স্থানীয় সংবাদ

আদালতের আদেশের পরও পাওনা পরিশোধ করছে না ব্যাংক

# সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার :
আদালতের আদেশের পরও রূপালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পাওনা পরিশোধ করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মৃত সরদার আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র সরদার আসাদুজ্জামান।
লিখিত বক্তব্য পাঠকালে আসাদুজ্জামান বলেন, আমার পিতার বিরুদ্ধে রূপালী ব্যাংক আনীত দুর্নীতির অভিযোগে মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় নির্দোষ খালাস প্রাপ্ত হন। অতঃপর তিনি তার জীবদ্দশায় চাকুরিচ্যুতির আদেশ রদ চেয়ে হাইকোর্ট বিভাগে রীট পিটিশন মামলা নং- ৮৬১৯/২০১৫ দায়ের করেন। এবং রুল নিশির আদেশ প্রাপ্ত হন। অতঃপর তিনি রোগ ভোগে পতিত হয়ে দীর্ঘবৎসর শয্যাশয়ী থাকার কারণে অর্থনৈতিক দৈন্য-দশায় পতিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আমরা দুই বোন এবং এক ভাই। বড় বোন কামরুন্নাহার কুমু (৪০) সারমিন নাহার (৩৭) এবং আমি সরদার আসাদুজ্জামান(২৯) আমার পিতা মৃত সরদার আব্দুর রাজ্জাক রূপালী ব্যাংক কর্তৃক কীভাবে দিনের পর দিন প্রতারিত এবং বঞ্চিত হয়েছেন তা বিস্তারিত বর্ণনা করছি। ১৯৭৭ সালে আমার পিতা রূপালী ব্যাংক জুনিয়র অফিসার হিবেবে যোগদান করেন। সে সততার সাথে তার কাজের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে পদন্নোতি পান ১৯৯৭ সালে। চাকুরীকালীন জীবনে তিনি ৭ বারের ও অধিক তার কর্মের জন্য নানা সময়ে বিভিন্ন পুরষ্কার লাভ করেন। তিনি অত্র ব্যাংক এর গড়ইখালী হাট শাখা খুলনায় সিনিয়র অফিসার (ব্যবস্থাপক) হিসাবে কর্মরত থাকাকালীন আঞ্চলিক কার্যালয়, খুলনা তার পূর্বের কর্মস্থল বড়দল শাখায় সংঘঠিত অনিয়মের অভিযোগে ২০০২ সালের ৫ জুন আকাখু/প্রশা/২৭ নম্বর পত্রে তাকে চাকুরী থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। উক্ত রড়দল শাখা (বর্তমানে বুধহাটা শাখা) ২০০২ সালের ১৩ জুলাই তাকে সহ তিনজনের বিরুদ্ধে আশাশুনি থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীকালে তাদের প্রধান কার্যালয়, ঢাকার উপমহাব্যবস্থাপক ডিসিপ্লিন বিভাগ কথিত অনিয়মের অভিযোগ এনে তাকে ২০০৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী প্রকা/ ডিবি/ ১১০ নং পত্রে চাকুরী হইতে বরখাস্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, সুদীর্ঘ আট বৎসরেরও অধিক সময় পর আমার পিতার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বিশেষ মামলা ১০/০৬ নং মামলার রায়ে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন। বিভাগীয় স্পেশাল জজ খুলনার বিচারান্তে আদেশ নং- ৫৮ তাং ২৭/০৯/২০১০ ইং এর মাধ্যমে মামলার দায় হইতে তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। অতঃপর তিনি জীবদ্দশায় চাকুরীচ্যুতির আদেশ রদ চেয়ে হাইকোর্ট বিভাগে রীট পিটিশন মামলা নং- ৮৬১৯/২০১৫ দায়ের করেন এবং রুল নিশির আদেশ প্রাপ্ত হন। অতঃপর তিনি রোগে ভোগে পতিত হয়ে দীর্ঘবৎসর শয্যাশয়ী থাকার কারনে অর্থনৈতিক দৈন্য-দশায় পতিত হয়ে মৃত্যুবরন করেন। মৃত্যুজনিত কারনে উক্ত রীটের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে আমি সরদার আসাদুজ্জামান উক্ত রীটের বিষয়ে অবগত থাকার কারনে রীট পিটিশন মামলা নং- ৪২৯০/২০২৩ দায়ের করি। অতঃপর রূপালী ব্যাংক অফিস কর্তৃক প্রেরিত সুত্র নং প্রকা/শৃ আবি/২০২৩/৪৬২/ ক মধ্যমে, ১৯/০৬/২০২৩ ইং তারিখের ১১৯২ তম সভায় সিদ্ধান্ত প্রাপ্ত হয় যার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো আমার পিতার রুজুকৃত রীট পিটিশন ৮৬১৯/২০১৫ চলমান থাকায় অফিস আমার মৃত পিতার পাওনাদি পরিশোধ করতে পারবে না। উক্ত বিষয় অবগত হওয়ার পর আমার পিতার দায়েরকৃত রীট পিটিশন মামলা নং- ৮৬১৯/২০১৫ বিগত ১২/১০/২০২৩ ইং তারিকে নন প্রসিকিউশন করার ফলে আমার পিতার পাওনাদি পরিশোধে ব্যাংকের আর কোনো বাধা থাকার কথা না। এরপর আমার দায়েরকৃত মামলা নং- ৪২৯০/২০২৩ এর হাইকোর্ট কর্তৃক ২২/০৬/২০২৩ ইং তারিখে রায় প্রদান করা হয় যে আগামী ৪৫ কার্য দিবসের মধ্যে সকল পাওনা পরিশোধ করেতে হবে। তবে হাইকোর্টের রায় তারা অমান্য করে আমার পিতার যাবতীয় টাকা প্রদান সুপারদী আংক করেনি। বরংবার ব্যাংক কর্তৃক বোর্ড মিটিংয়ের কথা বলে আমাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। প্রায় ২ বছর যাবৎ হাইকোর্টের রায় পার হয়ে গেলেও আজও তার কোনো সুরহা হয়নি। এখন আমি প্রধান উপদেষ্টা ও অর্থ উপদেষ্টার কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করছি যেন আমার পিতার সব পাওনাদি পেতে পারি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button