স্থানীয় সংবাদ

ডুমুরিয়ার থুকড়া ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তার দুর্নীতি ও অনিয়মে অতিষ্ঠ সাধারন মানুষ

# আইন অমান্য করে মোটা অংকের টাকার বিনিমযে আংশিক খাজনা কর্তন
# তপন মন্ডল ও দিপ্তিংশু মন্ডল দিপু (টিটু)সহ ভূমি অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি চক্র সরকারি ১/১ খতিয়ানভুক্ত ভিপি জমি ব্যক্তি মালিকানায় নামপত্তন করছে #

এম রুহুল আমিন ঃ ডুমুরিয়া উপজেলা থুকড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ২৬ টি মৌজার ভূমি সংক্রান্ত সেবা দিয়ে থাকেন। ভূমি অফিসে দালালের মাধ্যমে কাজ করা বা সরকারি ফি’র চেয়ে বেশি টাকা নেওয়ার ঘটনা নতুন নয়। সরকারি দফতরের কেউ না হয়েও ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারীর সরকারী আই ডি ব্যবহার করছে কম্পিউটার দোকানদার ও বহিরাগত লোক কার্যালয়ের কম্পিউটারে বসিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে। আর বিনিময়ে প্রতিজন সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে সরকারি ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত টাকা। আর এভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছে সাধারন মানুষ ও সরকারের রাজস্ব। আইন অমান্য করে হলেও মোটা অংকের টাকার বিনিমযে আংশিক খাজনার দাখিলা কাটছে ভূমি নায়েব বোরহান উদ্দিন। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ডুমুরিয়া উপজেলার থুকড়া ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা (ছোট নায়েব) বোরহান উদ্দিন ডুমুরিয়া উপজেলার চকআসানখালী মৌজার সরকারী ১/১ খতিয়ানের ভিপি লিজ কেস নং-১৮৮/৬৭-৬৮ যার এস এ খতিয়ান নং ২৯৬,৩৪৩ জমির পরিমাণ প্রায় ২২ শতক মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ২০৪৪৯ খতিয়ানে ব্যক্তি মালিক মো: আনোয়ারুল ইসলামসহ ৫ জনকে নামপত্তনে রিপোট প্রদান করে ও ডুমুরিয়া উপজেলার চকমথুরাবাদ মৌজার ভিপি লিজ কেস নং-১০৯০/৭৪-৭৫ জমির পরিমাণ সাড়ে ৩ শতক তপন কুমার মন্ডল কে নামপত্তনের মাধ্যমে ৪৪৪২ নং খতিয়ানে নামজারি করে দিয়েছেন। রঘুনাথপুর এলাকার এফএম আসলাম আকুজীসহ একাধিক ভুক্তভোগী ও থুকড়া,চকআসানখালী,চকমথুরাবাদসহ বিভিন্ন মৌজার গোপাল,সুবাস,রেজাউল,আবুল হোসেন,আসাদ শেখ সহ ভুক্তভোগীরা জানান, থুকড়া ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিনের সরকারি আইডি ব্যবহার করে কাজ করছে কম্পিউটার দোকানদার টিটু মন্ডল। কোন জমি যদি একাধিক মালিক থাকে সেক্ষেত্রে ১১৭ ধারায় আবেদন করে পৃথক করার পরে জমির খাজনা দাখিলা দিতে হবে। কিন্তু সেখানে মোটা অংকের টাকার বিনিময় আইন লঙ্ঘন করে আংশিক খাজনা রশিদ কাটছে। তপন মন্ডল ও দিপ্তিংশু মন্ডল দিপু (টিটু) ভূমি অফিসে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি চক্র সরকারি ১/১ খতিয়ানভুক্ত ভিপি জমি ব্যক্তি মালিকানায় নামপত্তন করছে। অফিস সুত্রে জানা যায়,এ কাজটি বিগত নায়েব জাহাঙ্গীর আলম’র সময় থেকেই চলে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় চলমান রয়েছে বোরহান উদ্দিন। বোরহান উদ্দিন ও কম্পিউটারের দোকানদার টিটু অবৈধ ভাবে জমির কাজ করে অল্প দিনে অঢেল ধন সম্পদের মালিক হয়েছে বলে এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়। বোরহান উদ্দিন সরকারি কাজে খুলনার বাহিরে গেলেও তার আইডি থেকে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে এরকম নজিরও রয়েছে।
ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া ঝিলেরডাঙ্গা গ্রামের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দীপেন বিশ্বাস জানান, তিনি একটি নামপত্তন নিজে করতে আবেদন করেছেন সাতবার। আবেদন করেও তিনি নামজারি করতে পারেননি। পরে তিনি দালালের মাধ্যমে নামপত্তন করেছেন। কিন্তু তিনি থুকড়া ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী বোরহান উদ্দিনের নিকট স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে ৩/৪ দিন আসলেও তিনি সেটি তামিল করতে পারছেন না। তবে ওনার একই দাগের জমি অন্য শরিকগন তামিল করে নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু দীপেন আসলে তৌহসিলদার (ছোট নায়েব) বোরহান উদ্দিন খাস জমি বলে বারবার ফিরিয়ে দেন। শ্ক্ষিক দীপেন বলেন,টাকা পয়সা দিলে কাজটি আমার দ্রুত হয়ে যেত। কিন্তু টাকা না দেওয়ার কারণেই আমার তিন-চার দিন ঘুরতে হয়েছে। পরে বিষয়টি সরেজমিনে এই প্রতিবেদকের নজরে আসলে বিষয়টি তখন দ্রুতই তড়িঘড়ি করে তামিল করে দাখিলা কেটে দেন।

