খানজাহান আলী থানার শ্যামগঞ্জ মৌজার কেডিএ আবাসিকের ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ ৫৬ বছরেও পরিশোধ করা হয়নি : চূড়ান্ত করা হয়নি প্রাক্কল তৈরির কাজ

# রুল পিটিশন জারির ৪ সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হলেও এক বছরেও জবাব দাখিল করেনি #
# খুলনা প্রেসক্লাবের সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই দাবি করা হয়
স্টাফ রিপোর্টার /খানজাহানআলী থানা প্রতিনিধি ঃ খানজাহান আলী থানার শ্যামগঞ্জ মৌজার কেস নং এল, এ কেডিএ ১১সি/৬২-৬৩ শিল্পের নামে হুকুম দখলকৃত ১৩৫.১৪ একর জমির ক্ষতিগ্রস্থ মালিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদাননা কওে এবং শিল্প করতে ব্যর্থ হয়ে আবাসিক করা সহ খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বে-আইনি কার্যকলাপ বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন কেডিএ এর বে-আইনি ও অবৈধ হুকুম দখলকৃত জমি পুনরুদ্ধার কমিটি।
গতকাল ১৪ জুন সকালে খুলনা প্রেসক্লাবের এক সাংবাদিক সম্মেলনে কমিটির নেতৃবৃন্দ আরও দাবি করেন আবাসিকের ক্ষতিগ্র¯ ’জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ ৫৬ বছরেও পরিশোধ করা হয়নি, চূড়ান্ত করা হয়নি প্রাক্কলন তৈরির কাজ।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ শেখ আব্দুল গফফার বলেন, আজ থেকে ৫৬ বছর পূর্বে সাবেক ফুলতলা বর্তমান খানজাহান আলী থানার শামগঞ্জ মৌজার ১৩৫.১৪ একর জমি খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আবেদনে জেলা প্রশাসক, খুলনা মহোদয় ১৯৬৮ সালে এল, এ কেস নং- ১১সি/৬২-৬৩ (শিল্প) এর মাধ্যমে হুকুম দখল করেন কিন্তু চূড়ান্ত প্রাক্কলননা কওে প্রাথমিক ভাবে নামমাত্র খসড়া প্রাক্কলন করে ৭৫% (কম/বেশি) টাকা ভুক্তভোগীদের দিয়ে জমি হইতে উচ্ছেদ করেন। দীর্ঘ ৫৬ বছরেও চূড়ান্ত প্রাক্কলন তৈরি কওে আমাদের ক্ষতিগ্রস্থদের বাকী পাওনা পরিশোধ করেন নাই। আমরা সরকারের সংশ্লিষ্টবিভিন্ন দপ্তওে আবেদন-নিবেদন করিয়া ক্ষতিপূরণ আদায় সহ আমাদের দাবী সমূহ বাস্তবায়ন করাতে পারি নাই।
অধ্যক্ষ শেখ আবদুল গফফার আরো বলেন, যে হুকুম দখলকৃত ১৩৫.১৪ একর জমির মধ্যে কেডিএ কর্তৃপক্ষ মাত্র কয়েক একের জমিতে শিল্প স্থাপন ও শিল্পে চলাচলের জন্য ২২ একর জমি রাস্তা হিসাবে মোট ২৫ একর জমিতে শিল্প স্থাপতি হয়েছে যার অধিকাংশ অচল ও রুগ্নশিল্প। বাকী ১১০.১৪ একর জমি দীর্ঘদিন যাবৎ চাষাবাদের জন্য বাৎসরিক ইজারা প্রদানের মাধ্যমে ব্যক্তিবিশেষ লাভবান হতে থাকলে ইজারা প্রদানের বিরুদ্ধে মামলা করলে উক্ত মামলার রায়ের প্রেক্ষিতে ১৯৮০ সালে ইজারা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর জমিতে শিল্পকরতে ব্যথর্ হয়ে পরবর্তীতে কেডিএ কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত সুকৌশলে শ্যামগঞ্জ মৌজারজমি মিরেরডাঙ্গা আবাসিক প্রকল্প নাম দিয়ে আবাসিক প্লট হিসাবে বরাদ্দ দিতেছে অথচ ঐ জমির মালিকগণ চূড়ান্ত প্রাক্কলন হিসাবে ক্ষতিপূরণ না পেয়ে নিররাশ্রয়ে (ভাড়াবাড়িতে) বসবাস করছে। যা অত্যন্ত অমানবিক। কেডিএর এ সকল বে-আইনীও অবৈধ কার্য কলাপ সম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণে জোর দাবি জানাচ্ছি।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা বসতভিটা হারিয়ে এবং সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ না পেয়ে অতিকষ্টে জীবনযাপন করছি। কেহ বস্তিতে, কেহ ভাড়াবাড়িতে, আবার কেহ যাযাবরের মতো দিনযাপন করছে। বর্তমান বি আরএস জরিপে উক্ত ভূমি জেলা প্রশাসক, খুলনা মহোদয়ের নামে রেকর্ড হয়েছে। কেননা আমাদের হুকুম দখলকৃত ভূমির চূড়ান্ত প্রাক্কলন করে ক্ষতিপূরণ ও গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ডিড অফ ট্যান্সেফার সম্পন্ন হয়নাই। ইতোমধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) বর্ণিত স্মারকনং-পৃঃগঃম/খুঃউঃকঃ/০১/২০০৯/৭১ তাং-১৭/০৫/২০০৯ এবং জেঃপ্রঃখুঃ/ এলএ/কেডিএ/১১/সি/৬২-৬৩ (শিল্প)/৫৪. তাং-২০/০৭/২০০৯ মোতাবেক দখলকৃত অব্যবহৃত প্রায় ৬০.