২৮ জুলাই প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তাল ছিল খুলনা

আন্দোলনের বিপক্ষে আওয়ামী আইনজীবীদের কর্মসূচি, জেলা কারাগারের নিরাপত্তা জোরদার
স্টাফ রিপোর্টার : সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন তুংগে উঠলে চব্বিশের ২৮ জুলাই প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তাল ছিল খুলনা। একদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে কর্মসূচি, অপরদিকে আন্দোলনের বিপক্ষেও আওয়ামী আইনজীবীদের কর্মসূচি ছিল। এসব পরিস্থিতিতে খুলনা জেলা কারাগারের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। নজরদারি বাড়ানো হয় কারাগার ও এর আশপাশের এলাকায়। বাতিল করা হয় কারারক্ষিসহ কর্মরতদের ছুটিও। বন্ধ রাখা হয় কারাবন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ।
অপরদিকে, পুলিশের ধড়-পাকড়ে আন্দোলনকারী ছাত্রদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। গ্রেপ্তার করা হয় ছাত্রদল নেতাসহ বেশ কয়েকজনকে। মামলায় আসামি করা হয় হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে। তবে, এসব রক্তচক্ষু এবং ভয় ও আতঙ্ক উপেক্ষা করে ছাত্ররা আন্দোলন কর্মসূচিতে রাজপথেই ছিলেন।
এদিকে, ওইদিন সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন দমাতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে খুলনা মহানগরীতে ছাত্রদল নেতা নাজিম উদ্দিন ভূইয়া শামীমসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গভীর রাতে নগরীর ডাকবাংলা ও মুসলমানপাড়া এলাকা থেকে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। হরিণটানা থানায় গেল বছরের ১৭ জুলাই পুলিশের দায়েরকৃত বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।
নাজিম উদ্দিন ভূইয়া শামীম ছাত্রদল খুলনার আযম খান কমার্স কলেজ শাখার আহবায়ক ছিলেন। তিনি নগরীর ডাকবাংলা মোড় সংলগ্ন ঘড়ি মঞ্জিল গলির মৃত, আব্দুর রব ভূইয়ার পুত্র।
গ্রেফতার অপর দু’জন হচ্ছে- স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. রিপন শেখ ও মো. সিরাজ শেখ। এর মধ্যে রিপন নগরীর মুসলমানপাড়া এলাকার মৃত, হানিফ শেখের পুত্র এবং সিরাজ একই এলাকার মৃত, মুনসুর শেখের পুত্র। তবে সিরাজ যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
ওই সময় ছাত্রদল নেতা নাজিম উদ্দিন ভূইয়া শামীমের ঘণিষ্টরা অভিযোগ করেন, পুলিশ বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) রাত দেড়টার দিকে বাসার গ্রীল কেটে ভিতরে প্রবেশ করে নাজিম উদ্দিন ভূইয়া শামীমকে গ্রেফতার করে। এতে বাসায় তার পরিবারের সদস্যরা ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়েন। পরদিন শনিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হরিণটানা থানার এসআই সুব্রত হালদার গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেন।
এর আগে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৭ জুলাই জিরোপয়েন্ট অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। সেখান থেকে খানজাহান আলী (রূপসা) সেতু ভাংচুরসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর কাজের ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনার অভিযোগ এনে ওইদিনই হরিণটানা থানায় অজ্ঞাত পরিচয়ের ৪শ’/৫শ’জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন থানার এসআই গোপীনাথ সরকার। ওই মামলায় এ তিনজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রদল