আওয়ামলীগ নেতা আশারাফুলের অপকর্মের ফিরিস্তি

# অন্যের জমি,বাড়ী, ঘের দখল ছিল তার নেশা #
শেখ ফেরদৌস রহমান: মাথায় সব সময়ে পরতেন টুপি। আর দাড়ি রাখতেন মুখে খুব ডিজাইন করে। নামের আগে ব্যবহার করতেন আলহাজ¦ সবার কাছে তার তার পরিচিত ছিল ছাত্র লীগের আশরাফ নামে। দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর শুরু হয় তার বাড়ী দখলের নেশা। আর এসব করে অঢেল সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন তিনি। তার স্ত্রী ফোজিয়া আক্তার রুপা ও তার ছেলে এক এম আরাফ বিনতে আশরাফ। এমনকি আওয়ামলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালিন তার বিরুদ্ধে বাড়ী জমি দখল সহ নানা অপকর্মে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ এর খোঁজে নামে দুদক। খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সাংগঠানিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ আশরাফুল ইসলামের অপকর্মের ফিরিস্তি যেন লিখে শেষ করা যাবেনা। ভুয়া কাগজ তৈরি করে রাতারাতি সাধারণ মানুষকে বের করে দিয়ে তার সম্পদ দখলে নেয়া ছিল তার কাজ। এমনকি মৎস ঘেরে মাছ থাকা অবস্থায় উচ্ছেদ করেছেন মৎস চাষিদের। এভাবে খুলনা শহরে নামে বে নামে তার রয়েছে প্রায় অর্ধশত প্লাট, বাড়ী, এমনকি আওয়ামলীগ সরকার ক্ষমতা থাকাকালিন জোরপূর্বক বাড়ী দখল নেওয়ায় ২০১৯ সালে তার বিরুদ্ধে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন খালিশপুর আবাসিক এলাকার ৩৯ নং বাড়ীর বাসিন্দা ভুক্তভোগী রেজাউল ইসলাম রাজা নামে এক ব্যাক্তি। খালিশপুর গোয়ালখালী এলাকার বাসিন্দা মৎস চাষি ভুক্তভোগী মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, আওয়ামলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সাবেক এই নেতা তৎকালিন প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ানের আশির্বাদে হয়ে উঠে বেপরোয়া। আমি সহ প্রায় ২৫-৩০ জন মৎস চাষিকে বেকারত্বের বোঝা চাপিয়ে দেন এই আওয়ামলীগ নেতা। গোপালগঞ্জে বাড়ী আর স্থানীয় প্রতিমন্ত্রীর ছত্রছায়ায় আমাদের মৎস ঘেরে লাখ লাখ টাকার মাছ থাকা অবস্থা দখল করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। আমাদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করে । আমাদের জোর পূর্বক উচ্ছেদ করেন তিনি। এছাড়া কথা হয় মোঃ আহাদ হোসেন নামে এক ভুক্তভোগীর সাথে তিনি বলেন, খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতালের পাশে বর্তমান হাউজিং আবাসিক এলাকা ছিল একটি লেক । আর এই লেকে খন্ড খন্ড করে আমরা সবাই মৎস চাষ ও ধান উৎপাদন করতাম। এর কারণ এই জায়গাটি আমাদের পূর্ব পুরুষের ছিল। সরকার ১৯৬২ সালে ভুমি অধিগ্রহণ করেন। তবে এই দখলবাজ আওয়ামলীগ নেতা আশরাফুল জোর করে আমাদের উচ্ছেদ করেন। আর তার সাথে ছিল গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারা। আমরা মাত্র একদিন সময় চেয়েছিলাম মাছগুলো উঠিয়ে নেয়ার জন্য। আমাদের সেই সময় পর্যন্ত দেয়নি। এছাড়া সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও খুলনা গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ যোগ সাজসে এই জায়গাটি বালু ভরাট করে। সড়ক তৈরি করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে। পাশাপাশি এখানে প্রতি জমির প্লট বরাদ্দ সময়ে আশরাফুল ইসলাম নামে বেনামে আত্মীয় স্বজন নামে একাই প্রায় ১০টির মত প্লট নেয়। এছাড়া অভিযোগ করেন কাপড় ব্যবসায়ি মুন্সী রেজাউল করিম বলেন, এই আশরাফ একে সবাই ছাত্রলীগের আশরাফ নামে পরিচিত। আওয়াম লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর হয়ে উঠে বেপরোয়া। আমার বাড়ীটি ছিল খালিশপুর পুরাতন থানার পিছনে। বাড়ীট হঠাৎ করে ভুয়া জাল কাগজ তৈরি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে একদিনের মধ্যে আমাকে জোর করে বাড়ী থেকে বের করে দেয় আশরাফ বাহিনি। এছাড়া অভিযোগ আছে খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতালে আউটসোর্সিং কর্মচারীদের বেতনের একটি অংশ তিনি প্রতি মাসে কেটে নিতেন ।পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারী পাটকল গুলোতে নাম মাত্র মূল্যে স্ক্রাপসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ পাচার করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন। এমনকি নিউজপ্রিন্ট মিলে যন্ত্রাংশ সহ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। তবে গেল ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনা পতন হলে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। এছাড়া জনশ্রুতি আছে তিনি স্থানীয় এক বিএনপি’র নেতার বাড়ীতে দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকার পর তার সহযোগীতায় নিরাপদ দূরত্বে চলে গেছেন।