গণঅভ্যুত্থানের পর খুলনার সড়কে শৃংখলা ফেরাতে দায়িত্ব পালন করে বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট সদস্যরা

স্টাফ রিপোর্টারঃ ৫ আগস্ট বিজয়ের পর নতুন বাংলাদেশে সড়কে চরম বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়। ট্রাফিক পুলিশ পুরোপুরি দায়িত্ব ছেড়ে দেয়। এ সুযোগে সড়কে দেখা দেয় চরম বিশৃংখলা। গনঅভ্যুত্থানের পর সড়কের শৃংখলা ঠিক রাখতে মাঠে নেমে পড়ে ছাত্র-জনতার পাশাপাশি বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) ও রোভার স্কাউট সদস্যরা। তারা খুলনার গুরুত্বপূর্ন মোড়ে মোড়ে দায়িত্ব পালন করে। ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন শুরু করে বিভিন্ন স্কুল কলেজের এসব শিক্ষার্থীরা। তারা প্রতিদিনই ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে থাকে। তাদের এ কার্যক্রম চলতে থাকে পুরো আগস্ট মাস জুড়ে। ধীরে ধীরে ট্রাফিক পুলিশ মাঠে নামতে শুরু করলেও এসব শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরে যায়। ওই সময় শিববাড়িমোড়ে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী দিঘলিয়া সরকারি এমএম মজিদ কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ইসমাইল হোসেন নাঈমের সাথে। তিনি বলেন, ‘আমি দৌলতপুর সরকারি মুহসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করি ২০২৪ সালে। অনলাইনে ভর্তির জন্য আবেদন করলে দিঘলিয়া এমএম মজিদ কলেজে চান্স পাই। সে মতে, ওই কলেজে ভর্তি হই। কিন্তু ওই কলেজে বিএনসিসির কোন ইউনিট না থাকায় আমি মুহসিন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সহায়তা স্কুলের বিএনসিসি ড্রেস নিয়ে সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করি। প্রথম দিকে দৌলতপুর বেবীস্ট্যান্ডে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মত আমিও সিভিল পোশাকে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করি। মুহসিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম যখন আমাকে বিএনসিসি পোশাক দিতে রাজি হলো তখন আমি নগরীর শিববাড়িমোড়ে সড়কে শৃংখলা ফিরাতে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করি। যদিও আমি পরে খালিশপুর সরকারি মুহসিন কলেজে ট্রান্সফার হয়ে এসেছি। যার বিএনসিসি আইডি নং-২০২৩-৩৭৮, ক্যাডেট নং-২৩২১০৪১২।” ওই সময় শিববাড়িমোড়ে সিভিল পোশাকে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী সিটি কলেজ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মোহাম্মদ রাহাত বলেন, দেশের এ সংকটকালিন সময় ছাত্ররা যদি এগিয়ে না আসে তাহলে দেশের অনেক ক্ষতি হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট পালিয়ে গেলেও সড়কে দেখা দিয়েছে বিশৃংখলা। সেই বিশৃংখলা ঠিক করতে কলেজের অন্যান্য বন্ধুদের সাথে আমিও শিববাড়িমোড়ে এসছি ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করি। ওই দিন প্রখর রোদের মধ্যেই আমি ও বন্ধুরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করে সড়কে শৃংখলা ফিরাতে চেষ্টা করি। তিনি আরো বলেন, ‘এখানে এসেছি দেশের সেবা করতে। সড়কের যানবাহন চলাচল নিরাপদ করতে ও যানজটমুক্ত রাখতে শিক্ষার্থীরা এসেছি। দেশটা আমাদেরই। সুন্দর করে সাজাতে সবার সহযোগিতা দরকার। এসময় নগরীর অন্যান্য মোড়ে রোভার স্কাউট দলের সদস্যদের ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। দেশের সংকটে বিএনসিসি ও রোভার স্কাউটের সদস্যরা সড়কের শৃংখলা ফেরাতে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করার শিক্ষকরা তাদের ধন্যবাদ জানান। সরকারি দৌলতপুর মুহসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর খুলনার সড়কে শুরু হয় চরম বিশৃংখলা। এ সময় আমার স্কুল থেকে ১৫ জন বিএনসিসি ও ১২ জন রোভার স্কাউট সদস্য সড়কের শৃংখলা ফিরাতে দায়িত্বে নিয়োজিত হয়। তারা প্রায় ১৫ দিন একটানা দৌলতপুর মুহসিন মোড়, বেবীস্ট্যান্ড ও নতুন রাস্তার মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করে। এ সময় তার স্কুল থেকে সদ্য এসএসসি পাশ করা বিএনসিসি ক্যাডেট ইসমাইল হোসেন নাঈমকে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করার জন্য স্কুলের বিএনসিসি পোশাক দেয়া হয়। সে কয়েকদিন ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন শেষে আবার পোশাক ফিরিয়ে দেয় বলে তিনি জানান।