কারবালার শহীদদের আদর্শ অনুসরণে আত্মগঠন করে দেশ ও জাতির কল্যাণে সর্বাবস্থায় সকলকে ময়দানে আপোষহীন থাকতে হবে -অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান

# পবিত্র আশুরা উপলক্ষে খুলনা মহানগরী জামায়াতের আলোচনা #
স্টাফ রিপোর্টার ঃ পবিত্র আশুরার শিক্ষায় আত্মগঠন করে দেশ ও জাতির কল্যাণে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, ‘মূলত, কারাবালার শিক্ষা হলো ত্যাগের শিক্ষা, অন্যায় ও অসত্যের কাছে মাথানত না করার শিক্ষা।’ তিনি কারবালার শহীদদের আদর্শ অনুসরণে আত্মগঠন করে দেশ ও জাতির কল্যাণে সর্বাবস্থায় সকলকে ময়দানে আপোষহীন থাকার আহবান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশে এমন এক ইনসাফপূর্ণ সমাজ কায়েম করতে চাই, যে সমাজ বিশ্বনবীর (সা.) আদর্শ অনুযায়ী পরিচালিত হবে। যেখানে মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। রাষ্ট্রই প্রত্যেক নাগরিকের সকল সমস্যার সমাধান করবে। রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রেই আইনের শাসন ও সামাজিক ন্যায়-বিচার নিশ্চিত হবে। আমরা তেমনি এক শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ তিনি বলেন, ‘মূলত, আল্লাহর আইনই নির্ভুল। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখিরাতে মুক্তির দেশে আল্লাহর আইন ও সৎলোকের শাসন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। কারণ, মানুষের তৈরি বিধান দিয়ে মানুষের কল্যাণ কোনো ভাবেই সম্ভব নয়।’ তিনি জুলাই বিল্লবকে অর্থবহ করতে গণহত্যাকারীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান। অন্যথায় ফ্যাসিবাদ নতুন রূপে ফিরে আসবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন। রোববার (৬ জুন) বিকেলে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
সভায় বক্তৃতা করেন মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম ও প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম, মাওলানা আ ন ম আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা শাহারুল ইসলাম, মাওলানা শেখ মো. অলিউল্লাহ, মীম মিরাজ হোসাইন, এডভোকেট শফিকুল ইসলাম লিটন প্রমুখ।
মহানগরী আমীর আরো বলেন, ‘পবিত্র আশুরা ইতিহাসের নানা উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলীর সাক্ষী হলেও কারাবালার বিয়োগান্তক ঘটনা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। ৬৮০ খ্রিস্টাব্দের ১০ অক্টোবর মোতাবেক ৬১ হিজরির ১০ মহররমে কারবালা প্রান্তরে বিশ্বনবীর (সা.) প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র হযরত হোসাইন (রা.) তার পরিবারের সদস্য ও সঙ্গীরা ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। যা বিশ্ব ইতিহাসের এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।’ তিনি বলেন, পবিত্র আশুরা মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি গভীর শিক্ষার দিন। কারবালার ময়দানে ইমাম হোসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবার যে আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন, তা চিরকাল মানবতা, ন্যায়বিচার এবং সত্য প্রতিষ্ঠার প্রেরণা হয়ে থাকবে। জালিমের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ইসলাম ও আদর্শের পক্ষে অটল থাকার যে বার্তা আশুরা বহন করে তা আজকের যুগেও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ইতিহাসও কারবালার আদর্শেরই ধারাবাহিকতা। ফ্যাসিবাদী শাসনামলে এই সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে কারাবরণ, মামলা, নির্যাতন এমনকি শাহাদাতের পথেও এগিয়ে গেছেন। সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জামায়াত যে ত্যাগ স্বীকার করেছে তা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে ইনশাআল্লাহ।