অভয়নগরে জনিসহ চারজনের নামে নতুন চাঁদাবাজি মামলা

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি ঃ যশোরের অভয়নগরে আলোচিত নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির পদ স্থগিত সাংগঠনিক সম্পাদক সেই আসাদুজ্জামান জনিসহ চারজনের নামে চাঁদাবাজির নতুন মামলা দায়ের করা হয়েছে। নওয়াপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী মেহেদী হাসানের স্ত্রী রাবেয়া সুলতানা সুমি বাদী হয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুবাইদা রওশন আরা অভিযোগ আমলে নিয়ে অভয়নগর থানার ওসিকে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন, উপজেলার গুয়াখোলা গ্রামের কামরুজ্জামান মজুমদারের ছেলে আসাদুজ্জামান জনি, একই গ্রামের রমজান আলীর ছেলে সাকির আহমেদ, জয়নালের ছেলে কামরুজ্জামান মিঠু ও খোকা মাস্টারের ছেলে সম্্রাট হোসেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মেহেদী হাসান নওয়াপাড়া বাজারের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। গত ৭ জুলাই আসাদুজ্জামান জনি মেহেদীকে তার অফিসে ডেকে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। সেই দিন মেহেদী ধার করে এক লাখ টাকা চাঁদা পরিশোধ করেন। পরে কামরুজ্জামান মিঠু ফোন করে মেহেদীকে আবারও জনির অফিসে আসতে বলেন। অফিসে পৌঁছালে জমি বিক্রির ৩০ লাখ টাকা লাভ হয়েছে বলে জনি মেহেদীর কাছে ওই টাকা চাঁদা হিসেবে দাবি করেন। এ সময় মেহেদী কিছু কথা বলতে চাইলে তাকে হত্যার হুঁমকি দেওয়া হয়। পরে উল্লেখিত আসামিরা মারপিট ও খুন-জখমের ভয় দেখিয়ে মেহেদীর কাছ থেকে তিনটি একশ’ টাকার ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। স্বাক্ষর করার পর মিঠু ও সম্্রাট মোটরসাইকেলযোগে মেহেদীকে তার বাড়ি পৌঁছে দেন এবং ৩০ লাখ টাকার চেক দিতে বলেন। ভয়ে মেহেদীর স্ত্রী ৫০ হাজার টাকা স্বাক্ষরিত একটি এবং দুটি স্বাক্ষরবিহীন চেক তাদের হাতে দিলে তারা দ্রুত চলে যায়।
পরে ৫০ হাজার চেকটি ব্যাংকে গিয়ে তারা উত্তোলন করেন। পরদিন তারা স্বাক্ষরবিহীন চেকে স্বাক্ষর করাতে মেহেদীকে চাপ প্রয়োগ করেন। সে স্বাক্ষর করতে না চাইলে তাকে মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করা হয়। গুরুতর আহত মেহেদীকে প্রথমে যশোর, পরে ঢাকায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে মেহেদীর পরিবার আসামিদের ভয়ে নিজ বাড়িতে থাকতে পারছেন না। চাঁদাবাজদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ মেহেদী গত ১৩ আগস্ট যশোর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
এর আগে গলা পর্যন্ত বালুতে পুতে চার কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের ঘটনায় নওয়াপাড়া বাজারের জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহনেওয়াজ কবীর টিপুর স্ত্রী আসমা খাতুন বাদী হয়ে আসাদুজ্জামান জনিসহ ৬ জনের নামে অভয়নগর থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় আসাদুজ্জামান জনি ও তার পিতা কামরুজ্জামান মজুমদার এবং কামরুজ্জামান মিঠু কারাগারে রয়েছেন। পলাতক রয়েছেন কথিত সাংবাদিক মফিজুর রহমান দপ্তরী, সম্রাট হোসেন ও সৈতক হোসেন হিরা।