দৌলতপুরে ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তি প্রকল্পের সমাপনী কর্মশালা

স্টাফ রিপোর্টার ঃ ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পটি দক্ষ পানি ব্যবস্থাপনা, মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা, ভুমির সর্বোত্তম ব্যবহার, ইফিসিয়েন্ট মেকানাইজেশনের,ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ফসল উৎপাদন এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপর কাজ করেছে যা উপকূলীয় অঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ কৃষকদের স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তুলেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে রবি ও খরিপ মৌসুমে মোট চাষযোগ্য জমির এক-চতুর্থাংশ পতিত থাকে। এসব সমস্যা সমাধানে রিলে ফসল,মিশ্র ফসল,আন্তঃফসল,পলি-মালচ পদ্ধতি,সর্জন পদ্ধতি,ড্রিপ সেচ প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে। তাই বাংলাদেশের কৃষিকে এগিয়ে নিতে সকলকে নিষ্ঠাবান হয়ে কাজ করতে হবে। ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন (১ম সংশোধিত) প্রকল্পে বৃহস্পতিবার(২৬ জুন)সকালে ডিএই খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রকল্পের সমাপনী কর্মশালা প্রধান অতিথির আলোচনায় এ কথা বলেন ডিএই খামারবাড়ী ঢাকার প্রশাসন ও অর্থ উইং প্রাক্তন পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান। কর্মশালায় সভাপতির আলোচনায় ডিএই খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন,আমাদোং ফসলি জমিতে জৈব সারের অভাব পুরণ করতে ধনচে চাষ করতে হবে। ধান কাটার ১০ দিন পূর্বে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা চাষ বাড়াতে হবে। সেচের মিষ্টি পানির উপযুক্ত পরিকল্পনার অভাবে অনেক সময় কৃষক জমি পতিত রাখত। প্রকল্পের মাধ্যমে মিনি পুকুর খনন,বরো পিট খননের ফলে এক ফসলি জমি দুই ফসলি জমিতে রুপান্তরিত হয়েছে। পাশাপাশি জলাবদ্ধতা দূরীভূত করে জমির জো অবস্থা আনয়নের মাধ্যমে ফসলি জমি বৃদ্ধিতে অগ্রনী ভুমিকা পালন করছে। সূর্যমুখী এক্সপেলার মেশিন সরবরাহের ফলে এ অঞ্চলে সূর্যমুখীর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোকোনাট ক্লাইম্বারের মাধ্যমে নারিকেল গাছে আরোহণ ও পরিচর্যা সহজতর হয়েছে।যার ফলে নারকেল গাছীরা আরো বেশি আয় করতে পারছে। কি নোট স্পিকারের আলোচনায় ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তি প্রকল্পের পরিচালক বলেন, শেখ ফজলুল হক মনি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সাম্প্রতিক বছরগুলোতে খুলনা অঞ্চলের কৃষি ও কৃষিজীবী মানুষের জীবন জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ততা বৃদ্ধি, দুর্বল পোল্ডার ব্যবস্থাপনা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা, অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষ, জলোচ্ছ্বাস ও উচ্চ জোয়ারের প্রভাবে বেড়িবাঁধ ভেঙে কৃষি জমিতে লবণাক্ত পানির প্রবেশ, সেচ ও নিষ্কাশনের অপ্রতুলতা, মানসম্মত কৃষি উপকরণের অভাব, কৃষি শ্রমিকের অভাব, শুকনো মৌসুমে মাটি ও পানির লবণাক্ততার কারণে অনেক জমি পতিত থাকে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এবং পতিত জমি চাষের আওতায় আনতে খুলনা কৃষি অঞ্চলে “ক্লাইমেট-স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্প” গ্রহনের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রকল্পটি ৩১/১০/২০২১ ৪৯.৭১ কোটি টাকায় বাস্তবায়নে মাননীয় মন্ত্রী,পরিকল্পনা কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত হয় এবং ২০২১-২২ অর্থ বছরে কার্যক্রম শুরু করে। প্রকল্পটি খুলনা অঞ্চলের ৪টি জেলার (নড়াইল, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট) ২৮টি উপজেলা ও ২টি মেট্রো অফিসে বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রকল্পটির কার্যক্রম ৩০ জুন ২০২৫ সমাপ্ত হবে। সমাপনী কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ডিএই যশোর অঞ্চলের প্রাক্তন অতিরিক্ত পরিচালক দীপক কুমার রায়,সাতক্ষীরা ডিএই উপপরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম,খুলনা ডিএই উপপরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম, নড়াইল ডিএই উপপরিচালক মোঃ জসীম উদ্দিন,বাগেরহাট ডিএই উপপরিচালক মোঃ মোতাহার হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন প্রকল্পের মনিটরিং অফিসার ধীমান মজুমদার।এ সময় সমাপনী কর্মশালায় অংশ নিয়ে আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার,কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার,কৃষি প্রকৌশলী,উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।