যশোর পৌরসভায় ওএমএস এর ৯জন ডিলার নিয়োগ চুড়ান্ত ৮জনকে বরাদ্ধ প্রদান করায় চাল ও আটা বিক্রি কার্যক্রম শুরু

মোঃ মোকাদ্দেছুর রহমান রকি যশোর থেকে ঃ যশোর পৌরসভা এলাকায় ওপেন মার্কেটিং সেল (ওএমএস) ডিলারের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গত ৩ জুন যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ২৪৩ জন আবেদন কারীর আবেদন লটারীর মাধ্যমে ৯জন ডিলারকে চুড়ান্ত করা হয়েছে। নতুন ডিলারগন বুধবার ৯ জুলাই থেকে ওএমএস এর আওতাধীন জন প্রতি ৫ কেজি আটা ও ৫ কেজি চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যশোর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। যশোর পৌরসভার অধীনে ওএমএস ১২ জন ডিলারের মাধ্যমে বিগত সরকারের আমল থেকে জনগনের মাঝে জন প্রতি ৫ কেজি আটা ও ৫ কেজি চাল বিক্রয় করা হতো। আটা কেজি প্রতি ২৪ টাকা দরে ১২০ টাকায় ৫ কেজি ও ৩০ টাকা দরে ১৫০ টাকায় ৫ কেজি চাল সকলের মধ্যে খোলা মেলাভাবে বিক্রি কার্যক্রম পরিচালনা হয়ে আসছিল। বিগত বছর বছর ধরে যশোর পৌরসভায় যে ১২ জন ওএমএস ডিলার এই দায়িত্ব পালন করতো তাদের মধ্যে অধিকাংশই সকলের মধ্যে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিক্রি না করে অতি সামান্য বিক্রি করে বাকী আটা ও চাল বিভিন্ন কালোবাজারে বিক্রি করে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত থাকতো বলে অভিযোগ রয়েছে। তৎকালীন সময়ে অনেক ডিলারগন সরকারী গোডাউন থেকে আটা ও চালের বস্তা উত্তোলন করে পুরোটায় বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কালো বাজারে বিক্রি করে দিয়েছে। অনেকে ওএমএস এর আটা ও চাল বস্তা থেকে রাতের আধাঁরে পলিথিন ব্যাগে ঢুকিয়ে চড়া মূল্যে বিক্রি করে আজ কোটিপতি বনে গেছেন। বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৫ আগষ্টের পর থেকে যশোর পৌরসভার অধীনে ওএমএস ১২ জন ডিলারকে বাদ দিয়ে নতুন ডিলার নিয়োগ করে এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকারের প্রতি উদ্বাত্ব আহবান জানান বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ। তারই প্রেক্ষিতে বর্তমান সরকারের আমলে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যশোর পৌরসভার অধীনে নতুন করে ১২জন ওএমএস ডিলার নিয়োগের ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারী করেন। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যশোর সদর ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ২৪৩জন ব্যক্তি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আবেদন করেন। উক্ত আবেদন যাচাই বাছাই করে পরিপূর্ন ২৪৩টি আবেদন নিয়ে এক লটারী যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত লটারীটে যশোর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড টিবি ক্লিনিক রোড,৮নং ওয়ার্ড গুলগুল্লার মোড় বেজপাড়া ও ৬নং ওয়ার্ড পিটিআই রোড ষষ্টিতলা ডিলারের কার্যক্রম স্থগিত করে বাকী ৬টি ওয়ার্ডসহ ৯জন ডিলার নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করে তাদেরকে চলতি মাসের প্রথম থেকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে লাইসেন্স প্রদান করা হয়। লাইসেন্স প্রদানের মাধ্যমের মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ৯জুলাই নবাগত ডিলারগনের মধ্যে ৮ জনকে বরাদ্ধ প্রদান করায় তারা যশোরের বিভিন্নস্থানে ওএমএস এর আটা ও চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন। প্রতি কেন্দ্রে দৈনিক ৭৫০ কেজি চাল ও ৭৫০ কেজি আটা বিক্রয় চলমান শুরু হয়েছে। একজন ডিলার সরকারী ছুটি বাদে প্রতিদিন ১৫০জনকে জন প্রতি ৫ কেজি করে চাল ও ১৫০জনকে ৫ কেজি করে আটা নির্দিষ্ট টাকায় প্রদান করবেন বলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে আরো জানাগেছে, একজন ডিলার প্রতিদিন নির্দিষ্ট যে পরিমান চাল ও আটা বিক্রি করবেন তা থেকে তিনি কেজি প্রতি ১.৫০ টাকা হারে পাবেন। সরকার এই খাতে ভূর্তকী প্রদান করেন জনগনের জন্য। আটা ও চাল প্রাপ্য ভোক্তারা দাবি জানিয়েছেন, নতুন ডিলারগনের মধ্যে কেউ যাতে চাল ও আটা বিক্রির দোকান দিতে না পারে। চাল ও আটার আলাদা দোকান দিলে ওএমএস এর জন্য বরাদ্ধকৃত আটা ও চাল বিভিন্ন মোড়কের প্যাকেটে ভরে নিজে প্রথমে লাখোপতি বনে যাবেন কয়েক মাসের মধ্যে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকসহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।