সীমাহীন দখলদারিত্বের কবলে পূর্ব রূপসা ঘাটসহ বাসস্ট্যান্ড

# চরম দুর্ভোগ যাত্রীদের : নিরব ভূমিকায় প্রশাসন #
মোঃ বেনজীর হোসেন, রূপসা প্রতিনিধি : সীমাহীন দখলদারিত্বের কবলে পূর্ব রূপসা ঘাটসহ বাসস্ট্যান্ড, চরম দুর্ভোগ যাত্রীদের হলেও নিরব ভূমিকায় প্রশাসন। সরজমিনে দেখা যায়, একের পর এক দখলদারিত্বের কারণে পূর্ব রূপসা ঘাটের দুই প্রান্ত সহ বাসস্ট্যান্ড সংকুচিত হয়ে আসছে। এমনকি পূর্ব রূপসা ঘাটের দক্ষিণ প্রান্তের বটতলাসহ বিশ্রামের মনোরম পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে অবৈধ দখলদারদের কারণে। রূপসা নদী পার হয়ে আসা সাধারণ যাত্রীরা এই স্থানটি অতিক্রম করতে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে ঘাটের দু’পাশে যেভাবে অবৈধ দোকানপাট, ভ্যান গাড়ি, মাহিন্দ্র ও যাত্রীবাহী বাস এলোমেলোভাবে থাকে তাতে কোন সাধারণ মানুষ এখান থেকে নির্বিঘেœ চলাফেরা করতে পারে না।প্রতিদিন রূপসা নদী পারাপার হয়ে থাকে প্রায় অর্থ লক্ষাধিক মানুষ। জীবন জীবিকার তাগিদে কেউ গ্রাম থেকে শহরে যাই আবার কেউ শহর থেকে মফস্বলে আসে। পূর্ব ও পশ্চিম রূপসা ঘাটের দুই প্রান্ত অবৈধ দখলদারদের দখলে থাকার কারণে এইসব যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। ঘাটের উপরিভাগে এই দখলদারিত্ব নতুন ঘটনা না ঘটলেও পূর্ব রূপসায় ঘটছে নতুন নতুন ঘটনা। কেননা পূর্ব রূপসা ঘাট পার হয়েই বিশাল বাস টার্মিনাল। আর এই বাস স্ট্যান্ডের অধিকাংশ স্থান দখল করে নিয়েছে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা। অবৈধ দখলদারদের অনিয়ম অব্যবস্থাপনায় অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। পূর্ব রূপসা ঘাটের প্রবেশ মুখের দুই প্রান্তে অসংখ্য ছোট ছোট দোকান বসেছে। স্ট্যান্ডের জায়গা দখল করেই এই দোকানিরা তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর এখানকার দখলদারিত্ব আরো বহু গুনে বেড়েছে। যখন যার মনে চায় সে এসে পূর্ব রূপসা ঘাটের ফাঁকা জায়গায় একটা দোকান বসিয়ে যাচ্ছে। ঘাটের মুখে বাস, মহেন্দ্র ও ভ্যান গাড়ি এলোমেলো ভাবে যাত্রী উঠোনামা করে প্রতিনিয়ত। গত কয়েক বছর আগে বিদেশি সংস্থা জাইকার অর্থায়নে পূর্ব রূপসা ঘাটের উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তে নদীর পাড়ে টেকসই উন্নয়নসহ সাধারণ মানুষের বসে নদীর মনোরম পরিবেশ উপভোগের জায়গা করা হয়। ইতিমধ্যে সেসব জায়গাও দখল হয়ে গেছে। এখন দোকানদারদের খরিদ্দারদের বসার জায়গা হয়েছে জাইকার তৈরিকৃত ওই পাকা আসনগুলি। পূর্ব রূপসা ঘাটের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হলো বটতলা। এই বটতলার চারপাশে রয়েছে সাধারণ মানুষের বসার স্থান। বিভিন্ন সময় এই বটতলায় রাজনৈতিক প্রোগ্রামও হয়ে থাকে। অথচ দখলদাররা বাদ রাখেনি এই জায়গাটিও। এখানকার ফাঁকা জায়গাগুলি যে যেভাবে পারছে ছোট ছোট দোকান বসিয়ে দখল করে নিচ্ছে। সেই সাথে অলিখিত ভ্যান স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে এই জায়গাটি। সরজমিনে দেখা গেছে পূর্ব রূপসা ঘাটের দুই প্রান্ত ও বটতলার আশেপাশে প্রায় দুই শতাধিক দোকান রয়েছে। দিনের বেলা যেমন তেমন সন্ধ্যার পর ঘাটের প্রবেশ মুখসহ বাসস্ট্যান্ডের এই জায়গাটির পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে ওঠে। হরেক রকমের দোকানপাট ও মাদক ব্যবসায়ী এবং সেবনকারীদের আনাগোনা বাড়ে সীমাহীনভাবে। এছাড়া বিদেশি সংস্থা জাইকা বাস স্ট্যান্ড উন্নয়ন করার সময় এখানে একটি যাত্রী ছাউনি সেডঘর তৈরি করেন। এই ঘরটি মূলত করা হয় যাত্রীদের বসা এবং শিশু সন্তানদের দুধ পান করানোর জন্য। জাইকার তৈরিকৃত ওই শেড ঘরটি দখল করে করা হয়েছে হোটেল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পূর্ব রূপসা বাস স্ট্যান্ড পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য গাড়ি প্রতি ২০ টাকা করে আদায় করা হয়। সে হিসেবে প্রতিদিন দেড় শতাধিক গাড়ি থেকে আদায় করা হচ্ছে ৩০ হাজার টাকা। গাড়ি প্রতি ২০ টাকা করে দেওয়ার পরও কেন বাস স্ট্যান্ড পরিচ্ছন্ন থাকছে না এমনকি এই টাকা কোথায় যাচ্ছে তার সঠিক উত্তর নেই খোদ মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের কাছে।
এ ব্যাপারে রূপসা-বাগেরহাট বাস, কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মহিউদ্দিন শেখ বলেন, পূর্ব রুপসা ঘাট ও বাসস্ট্যান্ডের জায়গা দখলদারিত্ব সহ অনিয়মের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। উপজেলা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।