স্থানীয় সংবাদ

ছাত্র-জনতার উপর হামলা, মামলা, অত্যাচার ও ভাঙচুরে সক্রিয় ছিলেন আ’লীগের দোসর এস আই সুকান্ত

স্টাফ রিপোর্টার ঃ জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় খুলনা সদর থানায় কর্মরত ছিলেন সুকান্ত। আগস্টে সদর থানাধীন সাত রাস্তার মোড়ে ছাত্র জনতার উপর পৈচাশিক নির্যাতন চালিয়েছেন তিনি। ছাত্র জনতার উপর হামলার বেশ কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। ফলে, ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে খুলনার সকল শ্রেণীর পেশার মানুষ। গত জুলাই আগস্টে সাবেক সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সাথে যোগ দেয় সকল সাধারণ মানুষ। খুলনার সাবেক পুলিশ কমিশনার মোজাম্মেল হকের নির্দেশে বেশ কয়েকটি স্থানে তান্ডব চালায় এই সুকান্ত। ছাত্র- জনতার উপর হামলা, মামলা, অত্যাচার ও ভাঙচুরের অভিযোগে আদালতে সুকান্তের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করা হয়। গত ২০২৪ সালের ২৮ আগস্ট খুলনা সদর থানাধীন মুন্সিপাড়া এলাকায় খুলনা মহানগর বিএনপি’র সভাপতি এডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনার বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগে সুকান্ত কুমার দাসকে প্রধান আসামি করে মোট ৯০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বাদী খুলনা সোনাডাঙ্গা থানাধীন সাত্তার বিশ্বাস সড়কের বাসিন্দা আসাদুজ্জামান হারুন। মামলার আর্জিতে উল্লেখ করা হয় শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন ও বিক্ষোভের প্রতিহিংসায় ২৮ আগস্ট রাত দেড়টা থেকে তিনটা পর্যন্ত হামলা চালায় সুকান্ত সহ আওয়ামী দোসোররা। এ সময় মহানগর বিএনপির সভাপতি মনার পঞ্চমতলা ভবনের তৃতীয় তলায় গ্যাস কাটার দিয়ে ফ্ল্যাটের লোহার গেট ও তালা কেটে উপরে ওঠে। সুকান্তের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল তাকে হত্যা করা। সে সময় মনা ও তার স্ত্রী ঘরে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বলে উল্লেখ করা হয়। তৎকালীন খুলনা সদর জোনের সরকারি কমিশনার গোপীনাথ কাঞ্জিলালের সহযোগী হিসেবে এই কর্মকান্ড পরিচালনা করেন সুকান্ত । এই মামলার দ্বিতীয় আসামি গোপীনাথ কাঞ্জিলাল। পরবর্তীতে মামলায় উল্লেখিত অন্যান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় ওই বাড়ি থেকে টাকা ও মালামাল লুট করা হয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, কেসিসির কাউন্সিলর সহ সন্ত্রাসী বাহিনীদের দ্বারা বন্দুক, বিদেশি পিস্তল, রামদা, চাইনিজ, কুড়াল, রড, জিআই পাইপ, চাপাতি ও লাঠি সোটা নিয়ে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের আঘাত করা হয় ।
মামলাটি আমলে নিয়ে গত বছরের ১১ ই ডিসেম্বর সুকান্ত কুমার দাস সহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে এফ আই আর এর জন্য আদেশ দেন অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আনিসুর রহমান। এফ আই আর হিসেবে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর পত্র পাঠালেও এখন পর্যন্ত অধিকাংশ আসামী আটক করেনি পুলিশ। দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র জনতার উপর হামলাকারীদের মধ্যে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে আটক করা হলেও, অজানা কারণে সুকান্ত ও গোপীনাথ কাঞ্জিলাল সহ খুলনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদেরকে আটক করা হয়নি।
এছাড়া ৫ই আগস্টের পূর্বে ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময়, খুলনা মহানগর মহিলা দলের সদস্য লিন্ডা ফাতেমা তুজ জোহরার মেয়েকে টেনে হিছড়ে নিয়ে যায় সুকান্ত। এ বিষয়ে লিন্ডা বলেন , শেখ হাসিনার সরকার একে একে যখন ছাত্র জনতার উপর গুলি বর্ষণ করে হত্যা করে, তখন আমার কিশোরী মেয়ে দেশকে বাঁচানোর বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করে। সাত রাস্তার মোড়ে সেদিন এই আওয়ামী পুলিশ সদস্য, আমার মেয়েকে আঘাত করে এবং পরবর্তীতে টেনে হিচড়ে পুলিশের গাড়িতে তোলে। তাকে যখন ছাত্র জনতা ধরে পুলিশকে সোপর্দ করে, কিভাবে পালিয়ে যায়? পুলিশ কমিশনার কিভাবে সুকান্ত কে ছেড়ে দেয়ার আদেশ দেয়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button