খুলনার দৌলতপুরে সাবেক যুবদল নেতার খুনের ঘটনায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা : আটক নাই

# সুষ্ঠু তদন্ত, খুনিদের গ্রেফতার ও সর্ব্বোচ শাস্তির দাবি পরিবার ও এলাকাবাসীর #
স্টাফ রিপোর্টার : খুলনার দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক নেতা মাহবুর রহমান মোল্লাকে গুলি ও রগ কেটে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে নিহতের পিতা আব্দুল করিম মোল্লা বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামীর বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। খুনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে কাজ করছে পুলিশ ও নগর গোয়েন্দা পুলিশ। ভিডিও ফুটেজ, ঘটনাস্থল হতে উদ্ধার হওয়া গুলির খোসা, গুলির পর রগ কেটে দেওয়াসহ নানা বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই ঘটনায় জড়িত কোনো আসামী আটক হয়নি। এদিকে, শনিবার বিকালে খুন হওয়া যুবদল নেতা মাহবুব মোল্লার হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত, বিচারের দাবি ও দোষীদের সর্ব্বোচ শাস্তির দাবিতে দৌলতপুরবাসী উদ্যোগে প্রতিবাদী মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুরে দৌলতপুর থানা মহেশ^রপাশা পশ্চিমপাড়া নিজ বাড়ীর সামনে প্রাইভেটকার পরিষ্কার করার সময় দুর্বৃত্তরা সাবেক যুবদল নেতা মাহবুককে গুলি ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করে। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু নিশ্চিত করে। সেখানে তার ময়নাতদন্তের কার্যক্রম শেষ করে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। ওই রাতে মহেশ^রপাশা তার জানাযা শেষে পারিবারিক করবস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। জানাযা নামাজে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী গাজী সোলায়মান জানান, মাহবুব ভাইয়ের বাসার সামনের রাস্তায় আমরা প্রাইভেটকারটি পরিষ্কার করছিলাম। জুমার নামাজের কিছু সময় আগে একটি মোটরসাইকেলে ৩জন দৃর্বত্ত এসে মাহবুব ভাইকে গুলি করে। এদের মধ্যে দুই জনের মাথায় কোনো হেলমেট ছিল না। তারা আমাকে উদ্দেশ্য করে গুলি করলে আমি পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে মাহবুব ভাইয়ের পরিবারের লোকজন এসে উদ্ধার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। নিহত মাহবুবের স্ত্রী এরিন সুলতানা জানান, রাজনৈতিক বিষয়, কুয়েটের বিষয়, এলাকার আধিপত্য, সব বিষয় মিলে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। আমার স্বামী কারো ক্ষতি করেনি। আক্রশ ও ভুলভান্তির কারণে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার স্বামীর পায়ের রগ কেটে দেয় দুর্বত্তরা। গুলিবদ্ধ অবস্থায় আমার স্বামী পড়লে থাকলেও তাকে উদ্ধারে আশপাশের কাউকে ডেকে পাননি বলে অভিযোগ করেন। নিহত মাহবুবের মা রাবেয়া বেগম জানান, আমার বাবা আর নাই। সন্ত্রাসীরা আমার বাবাকে মেরে ফেলেছে। আমি খুনিদের বিচার চাই, তাদের সর্ব্বোচ শাস্তি ফাঁসি চাই। নিহত মাহবুবের চাচা আব্দুল শহীদ মোল্লা জানান, মাহবুবকে কত বুঝিয়েছি রাজনীতি করার দরকার নাই। কোনো ঝামলার মধ্যে থাকার দরকার নাই। তারপরও সে রাজনীতি সাথে সম্পৃক্ত ছিল। আমাকে বলতো, আমি মানুষের জন্য রাজনীতি করি। মাহবুব এই এলাকার চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে, নানা অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতো। ওই কারণেই তাকে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। আমি আমার ভাইপো হত্যার বিচার চাই। এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবু সালেহ মো. রায়হান জানান, খুনের রহস্য উৎঘটনে আমরা কাজ শুরু করেছি। আমরা একটি ভিডিও ফুটেজ পেয়েছি, ওই ফুটেজের সূত্রে ধরে তদন্ত চলছে। কিলিং মিশনে ৩জন ছিল, তাদের কাছে একাধীক অস্ত্র ছিল। খুনিরা স্থানীয় না ভাড়াটিয়া এ বিষয়ে তদন্ত করা করে দেখা হচ্ছে, একই সাথে গুলির ছোঁড়ার পর রগ কেটে হত্যার বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।