যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়ায় জালিয়াতি চক্রের কবলে ৬শতক জমি : আদালতে মামলা

# তদন্ত কর্মকর্তা টাকা না পেয়ে উল্টো আসামীর পক্ষে #
যশোর ব্যুরো ঃ জমি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দখল ও আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় আদালতে ভূক্তভোগী পরিবার মামলা করলে বিজ্ঞ আদালতের বিচারক কোতয়ালি থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। ঘটনাটি যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়া এলাকায়। জাল জাতিয়াতির সাথে জড়িত ৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে সিআর মামলা করা হয়েছে। মামলাটি করেছেন, ওই আবুল বাশার। মামলায় অভিযুক্তরা হচ্ছে, ওই এলাকার মোহাম্মদ হোসেন ওরফে গুলিয়ার স্ত্রী কুলসুম বেগম,মৃত কেফায়েতুল্যার ছেলে মোহাম্মদ হোসেন বাবুয়া মোহাম্মদ হোসেন ওরফে গুলিয়ার দুই ছেলে আবিদ হোসেন, আরিফ হোসেন, মৃত বিচু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ হোসেন গুলিয়া মৃত সেকেন্দার আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক ও মৃত আব্দুল জব্বার ইদু মোহাম্মদের ছেলে বাবু ( রেল বাবু)।
অভিযোগে বাদি উল্লেখ করেন, বিগত ১৯৬১ সালের ১০ জুন রেজিঃ কৃত ৬৫৫৪ নং দলিল মূলে ৫ শতক নিজামুদ্দিনের নিকট ও উক্ত একই তারিখে রেজিঃ ৬৫৫৫ নং দলিল মূলে ৫শতক জমি ১-৩ নং আসামীর পিতা কেফায়েতুল্যার নিকট বিক্রয় ও দখল হস্তান্তর করেন। ৫শতক জমি ব্যতীত উক্ত কেফায়েতুল্যা বা তার পরিবারের কোন সদস্য আর কোন জমি ক্রয় করেনি। কেফায়েতুল্যা এস এ ৫৫৭ দাগে ২শতক ৫৫৮ দাগে ১শতক ৫৫৩ দাগে ২শতক মোট ৫শতক জমি দলখদার হন। নিজামুদ্দিন এস এ ৫৫৩ দাগে ৩শতক এবং ৫৫৬ দাগে ২শতক মোট ৫ শতক জমিতে ভোগ দখল হন। ওয়ালি মোহাম্মদ এস এ ৫৪১ দাগে ক্রয় সূত্রে ২২ শতক জমিতে স্বত্ববান ও ভোগ দখলদার থাকেন এবং হন। পরবর্তীতে নিজামুদ্দিন তদ্বীয় স্বত্ব দখলীয় ৫৫৩ দাগে ১.৭৫ শতক জমি ওয়ালী মোহাম্মদের স্বত্ব দখলীয় ৫৪১ দাগের জমির মধ্য হতে ১.৭৫ শতক জমির সাথে এওয়াজ বদল করেন। নিজামু্িদ্দন মারা গেলে তদত্যক্ত সমূদয় জমি তদ্বীয় একমাত্র ওয়ারিশ পুত্র ময়েনুদ্দিন প্রাপ্ত ও ভোগ দখলদার হয়ে এসএ ৫৪১ দাগের ১.৭৫ শতক জমি ও তদুপরিস্থিত আধা পাকা একটি টালির ঘর বাথরুম ও টিউবওয়েল এবং ৫৫৬ দাগের ১শতক জমি ও তদুপরিস্থিত এক কামরা বিশিষ্ট একটি পাকা ঘর বিগত ২০০২ সালের ১১ আগষ্ট রেজিষ্ট্রি কৃত ৯৭১৭ নং দলিল মূলে আবুল বাশারের নিকট বিক্রয় ও দখল হস্তান্তর করেন। উক্ত জমি ক্রয় সূত্রে ২.৭৫ শতক জমিতে স্বত্ব স্বামীত্ব লাভ করেন। আবুল বাশারের স্ত্রী মুন্নি বেগম বিগত ২০০২ সালের ২৪ এপ্রিল রেজিঃ কৃত ৪৮৫৩ নং দলিল মূলে এসএ ৫৪১ দাগের জমি যার আরএস রের্কড ২১০৬,২১০৭,২১১০ দাগ রুপে সুচিত হয়। উক্ত দাগ ত্রয়ের ৭শতক জমি এবং ২১০৮,২১১০ দাগে পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে ১.৮০ শতক মোট ৮.৮০ শতক প্রাপ্ত হয়ে ভোগ দখলদার হন। আবুল বাশার ২.৭৫ শতক ও আবুল বাশারের স্ত্রী ৮.৮০ মোট ২১.৫৫ শতক জমি যৌথ ভাবে প্রাপ্ত হয়ে উক্ত জমিতে বিদ্যমান বসত বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাসসহ শান্তিপূর্বভাবে অন্যেল নীরাংশে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ভোগ দখলদার হন ও আছেন। কিন্তু আসামীগন পরস্পর ষড়যন্ত্র করে যোগসাজসে আবুল বাশার ও তার স্ত্রী স্বত্ব দখলীয় ১১.