সুন্দরবন রক্ষায় ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানের আয়োজন ঃ হরিণের মাংস ও বিষ দেয়া মাছ না খাওয়ার শপথ শিশুদের

স্টাফ রিপোর্টারঃ বিখ্যাত কবি ভবানী প্রসাদ মজুদারের কবিতায় লিখেছেন ‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে’। এই উক্তিকে সামনে রেখে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন। তারই ধারাবাহিকতায় পৃথিবীর বিখ্যাত ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, হরিণ ও মাছ রক্ষার জন্য শপথ নিলো একদল শিশুরা। ভিন্নধর্মী আয়োজনের মাধ্যমে এ মহতি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ট্যুর অপারেটর এ্্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন (টোয়াস)। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুন্দরবন সংরক্ষণ বিষয়ক চিত্রাংকন, কুইজ ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে সুন্দরবন সংলগ্ন দাকোপ উপজেলা কালিকাবাটী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চারটি স্কুলের ৬০জন শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশ গ্রহনের মাধ্যমে ব্যতিক্রম ধর্মী এ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। এই স্কুলটি সুন্দরবন থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। এই প্রতিযোগিতায় দাকোপ উপজেলার ১৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করবে। প্রথম ধাপে ৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় যথা কালিকাবাটী, প্রফুল্ল কুমার, বিকে বড়বাঁক ও লাউডোব বানীশান্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম. নাজমুল আজম ডেভিড জানান, “আমাদের লক্ষ্য হলো শিশুদের সুন্দরবনের গুরুত্ব বোঝানো, তাদের মধ্যে প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের চেতনা সৃষ্টি করা।”প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের বই উপহার দেওয়া হয় এবং অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সুন্দরবন সংরক্ষণে উৎসাহিত করার বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টোয়াসের সভাপতি মইনুল ইসলাম জমাদ্দার, অত্র স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার সরকার, প্রফুল্ল কুমার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুকুল কুমার সরদার, সহ-সভাপতি আল-আমীন লিটন, সিনিয়র সাংবাদিক এইচ এম আলাউদ্দীন, দীপংকর রায় ও খলিলুর রহমান সুমন, বি.কে. বড়বাঁক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক লিপিকা মন্ডল, টোয়াসের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ জামান খান পপুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ শাহেদী ইসলাম রকিসহ টোয়াসের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ। পরবর্তী ধাপে আরও কয়েকটি বিদ্যালয়ে এই আয়োজন চলমান থাকবে। অনুষ্ঠানে আলোচনা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এরই মাঝে শিশুদের সুন্দরবন রক্ষার জন্য হরিণের মাংস ও বিষ দেয়া মাছ না খাওয়ার শপথ করানো হয়। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার সরকার বলেন, অনেক সংগঠন আছে যারা শুধু ব্যবসার জন্য সুন্দরবনকে ব্যবহার করে। কিন্তু টোয়াস এক্ষেত্রে ভিন্ন। তারা ব্যবসার পাশাপাশি শিশুদের সুন্দরবন রক্ষা নিয়ে যে বাস্তবধর্মী শিক্ষা দিচ্ছে তাতে সমাজে দীর্ঘস্থায়ী সুফল বয়ে আনবে বলে তিনি মনে করেন। তবে এ কার্যক্রম ধারাবাহিকতা রাখা উচিত বলে তিনি মনে করেন।