সরকারী হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের সিন্ডিকেট এখনো সক্রিয়

# অসহায় রোগীরা #
শেখ ফেরদৌস রহমান ঃ খুলনা সরকারী হাসপাতাল গুলোতে নিয়ন্ত্রণহীন অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট রাজত্ব। আর এই সিন্ডিকেট’র কাছে জিম্মি অসহায় অসুস্থ্য রোগীর স্বজনেরা । দিন দিন যেন বেড়েই চলছে এদের রাজত্ব কোনভাবে নিয়ন্ত্রণ নেই। এদিকে হাসপাতাল প্রশাসনের দাবি এসব কার্যক্রমে অসন্তুষ্ট আমরা কোনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিনা এই অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট রাজত্ব। জনবল সংকট ও প্রশাসনিক ক্ষমতা না থাকায় এমনটি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি হাসপাতালের দায়িত্বরত কতিপয় অসাধু কর্মচারীদের সহায়তায় ও স্থানীয় প্রভাবশালি মহলের ছত্রছায়ায় যেন এসব অ্যাম্বুলেন্স চালকেরা এখন আরও বেশি নিয়ন্ত্রণহীন। সরেজমিনে দেখা যায় খুমেক হাসপাতালে জরুরী বিভাগ থেকে শুরু করে হাসপাতাল চত্বর ঘিরে থাকে প্রায় শতাধিক লক্করঝক্কর নাম মাত্র আ্যম্বুলেন্স। খুব কম দেখা যায় হাসপাতালটির সরকারী অ্যাম্বুলেন্স । হাসপাতাল থেকে অসুস্থ্য রোগীদের ছাড়পত্র পাওয়ার পর বাড়ীতে যাওয়া বা জরুরী ভিক্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যান্য হাসপাতালে যেতে প্রয়োজন হয় এ্যাম্মুলেন্স। এক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় অ্যাম্বুলেন্স। তবে দেখা অধিকাংশ এসব অ্যাম্বুলেন্স গুলো পুরাতন মডেলের মাইক্রোবাসগুলো ভিতরে সিট কেটে আর বাহিরে লাল রং দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স লিখে ও উপরে একটি জরুরী হুইসেল বাতি স্থাপন করে বানিয়ে ফেলেছেন রোগী পরিবহন অ্যাম্বুলেন্স। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রোগী স্বজন আব্দুর রহমান বলেন, আমাদের বাড়ী কপিলমনি আমার মামা অসুস্থ্য ছিল তাকে বাড়ীতে নেয়ার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন । তবে হাসপাতালটির চত্বরে অপেক্ষারত এ্যাম্বুলেন্স চালক আমার কাছে সাড়ে সাড়ে তিন হাজার টাকা দাবি করে। বেশি অর্থ দাবি করায় আমি আমার এক পরিচিত মামার মাধ্যমে অন্য জায়গার থেকে কম ভাড়ায় একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসলে আমাদের গাড়ীতে রোগীকে বাহিরের কোন অ্যাম্বুলেন্স গাড়ীতে তুলতে দেবেনা বলে জানিয়ে দেয়। বিষয়টি নিয়ে আমি হাসপাতালের দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের অবগত করি তবে তারা বলে এবিষয়ে আমরা কিছু করতে পারবোনা। এক পর্যায়ে তাদের অনেক অনুরোধ করার পর আমাকে বলে এর পর যেন এমন ভুল না হয়। এছাড়া অ্যাম্বুলেন্স চালককে ধমক ও সতর্ক করে যেন আর কখনও হাসপাতালে প্রবেশ না করে। এবিষয়ে নাম প্রকাশ না শর্তে হাসপাতালে এক কর্মচারী বলেন, এখানে অ্যাম্বুলেন্স চালকেরা খুবই বেপোরোয়া এদের একটি বড় সিন্ডিকেট আছে । আছে কয়েকটি সংগঠন স্থানীয় প্রভাবশালী মহলদের দিয়ে চলে এদের রাজত্ব। এছাড়া হাসপাতালে বিভিন্ন ওয়ার্ডে কর্মচারী ওয়ার্ডবয় বা আয়াদের সাথে এদের একটি কমিশন চুক্তি থাকে। এরা রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স ট্রিপ পাইয়ে দিলে নগদ কমিশন পেয়ে যায়। এভাবে চলছে খুমেক সহ খুলনায় সরকারী হাসপাতালে রোগী পরিবহন ব্যবস্থা। এছাড়া সরকারী অ্যাম্বুলেন্স অধিকাংশ সময়ে অন্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করে। যেমন কোন কর্মকর্তা বাহিরে যাবে বা অন্য কোন কাজ থাকলে তারা সরকারী রোগী পরিবহন অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বের হয়। এ বিষয়ে কথা হয় এ্যম্বুলেন্স চালক রনি মোল্লার সাথে তিনি বলেন, বাহিরের অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতে দেয়া হয়না এটা মিথ্যা কথা । আপনি গাড়ীর মালিকের সাথে কথা বলেন আমি কিছু বলতে পারবোনা । এ বিষয়ে খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগ খুলনা পরিচালক ডাঃ মঞ্জর মুরশিদ বলেন, আমি বিভিন্ন অভিযোগে এর আগে বেশ কয়েকজন সরকারী এ্যাম্বুলেন্স চালকদের বদলি করেছি। তবে হাসপাতালের চত্বরে বেসরকারী কোন এ্যাম্বুলেন্স থাকা যাবেনা। এছাড়া সিন্ডিকেটএর বিষয় আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের পরিচালকদের তদারিক জন নির্দেশনা দেয়া হবে।