রুপালি ব্যাংকের সিঁড়ি থেকে অভিনব কায়দায় শিক্ষিকার টাকা চুরি

মোল্লাহাট প্রতিনিধি ঃ বাগেরহাটের মোল্লাহাটে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় অভিনব কায়দায় এক স্কুল শিক্ষিকার বেতন ও ভাতার টাকা চুরির অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার রূপালী ব্যাংক লিমিটেড মোল্লাহাট শাখার সিঁড়িতে এ ঘটনা ঘটে। প্রকাশ্য দিবালোকে এমন ঘটনা ঘটায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগী সরকারি ওয়াজেদ মেমোরিয়াল মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রাজিয়া খাতুন (৪৮) জানান, তিনি ব্যাংক থেকে বেতন ও ভাতার মোট ৫৫ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। ব্যাংকের সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অবস্থাননেয়া বোরখা পরিহিত কয়েকজন নারী তাকে ঘিরে ধরে। এ সময় কোনো এক অজ্ঞাত ওষুধ প্রয়োগ করে তাকে দুর্বল করে তার সাথে থাকা হাতব্যাগ থেকে টাকাগুলো নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
সিসি ফুটেজ যাচাই করে দেখা যায় ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে বেরিয়ে যাবার সময় তার সামনে ও পেছনে কয়েকজন বোরকা পরা নারী তাকে সিঁড়িতে ঘিরে ধরে, এর পর তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ভুক্তভোগী ব্যাংক থেকে বেরিয়ে সোজা রাস্তার অপরপাশে বিকাশের দোকানে গিয়ে ব্যাগে খুলে দেখেন টাকা নেই।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “ঘটনার পরপরই আমি ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে সাহায্য চাইলে তিনি স্থানীয় আত্মীয়-স্বজনের সহায়তা নিতে বলেন। পরে সহকর্মী কয়েকজন শিক্ষক এলে ম্যানেজার সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে দাবি করেন, টাকা উত্তোলনের পর আমি ব্যাংক থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম। তাই বাইরের ঘটনার জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ছিনতাইকারীরা ব্যাংকের ভেতর থেকেই ভুক্তভোগীকে লক্ষ্য করেছিল এবং বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটায়। তাদের চলাফেরার ধরন দেখে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি সংঘবদ্ধ চক্রের কাজ।
এ বিষয়ে মোল্লাহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফজলুল হক জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যাংক ও আশপাশের দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনায় শিক্ষক সমাজ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তারা অভিযোগ করেছেন, ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের টাকা উত্তোলনের সময় নিরাপত্তার ঘাটতির কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এলাকাবাসীর দাবি, বড় অঙ্কের টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে পুলিশি পাহারা বা অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত।
এ বিষয়ে শাখা ব্যবস্থাপক মো. হাবিবুর বসার সুমন বলেন, “শিক্ষিকা টাকা তুলে বের হওয়ার প্রায় ১৫ মিনিট পর ফিরে এসে টাকা চুরির অভিযোগ করেন। আমরা তাকে স্থানীয়দের সহযোগিতা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।” তবে কেন তিনি ব্যাংক থেকে প্রশাসনিক সহযোগিতা নেয়ার পরিবর্তে স্থানীয়দের সহযোগিতা নিতে বললেন এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।