নেতা নাজিমুদ্দিন শামীম সেদিনের ভয়ংকর স্মৃতি তুলে ধরে বলেন, ২০১০ সাল থেকে আমার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু, তখন থেকে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছি। ছাত্রদের অধিকার আদায়ের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করতে দ্বিধাবোধ করিনাই। রাজপথ ছিল আমাদের ঠিকানা। হাসিনা সরকার বিদায় করার জন্য আন্দোলনে ১৭টি বছর পার করলাম। দেখতে দেখতে কোটা সংস্কার আন্দোলন পাইলাম সর্বশেষ। শাহবাগ থেকে যখন কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়, তখন খুলনার শিববাড়ি এবং জিরোপয়েন্টেও আন্দোলন হয়। আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সাথে খুলনা মহানগর ছাত্রদলের সর্বপ্রথম মনে হয় আমিই ভূমিকা রাখি। এর আগে সরকার বিরোধী আন্দোলনের কমার্স কলেজ ছাত্রদলের আমি আহবায়কের দায়িত্ব পালন করি। তখন কমার্স কলেজসহ খুলনা মহানগর রাজপথে বিভিন্ন রকম কর্মসূচি পালন করি। ঠিক তখন থেকে আমি প্রশাসনের টার্গেটে ছিলাম। খুনি হাসিনার সরকারদলীয় লোকজন ও হাসিনার এজেন্ট বাস্তবায়ন করার জন্য প্রশাসনিক লোকজন অনেকদিন ধরে আমাকে টার্গেট করে রেখেছিল । ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ২৭ তারিখ রাত একটার সময় খুলনা সদর এসি গোপীনাথ, সদর থানার এসআই সুকান্তের নেতৃত্বে মোট ১৭ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমার বাসায় আসে। তারা আমার বাসায় ঢুকতে তিনটি গেট ভেঙে ফেলে এবং আমার বাসায় থাকা আমার মামাসহ আমাদের ওই ফ্ল্যাটের লোকজনকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করে। পরবর্তীতে আমার মামাকে তারা বিভিন্নভাবে হেনস্থা এবং হয়রানি করে, আমার বাসা থেকে নগদ অর্থ নিয়ে যায় ওই সময়। আমার বাসার লোকজনকেও নানা রকমভাবে হেনস্তা করে।
পরবর্তীতে রাতে আমাকে সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আমায় আমাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করে সকাল ৯ টায় সদর থানা থেকে আমাকে হরিণটানা থানায় নেওয়া হয়। হরিণটানা থানায় আমাকে ১৭ তারিখের একটি মামলায় আমাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
তিনি বলেন, কারাগারের জীবনটা সত্যি খুব কঠিন। যে কারাগারে না যাবে সে জীবনটা অনুভব বা বুঝতে পারবে না। ২৭ তারিখ বিকালেই কোর্ট থেকে আমাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই মামলা আমাকে রিমান্ড চাওয়া হয়, বারবার পুলিশ ও মামলায় রিমান্ড চাইছিল। আদালতে বাইরের পরিবেশ উত্তেজনা দেখে ওই মামলার রিমান্ড দেওয়া হয়নি তখন আমাকে। কারাগারে প্রত্যেকটা দিন মনে হতো যেন এক বছরের সমান। কারাগারে টিভির পর্দায় সব সময় দেখতাম আন্দোলন বাইরে গরম হচ্ছে। তখন মনে করতাম যদি বাইরে থাকতাম তাহলে মনে হয় যেন আন্দোলন করে আরো বেশি মজা পেতাম। হঠাৎ করে ৫ তারিখে সরকার পতন হয়। টিভির পর্দায় দেখে আমরা জেলে খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়ি। তখন আমরা সবাই জেলের ভিতরে মিছিল করি। ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় জেল সুপার এসে বলে, ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের মামলায় যারা যারা গ্রেফতার হইছেন তারা আগামীকাল দুপুরের আগেই মুক্তি পাবেন । ৯ দিন জেলেছিলাম আমি, জেল সুপারের ব্যবহার অতটা সুবিধার দেখলাম না, ৫ তারিখ দুপুর দুটোই জেল সুপার এমন ভাবে ব্যবহার করলো মন হয় যেন সে আমাদের আপনজন। যাইহোক ৬ তারিখে আমাদের জামিনের কাগজ আসলো ১২ টার সময় বিকেলে আমরা জামিনে মুক্তি পেলাম। তখন মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ জেল গেট আমাদের জন্য অপেক্ষা করে। জেল গেট থেকে শুরু করে ডাকবাংলা সোনালী চত্বর পর্যন্ত আমরা বিজয় মিছিল করতে করতে আসি।