৫৫ শতক জমির মধ্য হতে আর এস ২১০৭,২১০৮,২১০৯ দাগের মোট ৬শতক জমি অন্যায়মতে জোর জবরদখল করে আত্মসাত করেন। উক্ত আসামীগন উক্ত জমি গ্রাস করার জন্য কেফায়েত্যুলারস্ত্রী মৃত জরিনা খাতুন এবং ১-২ নং আসামীকে গ্রহীতা এবং কেফায়েতুল্যাকে দাতা দর্শিয়ে জাল জালিয়াতীর আশ্রয়ে বিগত ১৯৯৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রেজিঃ ৮৬১ নং একটি তঞ্চকী জাল দলিল সৃষ্টি করেন। উক্ত দলিলে ৩-৪ নং আসামী ইশাদী হিসেবে স্বাক্ষর করেন। উক্ত দলীলে যে টিপ সহি দেওয়া আছে উক্ত পিট সহি কেফায়েতুল্যা মর্মে ৫ নং আসামী বকলমে নিজ নাম সহি করেন। আসামীগণ ভিন্ন ব্যক্তিকে কেফায়েতুল্যা সাজিয়ে উক্ত ৮৬১ নং জাল দলিল সৃষ্টি করেছেন। উক্ত দলিলের তফসিলে বর্ণিত বিক্রীত জমির পরিমান ৭শতক। অথচ কেফায়েতুল্যা উক্ত খতিয়ান ও দাগে আদৌ ৭শতক জমিতে স্বামীত্ব অর্জন করেনি। তিনি কেবল ৫শতক জমিতে স্বত্ববান ও ভোগ দখল করে ছিলেন। কেফায়েতুল্যা আদৌ তার জীবন দশায় জরিনা খাতুন এর অনুকূলে ৭শতক জমি হস্তান্তর করেনি বা উক্ত পরিমান জমি হস্তান্তর করার অধিকার আদৌ তার ছিলনা। পুনরায় কুলসুম বেগম স্বীয় মাতা জরিনা খাতুন অর্থাৎ কেফায়েতুল্যার স্ত্রীকে দত্তা এবং নিজেকে গ্রহীতা দর্শিয়ে এস এ ৫৪১,৫৫৭,৫৫৮ ও ৫৫৩ দাগ দলিলে উল্লেখ করে ৫৪১ দাগের ২শতক জমি সংক্রান্তে বিগত ১৯৯৮ সালের ৬ ডিসেম্বর ১২৪৪২ নং একটি রেজিঃ দানপত্র দলিল সৃষ্টি করেন। উক্ত দলিলে ১ নম্বরকে ইশাদী হিসেবে ৫নং আসামী স্বাক্ষর করেন। উক্ত দলিলে টিপ সহি দেওয়া আছে জরিনা খাতুন এর মর্মে ৫নং আসামী বকলমে স্বাক্ষর করেন। মূলত জরিনা খাতুন কখনও সিএস ৬৬১ খতিয়ান যা পরবর্তীকালে ৬৬৭ খতিয়ান হয় উহার কোন দাগের জমিতে কোন ভাবেই ২শতক জমিতে স্বত্ববান ও ভোগ দখলদার ছিলেন না। ধূর্ত ও প্রতারক ১-৭ আসামী ভবিষ্যতে তাদের নামে আত্মসাতকৃত জমি সংক্রান্তে কোন মোকদর্মা হতে পারে আশংকায় নালিশি ৫৪১ দাগসহ অন্যান্য দাগের জমির এস এ খতিয়ান ৬৬৭ হলেও আইনের চোখে ফাঁকি দেওয়ার জন্য তাদের দলিলে নালিশি জমির এসএ খতিয়ান ৬৬১ উল্লেখ করেছেন। মূলত ৬৬১ খতিয়ানটি আদৌ এসএ খতিয়ান নহে উহা সিএস খতিয়ান হচ্ছে। বর্ণিতমতে ১-৭ নং আসামী আবুল বাশার ও তার স্ত্রীর স্বত্ব দখলীয় জমি জাল জালিয়াতি ও তঞ্চকতার মাধ্যমে পরস্পরের সহযোগীতায় দখল করেছেন। আবুল বাশার প্রায় সময় কর্মোপলকে ঢাকায় অবস্থান করেন। আবুল বাশার ঢাকা হতে যশোর এসে দেখতে পান আসামীগণ আবুল বাশারের মালিকানাধীন জমির সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে জমি দখল করেছেন। তিনি তখন ১-৭ নং আসামীকে জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বললে আসামীগণ উক্ত জমির দখল ছাড়বে না বলে প্রকাশ করতে থাকে। আসামীগণ উক্ত মামলার স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে বিগত ১৯৯৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রেজিঃ ৮৬১ নং দলিল ও ১৯৯৮ সালের ৬ ডিসেম্বর রেজিঃ ১২৪৪২ নং দানপত্র দলিলের দু’টি ফটোকপি প্রদান করে দাবি করেন যে তারা দলিল মূলে ২শতকসহ মোট ৭ শতক অর্জন করেছেন। উক্ত মামলার পর্যাপ্ত প্রমানাদী থাকার পরও বাদি আবুল বাশারের নিকট তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালি থানার এক এসআই টাকা দাবি করেন। কোতয়ালি থানার এসআই হামিদুর রহমান তদন্তর নামে টাকা চেয়ে না পেয়ে আসামীদেরকে দেওয়ানী আদালতে মামলা করার জন্য বলেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা হামিদুরের আচারনে বাদি ক্ষুব্দ প্রক্রিয়া ব্যক্ত করে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।