খুলনায় স্ত্রী’র পরিকল্পনায় হত্যার শিকার হন যুবদল নেতা শামীম

আদালতে দোষ স্বীকার
স্টাফ রিপোর্টার : খুলনার ডুমুরিয়ায় যুবদল নেতা এস এম শামীম (৩৬) হত্যাকা-ের ঘটনায় তার স্ত্রী ও শ্যালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকা-ে শামীমের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি (২৮) ও তার মামাতো ভাই মো. ওবায়দুল্লাহ হাওলাদার বাদলের (১৭) সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে জানায় পুলিশ। এ অভিযোগে গত সোমবার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানায় খুলনা জেলা পুলিশ। এসময় জেলা পুলিশ সুপার টি এম মোশাররফ হোসেন লেন, বৃষ্টির তার স্বামী শামীমের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পারিবারিক বিরোধ ছিল। এ কারণে প্রায়ই বৃষ্টিকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো তার স্বামী। নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে সে তার স্বামীকে খুন করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার তিনদিন আগে সে তার মামাতো ভাই ওবায়দুল্লাহকে তার বাড়িতে ডেকে নেন। ঘটনার আগের দিন ২১ শে আগস্ট বৃষ্টি ওবায়দুল্লাহকে জানান যে তার স্বামী শামীম বিভিন্ন সময় তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করার কারণে সে শামীমকে হত্যার পরিকল্পনা করেছে। এরপর তিনি ওবায়দুল্লাহকে জিজ্ঞেস করেন শামীমকে খুন করতে পারবে কিনা। এতে ওবায়দুল্লাহ সম্মতি জানায়। দুজনের পরিকল্পনায় ঘটনার দিন ২২ আগস্ট রাতের খাবার শেষে শামীম শেখ ও তার স্ত্রী তৃতীয় তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটে যান। কিছুক্ষণ পর ওবায়দুল্লাহও তৃতীয় তলায় যান। ওবায়দুল্লাহ ছাদে গিয়ে বৃষ্টির রেখে দেওয়া একটি ছুরি নিয়ে পুনরায় তৃতীয় তলায় আসেন। তখন ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি শামীমকে খুন করার জন্য কীভাবে কোপ দিতে হবে তা ইশারায় ওবায়দুল্লাহকে দেখিয়ে দেন। একপর্যায়ে ছুরি দিয়ে ওবায়দুল্লাহ শামীমের ঘাড়ে কোপ দেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ও মৃত্যুবরণ করেন। এসময় ওবায়দুল্লাহ ও বৃষ্টি ছাদে গিয়ে পরিকল্পনামতো ছুরিটি পাশের জলাশয়ে ফেলে দিয়ে দ্বিতীয় তলায় এসে শামীমের মায়ের সঙ্গে স্বাভাবিক কথাবার্তা বলতে থাকেন। পুলিশ গ্রেপ্তারকৃত ওবায়দুল্লাহ ও বৃষ্টির দেওয়া তথ্যমতে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ছুরিটি পাশের জলাশয় থেকে উদ্ধার করে। পুলিশ সুপার আরও বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের পর তাদের দেওয়া জবানবন্দিতে তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছেন। তবে এই মামলাটি আরও গভীরভাবে তদন্ত চলমান রয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে ডুমুরিয়ার আঠারো মাইল এলাকায় যুবদল নেতা এস এম শামীমকে (৩৬) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত শামীমের মা রশিদা খাতুন (৬২) বাদী হয়ে ডুমুরিয়া থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে রোববার মামলা করেন।