ফ্যাসিসস্ট আওয়ামী লীগ মেগা প্রজেক্টের নামে অর্থ লুটপাট করে জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাপন দুর্বিষহ করে দিয়েছে : অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান

# খুলনায় সুবিধা বঞ্চিতদের মাঝে নগদ অর্থ ও সেলাই মেশিন বিতরণ #
স্টাফ রিপোর্টার ঃ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, আজকে বাংলাদেশে উন্নয়নের নামে ফানুস উড়ানো হচ্ছে, ক্ষমতাসীন নেতারা উন্নয়নের বক্তব্য দিয়ে মুখে ফেনা তুলে ফেলছে। প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশের জনগণ চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছে, জনগণের মাথার উপরে হাজার হাজার কোটি টাকার বিদেশী ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। একদিকে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী মেগা প্রজেক্টের নামে অর্থ লুটপাট করে দেশের জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাপন দুর্বিষহ করে দিয়েছে। অপরদিকে এদেশের বিশাল কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে যথাযথ কাজের প্রশিক্ষণ প্রদান করা এবং তাদের চাকুরীসহ জরুরি ব্যবস্থাপনা জাতীয়ভাবে করতে ব্যর্থ হলে দেশ আরও গভীর ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত হবে। প্রতিটি পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার মধ্য দিয়েই জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে হবে। দুঃখের বিষয় রাষ্ট্রীয়ভাবে তেমন কোনো উদ্যোগ কার্যত লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আমরা যারা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মাঠে ময়দানে কাজ করি, তাদের পাশে দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সমাজে বিত্তবান যারা আছেন তারা আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে পুরো জনগোষ্ঠীকে কর্মমুখী করতে ভূমিকা রাখবেন। সামর্থ্যবানদের জানাতে চাই আপনারা নিশ্চিন্তে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সমাজ কল্যাণমূলক এসব কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন। আমরা আপনাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সঠিক পন্থায় বঞ্চিত মানুষদের সেবায় তা ব্যয় করছি। মানবতার কল্যাণে আমাদের সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আস্থা ও আমানতদারিতার সাথে আমরা সকল কাজ পরিচালনা করে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আজকে আমরা সেলাই মেশিন বিতরণের এই অনুষ্ঠান আয়োজন করেছি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তার প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই দেশের জনগণের কল্যাণে নিবেদিত। ব্যাপকভিত্তিক ও বহুমুখী সমাজ কল্যাণমূলক কাজ আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। সমাজের সংস্কার সাধনের পাশাপাশি এই জনগণকে সাবলম্বী করা, তাদের প্রয়োজন পূরণে ভূমিকা পালন করা, মানবতার পাশে দাঁড়ানো এবং দেশের যেখানেই সংকট ও বিপদ মুসিবত সেখানে ছুটে গিয়ে মানুষের কল্যাণে জামায়াত পাশে রয়েছে। কেন্দ্রীয় সংগঠন থেকে শুরু করে সারা দেশেই আমাদের এসব কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। জামায়াতে ইসলামী এদেশে একটি ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে হলে সর্বপ্রথমে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করতে হবে। দেশের পরিবর্তন করতে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের বিকল্প নেই। দক্ষতা ও যোগ্যতা যেমন রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাঝে থাকা জরুরি, তেমনিভাবে নেতৃত্বেও মধ্যে যদি নৈতিকতা ও সততার সংমিশ্রণ না থাকে সেখানে জনগণের কোনো কল্যাণ হবে না। রাষ্ট্রের উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য একদল মানুষ থাকতে হবে যাদের মধ্যে যোগ্যতা, দক্ষতা, পেশাদারিত্ব, দেশপ্রেম এবং সমাজ পরিবর্তনের জন্য যে কোয়ালিটি দরকার তা রয়েছে। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে সেই নাগরিক তৈরির কাজ করে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী খুলনা মহানগরী সমাজকল্যাণ বিভাগের উদ্যোগে সুবিধা বঞ্চিত শ্রমিকদের মাঝে নগদ অর্থ ও সেলাই মেশিন বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথআ বলেন।
এ সময় মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন খুলনা মহানগরী সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, মহানগরী যুব বিভাগীয় সেক্রেটারি মুকাররম বিল্লাহ আনসারী, সমাজকল্যাণ বিভাগীয় সেক্রেটারি অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, জামায়াত নেতা হামিদুল ইসলাম, শওকত হোসেন, শ্র্রমিক নেতা মো. মাসুদ, জাহিদুর রহমান চুন্নু, শাহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মহানগরী আমীর আরও বলেন, মানবতার পাশে দাঁড়িয়ে জনগণের উন্নয়নের মধ্য দিয়েই জামায়াত এদেশে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তাই জনগণের সকল অধিকার প্রতিষ্ঠায় সম্মুখে থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি জাতীয় পর্যায়ে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল মানুষের আশা আকাঙ্খা পূরণ করা সম্ভব। আগামী দিনে বাংলাদেশকে সুখী সমৃদ্ধশালী এবং বিশ্বের বুকে সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য প্রত্যেক নাগরিকদের সচেতনার সাথে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অটুট রাখতে এগিয়ে আসতে হবে। জামায়াতের পক্ষ থেকে ধারাবাহিক ভাবে আমরা সমাজ সংস্কার ও মানবতার কল্যাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বেকারত্ব দূরীকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সেলাই মেশিন, নগদ অর্থ প্রদান এবং ব্যাবসায়িক বিভিন্ন উপকরণ তুলে দিয়ে সর্বদা জনগণের পাশে রয়েছি। দেশের হাজার হাজার মানুষের বেকারত্ব দূরীকরণ ও কর্মক্ষম করতে আমাদের এই প্রচেষ্টাটুকু যথেষ্ট নয়, এরজন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ।