নেতৃবৃন্দের নামে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা অপপ্রচার, অবৈধভাবে কেঁশবচন্দ্র সংস্কৃত কলেজের কমিটি গঠন ও রাধা মাধব মন্দিরের রান্না ঘর দখল চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে খুলনা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যাপক মাধব চন্দ্র রুদ্র। গত ১২ সেপ্টেম্বর কেঁশবচন্দ্র সংস্কৃত কলেজের সভাপতি দেবাংশু কুমার চক্রবর্তী কর্তৃক সংবাদ সম্মেলনে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের নামে নানা অপপ্রচারের জবাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, অবৈধভাবে গঠিত কেঁশবচন্দ্র সংস্কৃত কলেজ কমিটির কতিপয় সদস্য পূজার ভোগ রান্নার স্থানটি জোরপূর্বক দখল নিয়ে সেখানে দোকান ঘর নির্মাণ করতে চায়। কিন্তু কোন ধর্মীয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যবসার সুযোগ নেই। একইভাবে বিগত ৮-১০ বছর পূর্বে দেবাংশু কুমার চক্রবর্তী ও কৃষ্ণপদ রায় ওরফে কেপি রায় দোকান ঘর নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভবনের প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলেছিল। তৎকালীন প্রশাসনের ভৎর্সনায় তারা পুনরায় প্রাচীর নির্মাণ করতে বাধ্য হন। ওই সময় তাদের উদ্দেশ্য সফল না হওয়ায় পুনরায় তারা একই চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা অপপ্রচার প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মন্দির ও কলেজের অভ্যন্তরিন বিষয়ে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ কোনভাবেই সম্পৃক্ত নয়। অথচ কলেজ কমিটির অবৈধ সভাপতি দেবাংশু কুমার চক্রবর্তী তার সংবাদ সম্মেলনে পূজা উদযাপন পরিষদেরর সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার কুন্ডসহ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে যে মিথ্যাচার, শিষ্ঠাচার বহির্ভূত ও অনৈতিক বক্তব্য প্রদান করেছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। পূজা উদযাপন পরিষদ সম্পূর্ণ একটি অরাজনৈতিক সংগঠন দাবী করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সংগঠনের কোন সদস্য কোন রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে জড়িত নন। রাজনৈতিক দলের যে ট্যাগ লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে তা উদ্দেশ্য প্রণিত ও ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টা মাত্র। চিন্ময় দাস প্রভুর পান্ডা হিসেবে যে মিথ্যাচার করা হয়েছে তা সঠিক নয় বরং ব্যক্তি আক্রোশ ও অন্যকে হেয় করার নোংড়া মানসিকতা। কেননা চিন্ময় দাস প্রভুর “সনাতনী জাগরণ মঞ্চ” নামে একটি সংগঠন রয়েছে। খুলনা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের কেউ এই সংগঠনের সাথ জড়িত নন। কেঁশবচন্দ্র সংস্কৃত কলেজের সভাপতি দেবাংশু কুমার চক্রবর্তী সম্পর্কে অভিযোগ তুলে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, তিনি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বসে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন ও আমিষ জাতীয় খাবার খান। অথচ ভগবানের ভোগ ও ভক্তদের প্রসাদ রান্নার সময় সেবায়েতদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। মন্দির অভ্যন্তরে কলেজ সভাপতির এধরণের আচরণ শোভনীয় নয়। এছাড়াও বিগত কলেজ কমিটির সভাপতি সরকারি বিএল কলেজ ও সরকারি আজম খান কমার্স কলেজের সাবেক অধ্যাপক সুধীর কুমার পালকে চরমভাবে অপমান অপদস্ত করেছেন বর্তমান কলেজ কমিটির অবৈধ সভাপতি দেবাংশু কুমার চক্রবর্তী। এতে দুঃখ পেয়ে সুধীর কুমার পাল পদত্যাগ করেন। আরও অভিযোগ করে বলা হয়, কলেজের পাশেই দেবাংশু কুমার চক্রবর্তী “সেন্ট্রাল ক্লাব” নামে একটি ক্লাব পরিচালনা করতো। তার তত্ববধানে ওই ক্লাবে নিয়মিত মাদক ও জুয়ার আসর বসানো হতো। এসকল অপকর্ম পুনরায় চালু করতেই তিনি মন্দির থেকে সেবায়েত ও সাধু-সন্ন্যাসীদের বিতাড়িত করতে চান। সংবাদ সম্মেলনের আরও বলা হয়, ‘কেঁশবচন্দ্র সংস্কৃত কলেজ, কেঁশবচন্দ্র সার্বজনীন মন্দির ও রাধা মাধব মন্দির একই আঙ্গিনায় অবস্থিত। দখল ও আধিপত্য বিস্তারের মানসিকতা পরিহার করে তিনটি প্রতিষ্ঠানই সুন্দরভাবে একে অপরের প্রতি সহযোগীতার মনোভাব নিয়ে পরিচালিত হোক মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ এটাই প্রত্যাশা করে। কোন প্রতিষ্ঠানের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে যদি কোন সমস্যা হয় এবং এবিষয়ে যদি সহযোগীতা কামনা করে কেবল সেই ক্ষেত্রেই মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ সহযোগীতা করে। সকলের মাঝে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য, শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ সর্বদাই সচেষ্ট থাকে।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পষিদের কেন্দ্রিয় উপদেষ্টা বিজয় ঘোষ, খুলনা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা অশোক সেন, কমলেশ সানা, সভাপতি শ্যামল হালদার, সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার কুন্ডু, যুগ্ম সম্পাদক তিলক গোস্বামী, বিশ^জিৎ দে মিঠু, কোষাধ্যক্ষ রতন কুমার নাথ, সাংগঠনিক সম্পাদক উজ্জল ব্যানার্জী, আইন সম্পাদক বিজন কৃষ্ণ মন্ডল, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক সুজিত মজুমদার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পঙ্কজ দত্ত, সহ-সাস্কৃতিক সম্পাদক এ্যাড. আনন্দ কুমার ঘোষ, সহ-গণসংযোগ সম্পাদক রবীন দাস, শ্রী শ্রী রাধা মাধব মন্দিরের সভাপতি শান্ত বৈকুণ্ঠ দাস ব্রহ্মচারী, প্রধান সেবায়েত বৈষ্ণব বলরাম দাস, কেঁশবচন্দ্র সার্বজনীন মন্দিরের সভাপতি সঞ্জীব বনিক, সাধারণ সম্পাদক শুভ্রদেব দে শুভ, দিপু সমাদ্দার, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ সদর থানা সভাপতি বিকাশ কুমার সাহা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পাপ্পু সরকার, সোনাডাঙ্গা থানা সভাপতি বিপ্লব মিত্র, সাধারণ সম্পাদক রামচন্দ্র পোদ্দার, খালিশপুর থানা সভাপতি রজত কান্তি দাস, সাধারণ সম্পাদক দিপক দত্ত, দৌলতপুর থানা সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ অধিকারী, খানজাহান আলী থানা সাধারণ সম্পাদক সুভাষ দত্ত, হরিণটানা থানা সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন রায়, লবনচরা থানা সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শেখর চন্দ্র পাল, আড়ংঘাটা থানা সভাপতি আশিষ কবিরাজ, তীর্থালোক সংঘের সাধারণ সম্পাদক স্বপন চক্রবর্তী, উজ্জল রায়, দুলাল সরকার, শ্যামল মিস্ত্রী, অসিত সরকার প্রমুখ।