তিনি আরও বলেন, আমরা যখন জেলে ছিলাম তখনকার সময় আমাদের সাথে জেলে কোনো সাক্ষাৎ ছিল না। আমার মা প্রতিদিন জেল গেটের সামনে অপেক্ষা করতো আমাকে একটু দেখার জন্য। তবে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
আন্দোলনের বিপক্ষে আওয়ামী আইনজীবীদের কর্মসূচি :
অপরদিকে, আন্দোলনকারীদের দেশদ্রোহী উল্লেখ করে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ২৮ জুলাই বেলা সাড়ে ১২ টায় জেলা আইনজীবী সমিতির বঙ্গবন্ধু হল রুমে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ প্রতিবাদ সমাবেশ করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন এ্যাড: কাজী বাদশা মিয়া। সঞ্চালনা করেন এ্যাড: এস এম তারিক মাহমুদ তারা। প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডঃ মোঃ সাইফুল ইসলাম। সভায় বক্তৃতা ও উপস্থিত ছিলেন এ্যাডঃ পারভেজ আলম খান, এ্যাডঃ এনামুল হক, এ্যাডঃ কে. এম ইকবাল হোসেন, এ্যাডঃ নব কুমার চক্রবর্তী, এ্যাডঃ বিজন কৃষ্ণ মন্ডল, এ্যাডঃ মিনা মিজানুর রহমান, এ্যাডঃ নিরঞ্জন কুমার ঘোষ, এ্যাডঃ নিমাই চন্দ্র রায়, এ্যাডঃ শিকদার হাবিবুর রহমান, এ্যাডঃ আরিফ মাহমুদ লিটন, এ্যাডঃ হিমাংশু চক্রবর্তী, এ্যাডঃ সমর চন্দ্র মন্ডল, এ্যাডঃ তমাল কান্তি ঘোষ, এ্যাডঃ সেলিনা আক্তার পিয়া, এ্যাডঃ সমীর ঘোষ, এ্যাডঃ এম এম মাসুদ আলী, এ্যাডঃ ফরিদ আহমেদ, এ্যাডঃ গাজী রাজু আহমেদ, এ্যাডঃ আক্তারুজ্জামান খান জীবন, এ্যাডঃ হেমন্ত কুমার সরদার, এ্যাডঃ সন্দীপ রায়, এ্যাডঃ ইলিয়াস খান, এ্যাডঃ আহাদুজ্জামান, এ্যাডঃ ফালগুনী ইয়াসমিন মিতা, এ্যাডঃ রেহেনা চৌধুরী, এ্যাডঃ নাসরিন নাহার পেস্তা, এ্যাডঃ আখতারুন্নেছা তিতাস, এ্যাডঃ শিউলি আক্তার লিপি, এ্যাডঃ মোল্লা আবেদ আলী, এ্যাডঃ তামিমা লতিফ স্নিগ্ধা, এ্যাডঃ আইয়ুব হোসেন, এ্যাডঃ শেখ আশরাফ আলী পাপ্পু, এ্যাডঃ মেহেদী হাসান, এ্যাডঃ নাহিদ রাসেল, এ্যাডঃ শাম্মী আখতার, এ্যাডঃ রোজানা তানহা, এ্যাডঃ নওশীন বর্ষা, এ্যাডঃ শিউলি সেরনিয়াবাদ, এ্যাডঃ নুরুন্নাহার লাকী, এ্যাডঃ নাজিয়া বর্না, এ্যাডঃ আফরোজা রোজি, এ্যাডঃ রোকেয়া খানম, এ্যাডঃ অশোক গোলদার, এ্যাডঃ হোসনে আরা, এ্যাডঃ মির্জা নুরুজ্জামান, এ্যাডঃ শামীম আহমেদ পলাশ, এ্যাডঃ শাহারা ইরানি পিয়া, এ্যাডঃ আব্দুল আজিজ, এ্যাডঃ আশরাফুল আলম, এ্যাডঃ রকিবুল ইসলাম মিন্টু, এ্যাডঃ খোরশেদ আলম, এ্যাডঃ আব্দুল কুদ্দুস, এ্যাডঃ জিয়াদুল ইসলাম, এ্যাডঃ রথীন্দ্রনাথ সরদার, এ্যাডঃ শিলা মনি, এ্যাডঃ শিল্পি মনি, এ্যাডঃ মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, এ্যাডঃ রিমা খাতুন এনি, এ্যাডঃ মেহেদী হাসান, এ্যাডঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, এ্যাডঃ রামপদ, এ্যাডঃ গাজী আনোয়ার, এ্যাডঃ শেখর দেবনাথ, এ্যাডঃ আব্দুল জলিল, এ্যাড মোঃ একরামুল কবির, এ্যাড: মোঃ মতিয়ার রহমান, এ্যাডঃ দূর্গাপদ বাওয়ালী, এ্যাডঃ তাপস কুমার রাহা, এ্যাডঃ ইশ্বর চন্দ্র সানা, এ্যাডঃ পলাশী মজুমদার, এ্যাডঃ ইন্দ্রজিৎ শীল, এ্যাডঃ কে, এম মিজানুর রহমান, এ্যাডঃ শিরিন আক্তার পপি, এ্যাডঃ কাজী সাইফুল ইমরান, এ্যাডঃ মো: আসাদুজ্জামান গাজী মিল্টন, এ্যাডঃ ওমর ফারুক রনি, এ্যাডঃ সরদার আশরাফুর রহমান দিপু, এ্যাডঃ এস,এম আব্দুস সাত্তার, এ্যাডঃ প্রজেশ রায়, এ্যাডঃ মোঃ মনিনুর ইসলাম মনির, এ্যাডঃ সাবিরা সুলতানা হ্যাপি, এ্যাডঃ খাদিজা আক্তার টুলু প্রমুখ।
