স্থানীয় সংবাদ

তিব্র তাপে পুড়ছে খুলনা বিভাগ : একদিনে ব্যবধানে আরও তাপমাত্রা বৃদ্ধি

# দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৪২ ডিগ্রি

কামরুল হোসেন মনি ঃ তীব্র তাপে পুড়ছে খুলনা বিভাগ। তাপ প্রবাহে জনজীবন হাঁসফাঁস অবস্থা বিরাজ করছে। বৈদ্যুৎতিক পাখা চালিয়েও যেনো শরীর ঠান্ডা হচ্ছে না। দেশের মধ্যে শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় খুলনা বিভাগের মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিনও শুক্রবার এ অঞ্চলে দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা বেড়েছে দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই ভাবে খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনার কয়রা ও সাতক্ষীরায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
খুলনা সহকারী আবহাওয়াবীদ মো: মিজানুর রহমান বলেন, শনিবার দুপুর ৩টার পর দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এই জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। এছাড়া যশোর ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি, খুলনায় ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি, মোংলায় ৩৯ ডিগ্রি, সাতক্ষীরায় ৩৯ ডিগ্রি ও কয়রায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রের্কড করা হয়। এর আগের দিন অর্থাৎ ৯ মে খুলনায় ৩৯ ডিগ্রি, যশোরে ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি, সাতক্ষীরায় ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি এবং মোংলা ও কয়রায় ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ওই আবহাওয়াবীদ আরও বলেন, এই তাপপ্রবাহ আরও একদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে ঢাকা ও চুয়াডাঙ্গা ছাড়াও দেশে বেশকিছু জেলার তাপমাত্রা গতকাল শনিবার ৪০ ডিগ্রিতে ওঠে। এরমধ্যে রাজশাহীতে ৪০ দশমিক ৭, মানিকগঞ্জের আরিচায় ৪০, ফরিদপুরে ৪০ এবং টাঙ্গাইলে ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, ২০২৪ সালে ৩০ এপ্রিলে দেশে ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিলো যশোরে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত ৫২ বছরের মধ্যে রেকর্ড ছিলো। এই দিনে খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি ও চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অপরদিকে খুলনা বিভাগে অতি তাপপ্রবাহে এতে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ভ্যাপসা গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। দিন এবং রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি পার্থক্য নেই। দিনের আলো ফোটার পর থেকেই উত্তপ্ত হতে থাকে পরিবেশ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও প্রকট হচ্ছে রোদের উত্তাপ। আবার সন্ধ্যার পর ভ্যাপসা গরমে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে। তীব্র হচ্ছে গরমের অনুভূতি। বৃষ্টির পানির জন্য হাহাকার করছে মানুষ। সকাল সকাল শ্রমজীবী মানুষেরা কাজের সন্ধানে বেরিয়েও ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। টানা তাপদাহে খুলনার মানুষ ও প্রাণিকুল ওষ্ঠাগত। নাকাল এ অঞ্চলের জনজীবন। পানদোকানী মো: আফজাল হোসেন বলেন, দোকেন মধ্যে ফ্যান (বৈদ্যুৎতিক) চলছে, তারপরেও শরীরের থেকে টপ টপ করে ঘাম ঝড়ছে। রোদের দিকে তাকালে মনে হচ্ছে চোখ ঝলসে যাচ্ছে। রাস্তা থেকে যেন আগুনের আঁচ উঠছে। শরীরের চামড়ায় ফোসকা পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু ঘরেও তো বসে থাকা যাচ্ছে না। কাজের জন্য সড়কের পাশে বসতেই হচ্ছে। ইজিবাইক চালক মো: আবুল হোসেন বলেন, গত কয়েকদিন ধরে অতি প্রয়োজন না হলে মানুষজন তীব্র গরমে ঘর থেকে বেরই হচ্ছে না। যারা বের হচ্ছেন তাও সন্ধ্যার পর। দিনে রোদের তাপ আর রাতে ভ্যাপসা গরমে কাজকর্ম করা যাচ্ছে না। কঠিন হয়ে পড়ছে সবকিছু।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button