কৃষকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় লোকজ’র মতবিনিময় সভা

স্টাফ রিপোর্টার : স্থানীয় প্রাকৃতিক সম্পদে কৃষকের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা,আইনগত ভিত্তিএবং কৃষির অগ্রগতি বিষয়ে খুলনা অঞ্চল কৃষি বিভাগের সাথে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে দৌলতপুর ডিএই খুলনা অঞ্চলের মিলনায়তনে কৃষকের আবেদন ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। লোকজ ও মৈত্রী কৃষক ফেডারেশনের আয়োজনে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো: রফিকুল ইসলাম।এসময় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন খুলনার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ নজরুল ইসলাম, ঢাকা জেলা উপ-পরিচালক ড. সাফায়েত আহম্মেদ এবং সঞ্চালনা করেন সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া সিনি: প্রোগ্রাম অফিসার কৃষিবিদ ড.এস এম ফেরদৌস। এসময় উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন লেখক গবেষক গৌরাঙ্গ নন্দী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মনোরঞ্জন ম-ল, বটিয়াঘাটা উপজেলা কৃষি কমকতা মো: কৃষিবিদ আবু বকর সিদ্দিক, লোকজ-এর নিবাহী পরিচালকদেব প্রসাদ সরকার, মৈত্রী কৃষক ফেডারেশনের সভাপতির বীন্দ্রনাথ ম-ল, সাধারণ সম্পাদক বিভাষ ম-ল, দৈনিক কালের কন্ঠের খুলনা বুরে্যা প্রাধান এইচ এম আলাউদ্দীন, যমুনা টিভি ব্যুরো প্রধান শেখ আল এহসান, ডেইলী স্টারের খুলনা প্রতিনিধি দীপংকর রায়, দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোটার হাসান হিমালয়, দৈনিক প্রবাহ’র স্টাফ রিপোর্টার এম রুহুল আমিন, বরণপাড়া কৃষক সংগঠনের সভাপতি দীপ্তি মল্লিক, দাকোপ টেংরার চর কৃষক সংগঠনের সভাপতি হরিপদ চক্রবতী, বটিয়াঘাটা বন্ধু কৃষক সংগঠনের সভাপতি স্বপন ফৌজদার, কারিতাস খুলনার প্রোগাম অফিসার জেমস সুকুমার ম-ল প্রমুখ। ডিএই খুলনার অতিরিক্ত পরিচালক বলেন,খুলনা অঞ্চলের সকল জেলা প্রশাসনের সাথে বিভাগীয় কমিশনার দপ্তরে আমাদের সাথে আলোচনা হয়েছে, তারা বলেছেন কোন নদী, খাল ইজারা দিবেন না। নদী,খাল ইজারা দিলে সরকারের তেমন রাজস্ব আসে না। তবে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। জলাবদ্ধতার কারণে ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে যায়। ইতিমধ্যে খুলনা অঞ্চলে ২৪৪ টি খাল খননের অনুমোদন দিয়েছেন সরকারের পক্ষ থেকে। কৃষকের বীজ ও সার ব্যবস্থাপনার দিকে সকলের নজর রাখার আহবান জানান। এ সময় বক্তারা বলেন, কৃষি নির্ভর আমাদের বাংলাদেশ। এ দেশের ৭৪.৬ শতাংশ মানুষ কৃষক। যাদের বসবাস গ্রামে। দেশের উন্নয়ন করতে হলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কৃষি ও কৃষি ভিত্তিক সামাজিক উন্নয়নের বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। বাংলাদেশে বর্তমানে জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫২ লক্ষ। প্রতিবছর ২০ লক্ষ মানুষ জনসংখ্যায় নতুন করে যোগ হচ্ছে,অপর দিকে ১% হারে কমে কৃষি জমি। এছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণায়ণের কারণে দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে যার প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের কৃষি,পরিবেশ ও মানুষের উপর। দিশেহারা হচ্ছে কৃষক।গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে যার প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের কৃষি, পরিবেশ ও মানুষের উপর। দিশেহারা হচ্ছে কৃষক। আধুনিকতার নামে বর্তমান বাংলাদেশের কৃষির নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীর হাতে।
মতবিনিময় সভায় বক্তরা দাবী জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে কৃষি খাতের উন্নয়ন ও কৃষকদের অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের আইন ও নীতিমালা রয়েছে। এই আইন গুলো কৃষি জমি রক্ষা,বিপণন ব্যবস্থা, সার,সেচ, এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয় গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে। বিএডিসি আইন-১৮,ভূমি সংস্কার আইন-২৩, কৃষি জমি (যথাযথ ব্যবহার ও সংরক্ষণ) আইন-২২ (খসড়া), কৃষি বিপণন আইন-১৮,ভূমি জোনিং ও সুরক্ষা আইন-২৪ (খসড়া) নীতিমালার বা আইনের আলোকে নদী-খাল ইজারা প্রদান বন্ধ করে কৃষির জন্য পানি’ প্রবাহ বা প্রদানের অগ্রাধিকার নীতি বাস্তবায়ন,ভরাটকৃত নদী-খাল খননসহ মিস্টি পানি ধারণ ও সেচের ব্যবস্থা করে সকল মৌসুমে ফসল উৎপাদন নিশ্চিত,দাকোপ ও বটিয়াঘাটার সকল নদী-খালের অবৈধ নেট,পাটা,কোমর ও বাঁধ অপসারণ,সকল ওয়াপদা বাঁধের ভিতর লবণ পানি ঢোকানো বন্ধ করে কৃষি উপযোগী পরিবেশ তৈরি, কৃষি ও সেচ কাজে পানি ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণ ভাবে স্থানীয় কৃষকের নিযন্ত্রনে রাখার ব্যবস্থা,ন্যয্য মূল্যে সার,বীজ প্রতারণার বিরুদ্ধে ক্ষতি পুরণ আদায়ে সহযোগিতা প্রদান সহ খুলনার দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা কে তরমুজ চাষের জন্য কৃষি অর্থনৈতিক জোন ঘোষণার দাবী জানানো হয়।