স্থানীয় সংবাদ

বটিয়াঘাটায় জমি উদ্ধার ও প্রশাসনের লাল চিঠি বাস্তবায়নের দাবিতে ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার ঃ ব্যক্তিমালিকাধীন জমির প্রবেশদ্বার আটকে ও সরকারি জমি দখল করে খুলনার বটিয়াঘাটায় লোকালয়ে চলছে প্রাণঘাতী জে এম আই ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস কোম্পানি। লাল চিঠি দিয়েও বাস্তবায়নে নেই ইউএনও হোসনে আরা তান্নির উদ্যোগ। এই কোম্পানীর দ্বারা আটকে থাকা জমি উদ্ধার ও প্রশাসনের দেওয়া লাল চিঠি বাস্তবায়নের দাবিতে খুলনা প্রেসক্লাবে গতকাল ভুক্তোভোগীদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের মনিরুল ইসলাম বিশ্বাস।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বল প্রয়োগের মাধ্যমে অবৈধ ভাবে বটিয়াঘাটার কিসমত ফুলতলা এলাকায় জে এম আই ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ঘনিষ্টজন মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। তিনি লোকালয়ের মধ্যে প্রাণঘাতী এই কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন টাকার জোর ও আওয়ামী ক্ষমতাবলে। সাধারনত এ ধরনের প্রতিষ্ঠান লোকালয় থেকে বহুদূরে করা হয়ে থাকে। জে এম আই ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস কোম্পানির মালিক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক অবৈধভাবে কোম্পানি স্থাপন করার পাশাপাশি আস্তে আস্তে সরকারী জমি ও স্থানীয় ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি দখল করা শুরু করে। প্রথমে তিনি সরকারি জমি ইজারা নিয়ে কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকেন। বাক্তিমালিকানাধীন জমিতে টিনের বেড়া দিয়ে এমনভাবে আটকে রেখেছে যে আমাদের জমিতে আমরাই প্রবেশ করতে পারছি না।
আমাদের কিসমত ফুলতলা মৌজার বিআরএস ২৫৫ খতিয়ানে কেশর। লাল মন্ডল গং দের নিকট থেকে ক্রয়কৃত ১ শ’ ৬০ শতাংশ (১.৬০ একর) জমিতে পারিবারিকভাবে কৃষিকাজ করে থাকি। তবে এই কোম্পানি আমাদের জমির প্রবেশদ্বার আটকে রেখেছে। এতে এত বড় জমির চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। নতুন ফসল চাষের জন্য কার্যক্রম শুরু করতে পারছি না। জে এম আই ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস কোম্পানির মালিক মোঃ আব্দুর রাজ্জাকে বার বার বলা সত্ত্বেও আমাদের কথা কর্ণপাত করেনি সে। ক্ষমতা দেখিয়েছে আওয়ামী সরকারের। পরে আমরা দ্বারস্থ হই প্রশাসনের। সেই সময়ও আমরা কোনা সুরহা পাইনি আর সরকার পরিবর্তনের পরেও মিলছে না কোনো সমাধান।
তিনি আরও বলেন, জে এম আই ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস কোম্পানি যে অবৈধ তা সরকারের নোটিশ গুলো বলে দেয়। এই প্রতিষ্ঠানকে বেশ কয়েকটি চিঠি দেওয়া হলেও কর্ণপাত করেনি মালিক। পরবর্তিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি লাল নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয়, সরকারের বিনা অনুমতিতে জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে ইজারার চুক্তি ভঙ্গ করার কারনে ইজারা চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। গত ২ ফেব্রুয়ারী লিজভুক্ত জমির সকল বেড়া ও স্থাপনা অপসারন করার কথা বলা হয়। তা না মানায় তিন কর্মদিবসের মধ্যে সবকিছু উচ্ছেদের কথা বলা হয় লাল নোটিশে। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গড়িমসিতে তা এখনো সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইউএনও কে চিঠি দিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। সবশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নোটিশ জারি করেছেন বিভাগীয় কমিশনার। সেখানে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠিত অবৈধ অনুমোদনকৃত কোম্পানি হিসাবে আক্ষা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা নির্বাহী অফিসার। কোম্পানি তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পুরোদমে। গত ৬ মাস ধরে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে কোনো ফলাফল পায়নি। বিভাগীয় কমিশনার-জেলা প্রশাসকের কথাও মানছেন না উপজেলা নির্বাহী অফিসার। এই সময়ে এসে একজন ইউএনও কিভাবে সঙ্গ দিচ্ছেন আওয়ামী দোসরদের? আপনাদের মাধ্যমে জাতির কাছে আমার প্রশ্ন। আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি সাধনের জন্য দ্রুতই জমির প্রবেশদ্বার খোলাটা জরুরী। এছাড়া জনবহুল এলাকায় এমন প্রতিষ্ঠান ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এটি অপসারন করে সরকারের দেওয়া লাল চিঠির আদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। এ বিষয়ে আমরা বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button