১৪ একর ভূমি মিরেরডাঙ্গা আবাসিক এলাকা উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পভূক্ত কওে আবাসিক হিসেবে ব্যবহারের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদনকরে। কিন্তু উল্লেখিত কেসটি ১৯৪৮ সনের জরুরী সম্পত্তি হুকুম দখল আইনের ৫(৭) ধারা মোতাবেক গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে চূড়ান্ত অধিগ্রহণ এবং ডিড অফ ট্যান্সেফার সম্পন্ন না হওয়ায় ভূমি মন্ত্রণালয় বর্ণিত স্মারকনং-ভূঃমঃ/শা-৫/অনুঃ/খুলনা- ০১/২০০৯/১১৮, তাং-১৩/১০/২০০৯ অনুযায়ী নাকচ করে দেয়। পরবর্তী সময়ে আমরা জানতে পেরেছি যে, কেডিএ কর্তৃপক্ষ ভুল তথ্য প্রদান কওে জালিয়াতের মাধ্যমে উক্ত জমি পুনঃরেকর্ড কওে নিয়েছে। এটা আমাদের সাথে সম্পূর্ণ প্রতারণা করা হয়েছে। অপর দিকে শ্যামগঞ্জ মৌজার দক্ষিণপার্শ্বে অবস্থিত কেডিএএবআওতাধীণ মিরেরডাঙ্গা মৌজায়আবাসিকএলাকাউন্নয়নপ্রকল্প বিদ্যমানতাই কেডিএ কর্তৃপক্ষ ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে হুকুম দখলকৃত শ্যামগঞ্জ মৌজার আওতাধীন ভূমি মিরেরডাঙ্গা আবাসিক নাম করণ কওে সুকৌশলে বাস্তবায়নের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
গত ১৭/০১/২০১১ সালে তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী রবরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করে ও আমরা ক্ষতিগ্রস্থ ভূমির মালিকগণ কোন ফলাফল পাই নাই।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয় ১৩৫.১৪ একর জমিতে আমাদের প্রায় ২০০০ পরিবাওে বসত ভিটা ছিল। শিল্পকারখানা করার লক্ষ্যে কেডিএ কর্তৃপক্ষ উক্ত জমি জেলা প্রশােেসকর মাধ্যমে হুকুম দখল করলেন। চূড়ান্ত প্রাক্কলন করে ২ বছরের মধ্যে সমুদয় টাকা ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়ার বিধান থাকলেও কর্তৃপক্ষ তানা কওে মাত্র ৭৫% কম/বেশি টাকা ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে পরিশোধ করেছেন। ক্ষতিপূরণ সামান্য টাকা দিয়ে আমরা অন্য গ্রামে বা জায়গা জমিজমা ক্রয় করতে পারি নাই। ফলে আমরা এবং আমাদের পরিবারের অধিকাংশই ভাড়াবাড়িতে, রেললাইনের পাশে এমনকি ছিন্নমূল হিসাবে বসবাস করছি। কেননা যত সামান্য আমাদের যে টাকা প্রদান করা হয়েছে তা দিয়ে সকলের পক্ষে জমি কিনে বাড়ি করা সম্ভব হয়নাই। ফলে কেহ ভাড়াবাড়ীতে কেহবা রেললাইনের পাশে বস্তিতে বসবাস করছি। অন্যদিকে শিল্প-কারখানা করতে না পেওে অব্যবহৃত জমি কেডিএ কর্তৃপক্ষ পূর্বেও জমির মালিকদের ফিরিয়ে না দিয়ে আমাদের শ্যামগঞ্জ মৌজার দক্ষিণপাশ্বে কেডিএ তাদের বিদ্যমান মিরেরডাঙ্গা আবাসিক প্রকল্পের নাম করণ কওে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদননা পেয়েও ক্ষতিগ্রস্থ ভূমির মালিকদের জমি প¬øট আকাওে বরাদ্দ দিচ্ছে। যা জমির প্রকৃত মালিকদের সাথে শতঠতা, প্রতারণা ও জুলুমের সামিল। কেডিএ এর বে-আইনী ও অবৈধ হুকুম দখলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মাননীয় সুপ্রীম কোর্টেও হাই কোর্ট বিভাগে- ৩১১৬/২৪ নংরিট দাখিল করাহয়। উক্ত রিটের ভিত্তিতে মাননীয় বিচারক বৃন্দ গত ১৪/০৫/২০২৪ তারিখেরু ল পিটিশন জারি করেন যে, কেন উক্ত হুকুম দখল অবৈধ ঘোষণা করা হবেনা মর্মে নোটিশ প্রাপ্তির ৪ সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। কিন্তু কেডিএ দীর্ঘ ১ বছর হয়ে গেলেও অবহেলা করে এখনও জবাব দাখিল করে নাই।এ বিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত এগিয়ে আসার আহবান জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভূমি পুনরুদ্ধার কমিটির সভাপতি শেখ আব্দুল গাফফার সাধারণ সম্পাদক শেখ জিয়াউর রহমান কোষাধ্যক্ষ শেখ আব্দুল হান্নান আরো উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য শেখ করিম শেখ আক্কাস হোসেন সুফিয়া বেগম শেখ সাখাওয়াত খান আবু বক্কার খান নজরুল ইসলাম শেখ আব্দুল মজিদ এস এম মোস্তফা জাহিদ শেখ রুহুল আমিন খান নাসির উদ্দিন প্রমুখ।