খুলনায় সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার ঃ সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিনকে জবাই করে নির্মমভাবে হত্যা ও সারা দেশে সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার বিচারের দাবিতে খুলনা সাংবাদিক ক্লাবের আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৮ আগষ্ট) বিকাল ৫ টায় খুলনার শিববাড়ি মোড়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিভিন্ন গনমাধ্যমে কর্মরত সংবাদকর্মী ও খুলনা সাধারণ নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতি আমানুল্লাহ বলেন, গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে জবাই করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের হত্যাকা- সাংবাদিকদের নিরাপত্তার কথা পুনরায় ভাবিয়ে তুলেছে। এখনই সময় সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এ দেশে সাংবাদিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনস্বার্থে কাজ করে যাচ্ছেন। অথচ এখন তাদেরই হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। এটি এদেশের গণতন্ত্র ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি। আমরা দ্রুত সাংবাদিক তুহিনের খুনিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
জাতীয় নাগরিক পার্টির খুলনার সংগঠক আহম্মেদ হামিম রাহাত বলেন,গাজীপুরে একজন নিরপরাধ সাংবাদিককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। যা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়ে গেছে। বিগত দিনে সাংবাদিকদের কন্ঠ রোধ করা হয়েছে। কিন্তু ৫ই আগষ্টের পরে ইন্টেরিয়ম সরকার তার পরিবর্তন করতে পারেনি। সাংবাদিকসহ অরাজনৈতিক প্লাটফর্মে নগ্ন হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। যার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই যে, সাংবাদিক তুহিন হত্যাকান্ডে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেফতার করে জনসম্মুখে বিচার করা হোক। তিনি আরো বলেন, আমরা সব সময় যৌক্তিক দাবীর পক্ষে আছি। খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ। পুলিশের কাছে আমরা দাবি জানিয়ে বলতে চাই, মাদক- সন্ত্রাসকে কঠোর হস্তে দমন করুন।
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাড. বাবুল হাওলাদার বলেন, একটি রাষ্ট্র একটি দেশের সমাজের দর্পন গনমাধ্যম। কিন্তু আজ সাধারন মানুষ ও গনমাধ্যমকর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। যা। যা খুবই হৃদয় বিদারক ঘটনা। অপরাধীরা অপরাধ করছে। কিন্তু প্রশাসনের কাছে দাবী অপরাধীদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, খুলনার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবস্থা খারাপ। খুলনার সাধারন মানুষ রাত হলে আতংকে থাকে। প্রতিদিন খুন, হামলা এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলছে। সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, সাংবাদিক তুহিন হত্যাকান্ডের ঘটনা এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। আপনাদের ব্যবস্থা অতি শিঘ্রই নিতে হবে। প্রশাসণকেও আরো কঠোর হতে হবে।
মানববন্ধনে সাংবাদিক ক্লাবের সাধারন সম্পাদক সোহাগ দেওয়ান বলেন, অনতিবিলম্বে সাংবাদিক তুহিন হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। দেশের সর্বস্তরের মানুষ এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এছাড়াও খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক খারাপ। প্রতিদিন হত্যা,গুলি এবং কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটছে। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই।
তিনি আরো বলেন,খুলনায় পুলিশের ভূমিকা হতাশাজনক। পুলিশের কার্যক্রমের পাশাপাশি র্যাবের কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে। নৌবাহিনী এবং সেনাবাহিনীর আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে কাজ করছে। কিন্তু নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীকে দেখা যায় মোড়ে মোড়ে গাড়ির কাগজপত্র চেক করছে। এ কাজ তো পুলিশের। নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীর উচিত দাগি ও তালিকাভুক্ত আসামীদের আইনের আওয়াতায় আনা। খুলনায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে গুলি, হামলার ঘটনা ঘটছে। হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটছে। নগরবাসীাসী প্রতিটা সময় এখন আতংকের মধ্যে থাকে। প্রশাসনের অনতিবিলম্বে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে কাজ শুরু করতে হবে।
এসময় খুলনা সাংবাদিক ক্লাবের সভাপতি ও মাই টিভির খুলনা প্রতিনিধি শিশির রঞ্জন মল্লিকের সভাপতিত্বে বিশেষ বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক খুলনা প্রতিদিনের সম্পাদক সোহাগ দেওয়ান। সঞ্চালনায় ছিলেন ক্লাবের প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও দৈনিক প্রবাহের প্রতিবেদক মুশফিকুর রহমান মেহেদী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন খুলনা সাংবাদিক ক্লাবের সহ-সভাপতি ও যায় যায় দিন পত্রিকার খুলনা ব্যুরো প্রধান আতিয়ার রহমান, দপ্তর সম্পাদক ও খুলনা প্রতিদিন মাল্টিমিডিয়া প্রতিবেদক বি আর মাসুদ, দৈনিক জনকণ্ঠের প্রতিবেদক মোঃ আরিফুর রহমান, সংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও বিজনেস বাংলাদেশের খুলনা প্রতিনিধি মো: মামুন রেজা, প্রচার সম্পাদক ও কে টিভি ২৪ এর মোঃ মেহেদী হাসান এবং কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ শামীম হোসেন, কাজী আতিক, আব্দুল্লাহ আল মুহাইমিন ও আসিফ আমিনসহ প্রমুখ।