দিঘলিয়ায় শ্বশুর কর্তৃক পুত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ থানায় মামলা : শ্বশুর গ্রেফতার

দিঘলিয়া প্রতিনিধি ঃ দিঘলিয়া উপজেলা সেনহাটি ইউনিয়নের হাজীগ্রাম ৩ নং ওয়ার্ডে শ্বশুর কর্তৃক পুত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে দিঘলিয়া থানায় ধর্ষক শ্বশুরকে আসামী করে মামলা দায়ের হয়েছে। দিঘলিয়া থানা পুলিশ ধর্ষক শ্বশুরকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে।
ভিকটিম ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২ নভেম্বর দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নের হাজীগ্রাম নিবাসী আজিজুল শেখের পুত্র রাজিব শেখের সাথে বাতিভিটা গ্রামের জনৈক কন্যা সন্তানের প্রেমের সম্পর্কে বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকে নারী লিপ্সু শ্বশুর আজিজুল শেখের সদ্য বিবাহিত পুত্রবধূর প্রতি কুদৃষ্টি ফেলে। সে নানাভাবে পুত্রবধূকে কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। এবং এ সব কথা কারো কাছে প্রকাশ করলে তার স্বামীসহ তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে জেলে যাওয়ার কথা বলে। এভাবে এক সময় নিজ পুত্রকে বাড়ি থেকে দূরে পাঠিয়ে দিয়ে বাড়ি ফাঁকা করে পুত্রবধূকে ঔষধ সেবন করিয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করে। এ ঘটনা তার স্বামীর নিকট জানিয়েও কোনো প্রতিকার পায়নি। বরং সে হয়ে পড়েছে বাকরুদ্ধ জিম্মী। এভাবে পুত্রবধূকে মাসের পর মাস ধর্ষণ করে এসেছে নরপিশাচ শ্বশুর আজিজুল শেখ (৫৫)। বিরুদ্ধে পুত্রবধূকে (২১) ধর্ষণের অভিযোগে শ্বশুর আজিজুল শেখ (৫৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে গ্রেফতারকৃত আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার গৃহবধূর পিতা বাদী হয়ে দিঘলিয়া থানায় শ্বশুরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুত্রবধূ বলেন রাজিবের সাথে প্রেমের সম্পর্ক জের ধরে কোর্ট ম্যারেজ করা হয়। মেয়ের পরিবার থেকে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। বিবাহের পর তিন মাস সংসার সুখেই যাচ্ছিল। কিন্তু শ্বশুর আজিজুল শেখ কাল হয়ে দাঁড়ায় তার দাম্পত্য জীবনে। ড়তার ওপর শ্বশুরের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে নববধূর প্রতি।
৩ মাসের মাথায় শ্বশুর আজিজুল শেখ তার পুত্র যখন বিলে কাজে যায় সেই সুযোগে দীর্ঘদিন ধরে পুত্রবধূকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। গৃহবধূ এ প্রতিবেদককে জানান, স্বামী রাজিবকে ননদের বাড়িতে তিন দিনের জন্য পাঠিয়ে দেয় শশুর। বাসায় শ্বশুর আর আমি ছাড়া কেউ থাকে না। সেই সুযোগে শশুর ঘুমের ট্যাবলেট এনে সুকৌশলে আমাকে(পুত্রবধূকে) খাওয়ায় এবং শারীরিক চাহিদা পূরণ করেন। এ বিষয়টি স্বামীকে জানালে তার স্বামী তাকে বলে আব্বা যা বলবে তুই তাই করবি। এ সমস্ত বিষয় কাউকে বলতে নিষেধ করে। কাউকে বললে জীবন শেষ করে দিবে বলেও হুমকি দেয়। দীর্ঘদিন যাবত শ্বশুর জোরপূর্বক পুত্রবধূকে শারীরিক নির্যাতন করে আসছে।
গত শুক্রবার (২৫ জুলাই) ছেলেকে জুম্মার নামাজে মসজিদে পাঠিয়ে শশুর পুত্রবধুকে সময় দিতে বলে। পুত্রবধূ রাজি না হলে সাথে সাথে নির্যাতন নেমে আসে। হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত ও নাকের উপর আঘাত করে। গৃহবধূ নির্যাতনের কথা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পুত্রবধুর নানা, মামা ও খালা শ্বশুর বাড়ি থেকে ভিকটিমকে নিয়ে আসে। ঘটনার পর ওই গৃহবধূ তার নানি, খালাকে শ্বশুরের নির্যাতনের লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেয়। সকল ঘটনা তাদের নিকট খুলে বলেন। এ ঘটনা ভিকটিমের পিতা জানার পর সাংবাদিকদের ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানান এবং দিঘলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। দিঘলিয়া থানা পুলিশ ধর্ষককে গ্রেফতার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। দিঘলিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ এইচ এম শাহীন বলেন, ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ধর্ষক শ্বশুরকে গ্রেফতার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ তদন্ত সাপেক্ষে গ্রহণ করা হবে।