ডুমরিয়া উপজেলার থুকড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ভূমি অফিসের তহশিলদার (ছোট নায়েব) মোঃ বোরহান এ প্রতিবেদককে টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করেন। সংবাদটি প্রকাশ না করতে বিভিন্ন মাধ্যমে তদবিরও করেন তিনি। থুকড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি দফতরের কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করছেন শাহাবুল আর বাহিরে রয়েছে আর একজন টিটু কম্পিউটারের দোকান থেকে সব কিছু নিয়ন্ত্রন করেন। ভুক্তভোগীরা জানান, টিটুর কাছে রয়েছে অনেক অত্যাধানিক সব প্রযুক্তি। টিটু কম্পিউটারের দোকান থুকড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের বাহিরে,দোকানে বসে তহসিলদার(ছোট নায়েব) বোরহান উদ্দিন তার সরকারী ্আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছে। সেই আইডি দিয়ে করছে সকল ভূমি সেবার কাজ। নামজারির রিপোট, দাখিলা (খাজনা)’র আবেদন সহ সম্বনয় করে দেন তিনি।এলাকার সচেতন মহলের ব্যক্তিগন জানান, দৌলতপুর, আড়ংঘাটাসহ বিভিন্ন এলাকার ভূমি দালাল ও বিল পাবলা, চক আহসানখালী, চকমথুরাবাদ এলাকার প্রপার্টিস ব্যবসায়ীদের সাথে রয়েছে টিটুর লেনদেন। যার কারনে সরকারী খাল, খাস জমি ও হিন্দুদের সম্পত্তি টাকার বিনিময়ে দিয়ে দিচ্ছেন ভূমি খাদক প্রপার্টিস ব্যবসায়ীদের হাতে। দোকানে বসে দেখেন ভূমি অফিসের কে কোন কাজ করছে, কে ভুমি অফিসে যাচ্ছে বা আসতেছে। ভূমি অফিসের ছোট নায়েব (তহসিলদার) সকল কাজের ছবি তুলে পাঠিয়ে দেন টিটুর কাছে। পাশেই একজন সেবাগ্রহীতা। সাংবাদিক পরিচয় না দিয়ে কিছুক্ষণ তাদের কার্যক্রম খেয়াল করেন প্রতিবেদক। দেখা যায়, ভূমি অফিসে যারা জমির খাজনা দিতে আসছেন তাদের সব কাজ করে দিচ্ছেন শাহাবুল। অফিসে রয়েছেন স্টাফ শামিমা। শামিমা সকল কাজের সকল অনিয়মে সহযোগী হিসাবে কাজ করে। টিটু কম্পিউটারে গেলে সকল জটিল সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। থুকড়া ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিনের সরকারি আইডি ব্যবহার করে কাজ করছে কম্পিউটার দোকানে। এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)বলেন, নায়েবের আইডি ব্যবহার করে বাহিরের কোন কম্পিউটারের দোকানে কাজ করার নিয়ম নেই এইটা একটি অপরাধ। ভুক্তভোগীরা আরও জানান, ডুমুরিয়ার থুকড়া ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তার দুর্নীতি ও অনিয়মে অতিষ্ঠ সাধারন মানুষ আমরা বোরহান স্যার এ টেবিলে সেবা নিতে বা কাজ করাতে গেলে টাকা ছাড়া কোন সেবা পাইনা। টাকা না দিলে বিভিন্ন ভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়।এ সমস্ত অসৎ ও দূর্নীতিগ্রস্থ ভূমি নায়েবকে তদন্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button