দৌলতপুর পোস্ট অফিসের সংস্কার কাজ শুরু

# দৈনিক প্রবাহে সংবাদ প্রকাশে টনক নড়েছে কর্তৃপক্ষের #
# এমন উদ্যোগে খুশি সেবা গ্রহীতাসহ এলাকাবাসী, দৃষ্টিনন্দন নতুন ভবনের দাবি #
মো ঃ আশিকুর রহমান : খুলনা মহানগরীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি উপশহর দৌলতপুর। এই উপশহরের একটি গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠান হলো দৌলতপুর পোস্ট অফিস বা ডাকঘর। যদিও বর্তমান আধুনিক সময়ে তথ্য প্রযুক্তি উৎকর্ষতার কারণে ডাকঘরের জনপ্রিয়তা কিছুটা কমেছে। তাছাড়া বর্তমানে বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানের কুরিয়ার সার্ভিস, ইন্টারনেটের ই-মেইলের মাধ্যমে নিমেষেই এক জায়গা হতে অন্য জায়গায় তথ্য আদান-প্রদান করা যাচ্ছে। তারপরও রাষ্ট্রীয় কাজে ডাকঘর অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে আসছে। দৌলতপুর পোস্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, অত্র প্রতিষ্ঠানটি হতে প্রতিদিনই সেবা নিতে আসা সেবা গ্রহীতারা সাধারণ চিঠিপত্র ইস্যু রেজিস্ট্রি চিঠিপত্র ইস্যু, জিইপি, ইএমএস, সাধারন মানি অর্ডার, ইলেকট্রিক মানি অর্ডার সার্ভিস, পোস্টাল ক্যাশ কার্ড, পার্সেল সার্ভিস, ভিপিপি ভিপিএস, ডাকটিকিট বিক্রয়সহ বিবিধ সেবা পেয়ে থাকেন। গুরুত্বপূর্ন এমন একটি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন জরাজীর্ণ ও বেহাল দশায় পড়ে থাকাসহ সামান্য বা ভারী বৃষ্টিপাত হলে হাঁটুপানিতে জলাদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে সেবা গ্রহীতাদের যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়, ওই বাস্তব দৃশ্যপট তুলে ধরে খুলনার বহুল প্রচারিত দৈনিক প্রবাহ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষনিকভাবে ভবনটির সম্মুখে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা দূরকরণের উদ্যোগ গ্রহন করেছেন, ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন পরে হলেও এমন উদ্যোগ গ্রহন করায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটিতে সেবা নিতে আসা একাধীক সেবা গ্রহীতাসহ এলাকাবাসী। পাশাপাশি দৌলতপুর শহরের মতো গুরুত্বপূর্ন জায়গায় এমন একটি গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠানকেও নতুন রুপে দেখতে অর্থ্যাৎ নতুন ভবনের দাবি জানিয়েছেন সেবা গ্রহীতাসহ এলাকাবাসী। পাশাপাশি অত্র প্রতিষ্ঠানটি যে জনবল সংকট রয়েছে তা পূরণেরও দাবি জানিয়েছেন তারা। এতে করে গুরুত্বপূর্ন এই পোস্ট অফিসটিতে সেবার মান আরো বাড়বে বলে মন্তব্যও তাদের। রবিবার (২২ জুন) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দৌলতপুর পোস্ট অফিসে দেখা গেছে, জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পোস্ট অফিস সম্মুখে কাজ চলমান রেখেছেন। ওই সময় সেবা গ্রহন করতে আসা একাধীক ব্যক্তিদের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে এমন উদ্যোগ গ্রহন করার জন্য তারা সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পাশাপাশি দুর্ভোগ নিয়ে এমন সংবাদ প্রকাশ করার জন্য প্রবাহ পত্রিকার প্রতিও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।
চিঠি পোস্ট করতে আসা সেবা গ্রহীতা জনি জানান, দৌলতপুর পোস্ট অফিস এই অঞ্চলের মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন ধরে এই ভবনটি জরাজীর্ণ ও ভবনের সম্মুখে সামান্য বা ভারী বৃষ্টিপাত হলে হাঁটুপানিতে জলাদ্ধতা সৃষ্টি হতো। সম্প্রতি সংশ্লিষ্টরা জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সংস্কার কাজ শুরু করেছেন। এমন উদ্যোগ গ্রহন করা জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি, পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পূর্ন ভবনটি সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
