি দখল করার জন্য নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যেই জমির মালিকদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু জমির মালিকদেরকে এই বলে হুমকি দিচ্ছে যে, ‘তোরা যদি জমির ডিড বাতিল করে আমাদের না দিস, তাহলে তোদেরকে ভারতে পাঠিয়ে দেব’। ফলে এধরণের হুমকি প্রদানের পর সংখ্যা লঘু জমির মালিকদের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে। সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে আমার ব্যবসায়িক অংশীদার মঞ্জুরুল স্থানীয় বগা গ্রামের আব্দুল হাকিমের চায়ের দোকানের সামনে যায়। এ সংবাদ পেয়ে আইয়ুব আলী সরদারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী সেখানে গিয়ে মহ্জুরুলকে বেধরক মারধোর করে আটকে রাখে এবং হিসাব নিকাশের খাতাপত্র কেড়ে নেয়। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ সেখানে গিয়ে মঞ্জুরুলকে উদ্ধার করলেও কোন মামলা নেয়নি। পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি থানায় লিখিত অভিযোগটি জিডি আকারে গ্রহণ করে। কিন্তু অদ্যাবধি জিডির কোন তদন্ত করেনি। যা অত্যান্ত দুঃখজনক। উল্লেখিত ঘটনার বিচার চেয়ে আমরা সহকারী পুলিশ সুপরি ডি সার্কেল বরাবরে লিখিত আবেদন করি। এছাড়া জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারের নিকটও আবেদন করেছি। ন্যায্য বিচার পাওয়ার আশায় পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদেরও বিষয়টি জানানো হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয়টি হলো কয়রা থানার ওসির কাছ থেকে আমরা কোন প্রকার সহযোগীতা পাচ্ছিনা।