কালিয়ায় প্রতিপক্ষের বাড়ির পিছন থেকে হত্যা মামলার আসামীর মৃতদেহ উদ্ধার

নড়াইল প্রতিনিধি ঃ নড়াইলের কালিয়া উপজেলা উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামে প্রতিপক্ষের বাড়ির পেছন থেকে হত্যা মামলার আসামি রফিকুল মোল্যার (৪০) মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে প্রতিপক্ষ কাঞ্চনপুর গ্রামের রিকাইল শেখের বাড়ির পিছন থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত রফিকুল মোল্যা ওই গ্রামের আজিজুল মোল্যার ছেলে। পেশায় তিনি একজন মোটর সাইকেল চালক ছিলেন। একটি হত্যা মামলার আসামী হওয়ায় গত ১৮ দিন ধরে তিনি পলাতক ছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যা গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। এই বিরোধের জেরে গত ১১ এপ্রিল (শুক্রবার) দু’পক্ষের সংঘর্ষে আফতাব মোল্যা পক্ষের ফরিদ মোল্যা (৫৭) নামে একজন নিহত হন। এ ঘটনায় কালিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এই হত্যা মামলায় রফিকুল ১৮ নাম্বার এজাহারভূক্ত আসামী। হত্যাকান্ডের পর থেকে রফিকুল পলাতক ছিলেন।
মঙ্গলবার সকাল ৮ টার দিকে রিকাইল শেখের বাড়ির পেছনে রফিকুলের হাত পা বাধা মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানাগেছে, গত ২৭ এপ্রিল নিহত রিকাইলের মা ফাতেমা বেগম কালিয়া থানায় বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগে আফতাব মোল্যা পক্ষের লোকদের আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের দুই দিনের মাথায় খুন হলেন রফিকুল মোল্লা। নিহতের শ্যালক শামিম আহমেদ জানান, তার দুলাভাই হত্যা মামলার আসামী হওয়ায় ঢাকাতে পালিয়ে ছিলেন। তাঁর বাড়িতে আসার কোন খবর তাদের কাছে ছিল না। মঙ্গলবার সকালে হটাৎ করে জানতে পারেন তাঁকে কে বা কারা হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।
নিহতের স্ত্রী অজুহা বেগম বলেন, ‘ সোমবার সন্ধ্যায় আমার সাথে শেষ কথা হয়েছে। তখনো সে বলেছে বাড়ি আসতে দেরী হবে। অথচ আজ সকালে তাঁর লাশ পড়ে আছে। যারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে তাঁদের ফাঁসি চাই।’
নিহতের মা ফাতেমা বেগম বলেন, ‘ আমার ছেলেকে প্রতিপক্ষরা ধরে এনে মেরে ফেলেছে। আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।’ এ বিষয়ে প্রতিপক্ষ রিকাইল শেখের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, গত দুইদিন ধরে তিনি নড়াইলে অবস্থান করছেন। মঙ্গলবার সকালে তার স্ত্রী ফোন দিয়ে জানায় বাড়ির পিছনে রফিকুলের লাশ পড়ে আছে। এর বেশি কিছু জানেন না তিনি।
এদিকে এ হত্যাকান্ডকে ঘিরে বিভিন্ন মহলে নানা ধরনের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ বলছেন, রফিকুল গোপনে বাড়ি আসার পর টের পেয়ে প্রতিপক্ষরা তাকে হত্যা করেছে। আবার কেউ কেউ বলছে, রফিকুল ফরিদ মোল্যা হত্যা মামলার আসামী। রফিকুলদের পক্ষের লোকদের নামে দায়েরকৃত মামলাকে ঘায়েল করতে এবং প্রতিপক্ষকে দুর্বল করতে নিজেদের লোকজন রফিকুলকে হত্যা করে প্রতিপক্ষের বাড়ির পাশে ফেলে রেখেছে। কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকান্ডের সাথে কারা জড়িত তদন্ত সাপেক্ষে আসামীদের সনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরাধীরা কেউ ছাড় পাবে না। এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’