স্থানীয় সংবাদ

দিঘলিয়ায় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, যুগোপযোগী সমলয় চাষে কৃষকেরা সফল

সৈয়দ জাহিদুজ্জামান দিঘলিয়া খুলনা থেকে ঃ সারা দেশের সাথে তাল মিলিয়ে অল্প খরচে অধিক ফলনের চাষ পদ্ধতির নাম সমলয়। একই সময় সকল জমিতে একই ধান মিলে মিশে চাষ করার নাম সমলয় পদ্ধতি। এ পদ্ধতির চাষে দিঘলিয়ায় সংশ্লিষ্ট কৃষকেরা বাম্পার ফলন পেয়েছেন। এ বছর দিঘলিয়ার ব্রহ্মগাতী দাসপাড়া মাঠে ৭০ জন কৃষকের ৫০ বিঘা জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো মৌসুমে ব্রি-১০০ জাতের ধান চাষ করা হয়। কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। উপজেলা কৃষি দপ্তরের মাধ্যমে ৭০ জন কৃষকের মাঝে ধান বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। একই সাথে ধানের বীজ তলায় আধুনিক বিশেষ অটোমেটিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে ট্রে-তে বপন, বীজতলায় বীজ বপন করা হয়। চারা পরিণত বয়সে সরকারিভাবে উপজেলা কৃষি দপ্তরের মাধ্যমে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের সাহায্যে ধান রোপন করা হয়। বিশেষ করে বোরো ধান কাটার সময় শ্রমিক সংকট এখন বাংলাদেশে প্রতি বছরের সমস্যা। শিল্পায়নের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে কয়েক দশক ধরে মানুষ শহরমুখী। তাই প্রতিনিয়ত কমছে কৃষি শ্রমিক। ভবিষ্যতে এ সংকট আরও বাড়তে পারে। তাই মহল্লায় মহল্লায় কৃষকদের সমবায় পদ্ধতিতে এগিয়ে আসা দরকার বলে অনেক কৃষকেরা মনে করেন। তবে এর একটা সমাধান হতে পারে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মধ্য দিয়ে। ধান কাটার আধুনিক যন্ত্র ‘কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে অল্প সময় ও কম খরচে দ্রুত শুধু ধান কাটা নয়, একই সঙ্গে মাড়াই, পরিষ্কার ও সংগ্রহ ধান করা যায়। সনাতন পদ্ধতিতে কাচি দিয়ে একর প্রতি ধান কাটায় খরচ হতো ১২ হাজার টাকা কিন্তু হারভেস্টার মেশিন দিয়ে খরচ হচ্ছে ছয় হাজার টাকা। সময় ও অর্থ দুটোই কম লাগার কারণে কৃষক একই জমিতে খুব সহজেই অন্য ফসল করতে পারবে।
দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ কিশোর আহমেদ এর মৌসুমী-সমন্বিত কৃষি ইউনিট এর আওতায় খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলায় ‘সমলয়’ চাষ পদ্ধতিতে এ বছর প্রথমবারের মতো ৭০ জন কৃষকের ৫০ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষে বিশেষ অটোমেটিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে ট্রে-তে চারা বপন, বীজতলা ও ধানের চারা রোপণে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, ধান কাটার ক্ষেত্রেও কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনসহ আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষকদের এ ধরনের সেবা দিয়ে আসছে। গত ২০/০৪/২৫ ইং তারিখে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে এ ধান কাটার শুভ উদ্বোধন করেন জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার খুলনা মহাদেব চন্দ্র সানা। উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ কিশোর আহমেদ। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কামাল হোসেন, মোঃ আনোয়ারুজ্জামান, মোঃ মনির হোসেন প্রমুখ। উল্লেখ্য দিঘলিয়া উপজেলায় বোরো মৌসুমে সমলয় পদ্ধতিতে ধান উৎপাদন হয়েছে প্রতি হেক্টরে ৭.৩৭ মেট্রিক টন। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ কিশোর আহমেদ এ প্রতিবেদককে বলেন, আমামীতে দিঘলিয়ার কৃষকদের মধ্যে সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষের ব্যাপারে আমামী বোরো মৌসুমে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হবে। কারণ এ পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষে কম পরিশ্রমে কম খরচে উৎপাদন বেশী পাওয়া যায়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button