স্থানীয় সংবাদ

দিঘলিয়ার সেনা সদস্য ও তার স্ত্রীকে কুপিয়ে আহতর ঘটনায় মামলা

দিঘলিয়া প্রতিনিধি ঃ দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নের হাজীগ্রাম নিবাসী মৃত নেছার উদ্দিন খানের পুত্র অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য সার্জেন্ট আনোয়ার হোসেন খানকে ধারালো রামদা দিয়ে কুপিয়ে মারাতœক রক্তাক্ত জখম ও তার স্ত্রী শাহনাজ আক্তার শারমিনকে শাবল দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত ঘটনায় দিঘলিয়া থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
এলাকাবাসী, ভিকটিম ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে আনোয়ার হোসেন খানকে ছোট ভাই আইয়ুব হোসেন খান তার পুত্র মোহ আরিফ খান ও মোঃ অন্তর খান তাদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে আনোয়ারের ছোট ভাই আইয়ুব হোসেন খান ও তার পুত্র আরিফ খান ও অন্তর খান জমিজমার ঘটনার জের ধরে তার স্ত্রী শাহনাজ আক্তার শারমিনের সাথে গোলমাল ও গালাগালি শুরু করে। আনোয়ার এ সময় আতাই নদীর ওপারে ঘেরে অবস্থান করছিলেন। তার স্ত্রী এ সময় কাউকে কিছু না বলে ছেলেকে নীয়ে নদীর পার হয়ে ঘেরে গিয়ে স্বামীকে জানায়। স্বামী আনোয়ার হোসেন খান বাড়ী ফিরে ঘটনার ব্যাপারে ছোট ভাই আইয়ুব হোসেন খানের নিকট শুনতে গেলে দুই ভাইয়ের মাঝে বাক যুদ্ধ শুরু হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে আইয়ুব হোসেন খান বড় ভাই আনোয়ার হোসেন খানের ওপর চড়াও হয় এবং হাতে থাকা রামদা দিয়ে মাথায়, হাতে ও পায়ে কোপ দিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় তার স্ত্রী শাহনাজ আক্তার শারমিন স্বামীকে রক্ষার্থে এগিয়ে আসলে তাকে আইয়ুব হোসেন খান, তার পুত্র আরিফ খান ও অন্তর খান মিলে শাবল দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। মারার সময় অপরাধী চক্র বলতে থাকে তোর আগের স্ত্রীকে সংসার করতে দেয়নি তোকেও দেওয়া হবেনা। তোকেও তাড়িয়ে ছাড়ব।
উল্লেখ্য শাহনাজ আক্তার শারমিন আনোয়ার হোসেন খানের দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী সেনহাটি স্টার জুট মিল ২ নং গেট এলাকার দিঘলিয়া প্রেসক্লাবের পশ্চিম পাশে মৃত গফফার শেখের কন্যা মরিয়ম খাতুন। মরিয়ম খাতুন দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে উক্ত বাড়ি ছাড়ে। পরবর্তীতে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। মরিয়ম বর্তমানে হংকং প্রবাসী। আনোয়ার খানের সাথে প্রথম স্ত্রী মরিয়মের তালাক হয়ে গেলে গত ৩ বছর আগে দিঘলিয়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের ফরমাইশখানা গ্রামের শালু খানের কন্যা শাহনাজ আক্তার শারমিনের সাথে বিবাহ হয়। তাদের বর্তমানে একটা পুত্র সন্তান। নাম আরমান খান (২)। প্রথম স্ত্রীর বড় পুত্র মামুন খান (১৮) বর্তমানে ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র। মেয়ে মোহনা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। মামুন খান এ প্রতিবেদককে জানান, তার উক্ত চাচা আগেও আমার পিতা ও মাতাকে মারধর করত। আমার মাও তাদের মারধর খেয়ে সংসার ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল। বর্তমানে আমার যে মা পিতার সাথে সংসার করছে তাকেও বাড়ি ছাড়া করার জন্য এভাবে আমার পিতা ও তার স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়েছে এবং শাবল দিয়ে পিটিয়েছে। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
এদিকে গতকাল এ ঘটনায় ভিকটিম ঘটনার সাথে জড়িতদের নাম উল্লেখ করে সেনা সদস্য আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে দিঘলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন। দিঘলিয়া থানার মামলা নং ১৪ তারিখ ২১/০৪/২০২৫ ইং। ধারা ৩২৩/৩২৪/৩০৭/৩০৬ পেনাল কোড-১৮৬০। সেনা সদস্য আনোয়ার খান বলেন, আমার এ ভাইটা আমার ও আমার পরিবারের প্রতি চরম জুলুম করে আসছে। আমার পূর্বের স্ত্রীকেও এভাবে অত্যাচার নির্যাতন করত। এখনও আমার ও আমার পরিবারের উপর অত্যাচার ও নির্যাতন চালাচ্ছে। আমি আমার ভাই ও ভাইপোদের কৃত জঘন্যতম কর্মকান্ডের ন্যায় বিচার চাই।
আহত শাহনাজ আক্তার শারমিনের খালা রাশিদা বেগম বুড়ি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার ভাগ্নিকে যারা এভাবে মারপিট করেছে তাদের আমি বিচার দাবী করছি।
দিঘলিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ এইচ এম শাহীন এ প্রতিবেদককে বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ নির্মম ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button