খুলনায় নাশকতার চার মামলায় আসামি সহস্রাধিক :
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে নাশকতার অভিযোগে খুলনা মহানগরীর চারটি খানায় পৃথক অভিয়োগে মামলা দায়ের করা হয়। এ চারটি মামলায় সহস্রাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। চব্বিশের আন্দোলনের বিষয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনার উপদেষ্টা ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিনহাজুল আবেদীন সম্পদ বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধ করে সকল শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেওয়ার পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা উদ্যোগ নেয় এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মীর মুগ্ধ ভাইয়ের শাহাদাতের জন্য তারই রেখে যাওয়া ক্যাম্পাসে গায়েবানা জানাজা আদায় করার। প্রশাসন এখানে বাধ সাধে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী এমনকি শিক্ষকদেরও ঢুকতে দিতে চায় না। অবশেষে ছাত্রদের তোপের মুখে তারা হার মানতে বাধ্য হয়। বিদ্রোহী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মীর মুগ্ধ ভাইয়ের শাহাদাতের জন্য তারই রেখে যাওয়া ক্যাম্পাসে গায়েবানা জানাজা আদায় করা হয়।
তিনি বলেন, শুরুর দিক থেকেই জাতীয় ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে সক্রিয় থাকলেও মূলত খুবির হল বন্ধ হওয়ার পর থেকে জাতীয় ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা আন্দোলনের মূল হাল ধরে। যা আন্দলনের গতিকে আরও বেগবান করতে থাকে। এর পরপরই সরকার কারফিউ জারি করে। আন্দোলনকে স্থবির করার চেষ্টা করলেও তিনিসহ আল শাহরিয়ার, হেলাল, জহুরুল তানভির, আয়মান আহাদ, হামিম রাহাত, তারেক, মিরাজ, রাফসান সহ অনেকেই আন্দোলনে প্রান সঞ্চার করতে খুলনার সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখেন। কারফিউ চলাকালে তারা নিজেদের মুখ ঢেকে বিভিন্ন ক্যাম্পাসের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করতেন। আন্দোলন পর্যবেক্ষণের জন্য তিনি ও অন্যান্য সমন্বয়করা শিববাড়িতে নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির নিচে, ময়লাপোতা মসজিদ ও সিটি মেডিকেল হাসপাতালের নিচে, সাত রাস্তা ও রয়েল মোড়ের ক্ষেত্রে কাচ্চি ঘর, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে অবস্থান নিতেন। পরবর্তীতে আন্দোলন ক্রমশ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ-ি পেরিয়ে গল্লামারি জিরো পয়েন্ট, ছাচিবুনিয়া, মোহাম্মদ নগর, রূপসা ব্রিজ, সোনাডাঙ্গা, ময়লাপোতা, এবং শিববাড়িসহ পুরো খুলনাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। খুলনার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আন্দোলনের পদচারণা দেখা যেতে থাকে এবং সাধারণ মানুষও এতে যুক্ত হতে থাকে।
মিনহাজ আরও বলেন, ২৮ জুলাই মূলত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল রোডের বাসাগুলোতে প্রচুর পরিমানে ধর পাকড় হতে থাকে। শহরের নানা যায়গায় অটোরিকশা থামিয়ে ফোন চেক করা হয়। যদি আন্দোলনে যাচ্ছে মনে হতো তাহলে আটক করতো পুলিশ। ওই সময়ে আমাদের মুল তথ্যকর্তা হিসেবে সাংবাদিকবৃন্দ সহযোগিতা করতেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।