খুলনার জোড়াগেট কোরবানীর পশুরহাটে ১% কমিয়েও হাসিল আদায় ২ কোটি টাকা

স্টাফ রিপোর্টারঃ খুলনা জোড়াগেট কোরবানি পশুর হাটে এবার সাত দিনে ছয় হাজার ৬৫১টি পশু বিক্রি হয়েছে। সেখান থেকে হাসিল হিসেবে খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) দু’ কোটি সাত লাখ টাকা আয় করেছে। ২০২৪ সালে ৬২২৭টি পশু বিক্রি করে আয় ছিল দু’ কোটি ২৫ লাখ টাকা। সে সময় পাঁচ শতাংশ হারে হাসিল আদায় করা হতো। এ বছর এক শতাংশ কমিয়ে চার শতাংশ হারে হাসিল আদায় করা হয়েছে। ফলে ২৪টি পশু বিক্রি বাড়লে আয় গত বছরের চেয়ে ১৮ লাখ টাকা কমেছে। তবে এষ্টেট অফিসার গাজী সালাউদ্দীন বলেন, অনেক বাধামুখে সকলের সহযোগিতায় এবার কেসিসির কোরবানীর পশুরহাট সফল হয়েছে। হাসিল এক শতাংশ কম নিলেও টার্গেট পূরণ হয়েছে।
২০২৩ সালে ছয় হাজার ২০টি পশু বিক্রি থেকে আয় হয়েছিল দু’ কোটি ২১ লাখ চার হাজার ৯৬২ টাকা। ২০২২ সালে সাত দিনে ছয় হাজার ৭৬০টি পশু বিক্রি থেকে আয় ছিল দু’ কোটি ২৫ লাখ ৬০ হাজার ৭৪৫ টাকা। কেসিসি পরিচালিত এ হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সব সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান ছিল। তবে ২০২৩ সালের চেয়ে ২০২৪ সালে ২০৭টি পশু বিক্রি বেশি হয়েছিল। আর হাসিল আদায় চার লাখ টাকা বেড়েছিল। ২০২০ সালে পাঁচ দিনে ছয় হাজার ১৬৯টি পশু বিক্রি থেকে হাসিল আদায় ছিল এক কোটি ৬৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা।করোনা মহামারির কারণে ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২০ সালে এক হাজার ৬৩৬টি পশু বিক্রি কম হয়েছিল। আর হাসিল আদায় কমেছিল ৪৪ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের চেয়ে ২০১৯ সালে ৭৭৩টি পশু বিক্রি বেড়ে হাসিল আদায় বেড়েছিল ৪২ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।কেসিসির কোরবানির পশুর হাটের সুপারভাইজার প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হাটে বেচাকেনা শেষ দু’ দিনেই বাড়ে। কিন্তু এ বছর শেষ দু’ দিনই আবহাওয়া ভালো ছিল না। ফলে কোরবানির পশু বেচাকেনায় সমস্যা হয়। তারপরও গত বছরের চেয়ে পশু বিক্রি বেড়েছে। কিন্তু হাসিল এক শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার কারণে হাটে আয় গত বছরের তুলনায় কমেছে। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। তিনি বলেন, গত ১ জুন থেকে এ হাটে বেচা বিক্রি শুরু হয়। ঈদের দিন ৭ জুন সকালে ৬টায় এ হাটে বেচাকেনা শেষ করা হয়। এ সময়ের মধ্যে হাটে ছয় হাজার ৬৫১টি পশু বিক্রি হয়। এরমধ্যে রয়েছে চার হাজার ৩৮৩টি গরু, দু’ হাজার ১৬২টি ছাগল, ১০৩টি ভেড়া ও তিনটি মহিষ। এ থেকে কেসিসি হাসিল হিসেবে পেয়েছে দু’ কোটি সাত লাখ ৯ হাজার ৬০২ টাকা। এদিকে হাটের শেষ দিকে মাঝারি ও ছোট আকারের গরুর আকাল দেখা দেয়। ফলো বিত্রেতারা এ সুযোগটি নেয়। তারা চড়া দামে গরু বিক্রি করে। ক্রেতারা অনেকটা বাধ্য হয়ে ঈদের আগের দিন রাতে গরু ক্রয় করেন। তবে বড় গরুর দাম স্বাভাবিক ছিল বলে ক্রেতারা জানান। এদিকে গরুর হাটে ২৪ লাখ টাকা চুরির চেষ্টার দায়ে ৯ বছর বয়সী এক শিশুকে আটক করা হয়। ঈদের দিন আগের রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খালিশপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, ওই শিশুকে সমাজসেবা অফিসারের মাধ্যমে পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়। উল্লেখ্য, কোরবানির পশুর কেনাবেচার জন্য প্রতি বছর নগরীর জোড়াগেট পাইকারি কাঁচা বাজারে পশুর হাট বসায় কেসিসি। আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাট পরিচালনা করতো। ২০০৯ সালে এ হাট থেকে কেসিসির আয় ছিল ৪৭ লাখ টাকা। ২০১১ সাল থেকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় হাট পরিচালনার উদ্যোগ নেয় কেসিসি। সেই থেকে এ হাটের মাধ্যমে কোটি টাকার রাজস্ব আয় করছে।