দৌলতপুর পোস্ট অফিসের পোস্টম্যান ইকবাল হোসেন জানান, বর্ষার সময় আমাদের অফিসে সেবা নিতে আসা গ্রহীতা অনেক দূর্ভোগ পোহাতেন। ইতোমধ্যে আমাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ সেই জলাবদ্ধতা নিরসনে সংস্কার কাজ শুরু করেছেন, আমি স্যারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। এতে করে বর্ষাকালে সেবা গ্রহীতাসহ আমাদের স্বাভাবিক চলাচলে সুফল মিলবে। এব্যাপারে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গাজী আছিফুল হক অনি জানান, দৌলতপুরের পোস্ট অফিসটি এই পুরাতন একটি গুরুত্বপূর্ন সরকারি স্থাপনা। এটা খুশির খবর ভবনটির সম্মুখে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্টরা উদ্যোগ গ্রহন করেছেন, তথাপী দ্রুত সময়ের মধ্যে ভবনটি নতুনরুপে দেখতে চায় এলাকার সর্বস্তরের মানুষ। এ ব্যাপারে সংশ্লিস্টদের উদ্যোগ গ্রহন করা উচিৎ বলে আমি মনে করি। দৌলতপুর থানা বিএনপি সাঃ সম্পাদক ও ৫নং ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা শেখ ইমাম হোসেন জানান, একটা সরকারি গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা এভাবে অবহেলিত ভাবে পড়ে থাকবে এটা সত্যিই দুঃখ জনক। তারপরও সংশ্লিষ্টরা জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য যে উদ্যোগ গ্রহন করেছেন এটা সেবা গ্রহীতাদের জন্য ভালো সংবাদ। সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান থাকবে, যেহেতু সারা বাংলাদেশেই কিন্তু নতুন নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে, কিন্তু জন্মলগ্ন থেকে দেখছি এই ভবনটি জরার্জীণ অবস্থায় পড়ে আছে। সেহেতু দ্রুততম সময়ের মধ্যে এখানে একটি দৃষ্টিনর্ন্দন ভবন নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করবেন। তিনি আরো বলেন, একটি পোস্ট অফিস কেবলমাত্র চিঠি-পত্রের জন্য নয়, এখানে বিভিন্ন ব্যাংকিং সেবার মতো সেবাও মেলে। সুতারং এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি দেওয়া উচিৎ মনে আমি মনে করি।
দৌলতপুর পোস্ট মাস্টার (ভারপ্রাপ্ত) শেখ. জিয়াউর রহমান জানান, খুলনা আঞ্চলিক দৈনিক প্রবাহ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর খুলনা জিপিও ও পিএমজি অফিস হতে প্রতিনিধি আসেন আসেন আমাদের অফিস পরিদর্শনে। তারা ভবনটির সার্বিক বিষয়ে অবগত হন। বিশেষ করে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য খুলনা জিপিও কর্তৃপক্ষ তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। ইতোমধ্যে অফিস সম্মুখে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য কাজ চলমান রয়েছে। এমন উদ্যোগ গ্রহন করা জন্য অফিসে আগত সেবা গ্রহীতা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগনের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন। খুলনা জেনারেল পোস্ট অফিস (জিপিও)’র সিনিয়র পোস্টমাস্টার জুরাইদা গুলশান আরা জানান, সামান্য বা ভারী বৃষ্টিপাত হলে দৌলতপুর সাব-পোস্ট অফিস সম্মুখে যে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়, ওই বিষয়টি মাথায় রেখে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ইতোমধ্যে রাস্তার কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ার দরুন সম্পূর্ন ভবনটি আবার নতুন করে করতে হবে। ডাক বিভাগের নিকট ওই ভবনটির তালিকা দেওয়া আছে, প্রকল্পের মাধ্যমে পাশ হলে কাজ শুরু হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা ।