খুলনায় ভোক্তা অধিকারের ৮ টিমের অভিযানে ১১ প্রতিষ্ঠানকে ২ লক্ষ ১২ হাজার টাকা জরিমানা

# জনস্বার্থে অভিযান চলমান রাখার আশ^াস সংশ্লিস্টদের #
স্টাফ রিপোর্টার : খুলনার নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রন রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়াধীন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় ও খুলনা বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন জেলা কার্যালয় সমূহ নিয়মিত বাজার তদারকিসহ অভিযান অব্যহত রয়েছে। ওই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১৬ জুন) ভোক্তা অধিকারের ৮ টিম তদারকিমূলক অভিযান পরিচালনা করে। এসময়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসমূহের বাজার দর ও ক্রয় ভাউচার যাচাই করা হয় এবং সকল ব্যবসায়ীকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রির নির্দেশনা দেয়া হয়। তদারকিকালে সরকার নির্ধারিত মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয় এবং কেউ সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি মূল্য নিলে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুশিয়ারি দেওয়া হয়। অভিযান কালে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বাজার তদারকি ও জরিমানা করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে গেছে, খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ সেলিমের নেতৃত্বে খুলনা মহানগরীর সদর থানার আপার যশোর রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে রোভার্স ক্যাফেকে অবৈধ প্রক্রিয়ায় খাদ্য দ্রব্য উৎপাদন করার অপরাধে ৬ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক দিনারা জামানের নেতৃত্বে খুলনা মহানগরীর সদর থানার আপার যশোর রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে কফি গ্লোরীকে মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য সংরক্ষণ ও বিক্রয় করা ও অবৈধ প্রক্রিয়ায় খাদ্য দ্রব্যে উৎপাদন করার অপরাধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মাগুরা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ সজল আহম্মেদের নেতৃত্বে সদর উপজেলার একতা কাচা বাজার ও ঢাকা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মেসার্স রিপন বীজ ভান্ডারকে মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য সংরক্ষণ ও বিক্রয় এবং নকল পণ্য প্রস্তুত করার অপরাধে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
ঝিনাইদহ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহেরের নেতৃত্বে কালিগঞ্জ উপজেলার থানা রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে পলাশ ট্রেডার্সকে পণ্যের মোড়ক যথাযথ ব্যবহার না করা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য সংরক্ষণ ও বিক্রয় করার অপরাধে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ মাসুম আলীর নেতৃত্বে মিরপুর উপজেলার মিরপুর কলেজ মোড় বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মেসার্স ভাই ভাই ট্রেডার্সকে ভেজাল পণ্য বিক্রয় করার অপরাধে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শরিফা সুলতানার নেতৃত্বে সদর উপজেলার দে-পাড়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে সিকদার ফার্মেসিকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ সংরক্ষণ ও বিক্রয় করার অপরাধে ৪ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়।
নড়াইল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জনাব শামীম হাসানের নেতৃত্বে সদর উপজেলার টার্মিনাল বাজারে অভিযান চালিয়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ সংরক্ষণ ও বিক্রয় করার অপরাধে মেসার্স কাজী মেডিসিন কর্নারকে ২ হাজার, মেসার্স শাহজালাল ফার্মেসিকে ১ হাজার ৫ শত এবং মেসার্স সরদার ডিপার্টমেন্টাল স্টোরকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। যশোর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ সেলিমুজ্জামানের নেতৃত্বে সদর উপজেলার পুলেরহাট বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিসমিল্লাহ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টকে অবৈধ প্রক্রিয়ায় খাদ্য দ্রব্যে উৎপাদন করার অপরাধে ৪ হাজার এবং জনতা মেডিকেলকে পণ্যের মোড়ক যথাযথ ব্যবহার না করা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ সংরক্ষণ ও বিক্রয় করার অপরাধে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। অভিযান চলাকালে ব্যবসায়ীদেরকে সচেতন করার পাশাপাশি বাধ্যতামূলকভাবে মূল্য তালিকা দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন ও ক্রয়-বিক্রয় ভাউচার সংরক্ষণ এবং নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি করার নির্দেশনা দেন সংশ্লিষ্টরা। অভিযানে ১১ টি প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ১২ হাজার ৫ শত টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মাদ সেলিম জানান, খুলনার বাজারে আমাদের নিয়মিত তদারকিসহ অভিযান অব্যহত আছে। ভোক্তার অধিকার লঙ্ঘিত করলে ওই ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা হিসাবে জরিমানা আরোপসহ আদায় করা হচ্ছে। খুলনার বাজার সমূহে কোনো ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠান সরকার প্রদত্ত নিয়মনীতির বাইরে ব্যবসা পরিচালনা করলে তাদের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। জনস্বার্থে আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।